আসানসোল: বিদ্যুৎ বিভাগের (Power Dept) অস্থায়ী কর্মী বিজয় রাউত (৪৫)। স্ত্রী মিঠু রাউত (৩৫) ছেলে কৃষ্ণকুমার রাউত (১০) ও মেয়ে লাডো রাউতকে(আড়াই বছর) নিয়ে সুখেই সংসার চলছিল। ছেলেকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে লেখাপড়া করাতেন বিজয়। কিন্তু, বর্তমানের অগ্নিমূল্য বাজারে একজন অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করে আর পেরে উঠছিলেন না আসানসোলে উত্তর থানার (Asansol North PS) ব্লু ফ্যাক্টরি রোডের চাষাপট্টি এলাকার বাসিন্দা বিজয়। অবশেষে জীবনযুদ্ধে হেরে গিয়েই স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাকে সঙ্গে নিয়েই পাথর খাদানে (Stone Mine) ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন বিজয়। এরকমই ধারণা স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রতিবেশীদের।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ জানুয়ারি রাতে বিজয় সপরিবারে বের হন আসানসোল স্টেশনে কোনও এক আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বলে। কিন্তু তারপর থেকে আর বাড়ি ফেরেননি ওই চারজন। প্রায় পাঁচদিন পর ওই খাদানে চারজনের দেহ ভাসছে বলে দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে সারারাতের চেষ্টায় ওই খাদান থেকে চার জনের দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠায় আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। এলাকার লোকজন থেকে আত্মীয় সকলেরই একই কথা, কোনও ঝামেলা-ঝঞ্ঝাটও হতো না ওদের মধ্যে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee-Arijit Singh: জঙ্গিপুরে মেডিক্যাল কলেজ গড়তে চান অরিজিৎ, পাশে মমতা
বিজয় রাউতের বাড়ির মালকিন জানান, কয়েক দিন আগে রাতে নানির সঙ্গে দেখা করতে যাব বলে পরিবারের সকলকে নিয়ে বের হয় বিজয়। কিন্তু তারপর থেকে আর বাড়ি ফেরেনি। মোবাইলে ফোন করেও পাইনি। আর গতকাল, রবিবার রাতে শুনলাম এই দুর্ঘটনা। বিজয়ের ভাগ্নে পিন্টু রাউত বলেন, ভালোই ছিল মামা। কিন্তু বাড়িওয়ালা বলছেন, গত ১০ তারিখে বেরিয়েছে আর ১৫ জানুয়ারিতে মৃতদেহ পাওয়া গেল। কিছুই বুঝে উঠে পারছি না। মামার কোন শত্রুও ছিল না। এমনকী বাড়িতেও ঝগড়া হতো না। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত ময়নাতদন্ত না হয় বুঝতে পারব না। শান্তিতে মিলেমিশে বসবাস করত মামারা।
তবে কি অভাবের কারণে আত্মহত্যা? নাকি দুর্ঘটনা? না অন্য কিছু। সবদিকটাই খতিয়ে দেখছে উত্তর থানার পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় এলাকায় শোকের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।