কলকাতা: শনিবার সকাল ৭টা থেকে দেশজুড়ে শুরু হল ষষ্ঠ দফার ভোটগ্রহণ (6th Phase Lok Sabha Election 2024)। ভোটগ্রহণ শুরু হল সাতটি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে মোট ৫৮টি কেন্দ্রে। এই দফার নির্বাচনে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৮৮৯ জন। প্রত্যেক দফার মতো এই দফাতেও নজর থাকবে হেভিওয়েট প্রার্থীদের উপর। ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে নজরকাড়া প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বাংলার একঝাঁক তারকা।
আজ ষষ্ঠ দফায় বাংলায় ভোট (Lok Sabha Election 2024) হচ্ছে তমলুক, কাঁথি, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুরে। সারা দেশের মধ্যে বিহারের ৮টি আসন, হরিয়ানার ১০টি, ঝাড়খণ্ডের ৪টি, ওড়িশার ৬টি, উত্তরপ্রদেশের ১৪টি, দিল্লির ৭টি ও কাশ্মীরের ১টি আসনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। এর মধ্যে কাশ্মীরের অনন্তনাগ আসনটিতে আগেই ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু খারাপ আবহাওয়া এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যার জন্য ভোট পিছিয়ে ষষ্ঠ দফায় আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের নজর মহিলা পরিচালিত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে
ষষ্ঠ দফায় হেভিওয়েট কারা?
পশ্চিমবঙ্গ:
- ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে হাইভোল্টেজ দুই মেদিনীপুর জেলার কেন্দ্রগুলি। একদিকে, তমলুক কেন্দ্রে এবার বিজেপির হয়ে লড়ছেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন তরুণ নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, সিপিএমের হয়ে আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়।
- কাঁথি কেন্দ্রে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী বিজেপির প্রার্থী, তৃণমূলের প্রার্থী উত্তম বারিক।
- অন্যতম আকর্ষণীয় কেন্দ্র ঘাটাল। যেখানে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দীপক অভিকারী (দেব) এবং বিজেপির তারকা প্রার্থী হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় (হিরণ)-এর ভোট ময়দানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।
- অন্যদিকে, মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে জুন মালিয়া, বিজেপির হয়ে অগ্নিমিত্রা পাল।
- বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে মুখোমুখি প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল এবং সৌমিত্র খাঁ।
- বাঁকুড়া কেন্দ্রে বিজেপির সুভাষ সরকার ও তৃণমূলের প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী।
- ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ সোরেন ও বিজেপির প্রণত টুডু।
কুরুক্ষেত্র: নবীন জিন্দাল (বিজেপি), সুশীল গুপ্ত (এএপি) এবং অভয় সিং চৌতালা (আইএনএলডি)।
রোহতক: অরবিন্দ শর্মা (বিজেপি), দীপেন্দ্র সিং হুড্ডা (কংগ্রেস)।
নয়াদিল্লি: প্রয়াত সুষমা স্বরাজের মেয়ে বাঁশুরি স্বরাজ (বিজেপি), সোমনাথ ভারতী (এএপি)।
উত্তর-পূর্ব দিল্লি: মনোজ তিওয়ারি (বিজেপি), কানহাইয়া কিমার (কংগ্রেস)।
সুলতানপুর: মেনকা গান্ধী (কংগ্রেস), রাম ভুয়াল নিষাদ (সমাজবাদী পার্টি), উদয় রাজ ভার্মা (বিএসপি)।
কর্ণাল: প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মোনহর লাল খট্টর (বিজেপি), দিব্যাংশু বুধিরাজা (কংগ্রেস)।
পুরী: সম্বিত পাত্র (বিজেপি), জয়নারায়ণ পট্টনায়েক (কংগ্রেস) এবং অরূপ পট্টনায়ক (বিজেডি)।
আরও পড়ুন: ষষ্ঠ দফা ভোটে বাড়তি নজর নন্দীগ্রামে
নিরাপত্তা
বর্তমানে রাজ্যেজুড়ে রয়েছে ১০২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। তার মধ্যে ষষ্ঠ দফা নির্বাচনে ৮টি লোকসভা আসনের নির্বাচনের জন্য ৯১৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে। বাকি কোম্পানিকে রাখা হয়েছে স্ট্রং রুমে নিরাপত্তায় এবং বাকি জেলায়। এর মধ্যে, বাঁকুড়াতে ১৭৮ কোম্পানি, ঝাড়গ্রামে ১৩৩ কোম্পানি, পশ্চিম মেদিনীপুরে ২১৮ কোম্পানি, পূর্ব মেদিনীপুর ২৩৭ কোম্পানি, পূর্ব বর্ধমানে ১৬ কোম্পানি এবং পুরুলিয়াতে ১৩৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আছে। ৮টি লোকসভা কেন্দ্র মিলিয়ে মোট ২৯,৪৬৮ জন রাজ্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে বাঁকুড়ায় ৬৫২১ জন , ঝাড়গ্রাম ২৪৩৬ জন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৬৯০১ জন, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৭১৪ জন, পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৭৪৩২ জন এবং পুরুলিয়াতে ৫৪৬৪ জন। এছাড়াও আছে কুইক রেসপন্স টিম এবং ফ্লাইং স্কোয়াড।
উল্লেখ্য, ভোটের দিনেই চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ (Cyclone Remal)। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কোথাও জল জমলে ভোটারদের ভোট দিতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য পাম্প সহ সব রকমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলাশাসকদের বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। যেখানে যেখানে ভোট তার প্রতিটি জায়গায় বিপর্যয় মোকাবিলার টিম (Disaster Response Team) প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আরও খবর দেখুন