পূর্ব মেদিনীপুর: এগরা থানার আইসি মৌসম চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়া হল। তাঁকে হুগলি জেলায় বদলি করা হয়েছে। হুগলির সাইবার ক্রাইম থানার আইসি স্বপন গোস্বামী এগরা থানার আইসি হলেন বলে নবান্ন সূত্রের খবর। গত মঙ্গলবার এগরার খাদিকুল গ্রামে বাজির কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় নয়জনের। ঘটনার দিনই আটটি দেহ উদ্ধার হয়। ওই কারখানার মালিক ভানু বাগ গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় কটকের এক বেসরকারি হাসপাতালে শুক্রবার মারা যান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজন ভর্তি কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।
ওই ঘটনার পর রাজ্য জুড়ে হইচই শুরু হয়। চলে রাজনৈতিক টানাপড়েন। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, শাসকদলের প্রত্যক্ষ মদতে ওই বেআইনি কারখানায় বাজি তৈরি চলত। মালিক ভানু এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভানু গ্রামের লোকদের ভয় দেখিয়ে তাঁর কারখানায় কাজ করাতে বাধ্য করতেন। শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের পাল্টা অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে বলে গ্রামের মানুষ বাজি তৈরির মতো বিপজ্জনক কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আবার টুইট করে এই মৃত্যুর জন্য প্রধানমন্ত্রীকেই দায়ী করেছেন।
আরও পড়ুন: HC | SSC | ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশে স্থগিতাদেশ ডিভিশন বেঞ্চের
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, এগরা থানার আইসি মৌসমের সঙ্গে ভানুর দহরম মহরম ছিল বলে তিনি বুক ফুলিয়ে বেআইনি কারবার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বুধবার ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, এগরা থানার আগের আইসি মাসে দশ হাজার টাকা নিতেন ভানুর কাছ থেকে। আর মৌসম মাসে ৫০ হাজার টাকা তোলা তুলতেন। শুভেন্দু বলেন, এটা খাদিকুল গ্রামের সকলেই জানেন। তিনি ঘটনার এনআইএ তদন্তের দাবি করেন। সেই দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে।
মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তাঁর জামা ছিঁড়ে দেওয়া হয়, মারধর করা হয়। বুধবার শুভেন্দু ফিরে আসার পর খাদিকুল গ্রামে যান রাজ্যের দুই মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, বিপ্লব রায়চোধুরী, তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন প্রমুখ। তাঁরাও স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়েন। শাসকদলের প্রতিনিধিদলের কাছে আইসি মৌসম চক্রবর্তী স্বীকার করেন, ভানুর ওই বাজি কারখানা বেআইনিভাবেই চলছিল।