কলকাতা: ২০১৪ সালের টেটে ‘নিয়োগ দুর্নীতি’ মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছে রিপোর্ট চাইল হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের ডিভিশন বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ শিক্ষা সংসদের কাছ থেকে নিযুক্ত হওয়া ১৫ হাজার শিক্ষকের তালিকা চেয়ে পাঠায়। ওই তালিকা দেখেই আদালত বিচার করবে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ছিল কি না।
২০১৪ সালের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক পদে প্রায় ১৫ হাজার জনকে নিয়োগ করা হয়। পরবর্তীকালে দেখা যায়, উপযুক্ত যোগ্যতার সংক্রান্ত নথি না থাকলেও প্রায় ১২ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এই বিষয়টি আদালতের নজরে এনে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। আগেই বিচারপতি অরিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিষয়টি বৃহত্তর স্বার্থ বলে মন্তব্য করে মামলাটিকে জনস্বার্থ মামলার তকমা দেন।
২৭ অগস্ট শুনানিতে জানানো হয়, শিক্ষক সঠিক তথ্য না দেওয়ায় তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মামলাকারীর দাবি, মামলা হতেই ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ল বেড়াল। শুধু এটাই নয়, এই রকম অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের বিরুদ্ধে। তাই বিষয়টি একার নয়, এটা জনস্বার্থের, এমনটাই মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি। মামলাটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে।
আরও পড়ুন: টেট প্রশ্ন ভুল মামলায় প্রাথমিক শিক্ষক পর্ষদের সভাপতিকে আর্থিক জরিমানা হাইকোর্টের
প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, প্রয়োজনীয় নথি না থাকা সত্ত্বেও এক ব্যক্তি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকের চাকরি পেয়েছিলেন। পরে ত্রুটি ধরতে পারে সংসদ। ওই শিক্ষককে টেটের প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে বললেও তিনি তা দিতে পারেননি। ফলে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন তিনি।
হাইকোর্ট প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের নথি না দেখে চাকরি দেওয়ার ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে। কিন্তু পরে নথি না পেয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। এর পরেই ওই অভিযুক্ত শিক্ষক ১২ জনের নামের তালিকা আদালতের কাছে দেন। তাঁর অভিযোগ, এদের কারোর প্রয়োজনীয় নথি না থাকা সত্ত্বেও তাঁরা এখন চাকরি করছেন।
বিস্ময়কর এমন অভিযোগ পাওয়ার পর বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি গোটা বিষয়টিকে জনস্বার্থ মামলা হিসেবে দেখার নির্দেশ দিয়ে যাবতীয় নথিপত্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন রেজিস্ট্রার জেনারেলকে। ২২ সেপ্টেম্বর এর মধ্যে ওই তালিকা আদালতে জমা করতে হবে। ২৪ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।
আরও পড়ুন: প্রাথমিকে নিয়োগের দাবিতে টেট পাস চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ, হুমকি আত্মহত্যার