কালনা: কেউ মারা গিয়েছেন পাঁচ বছর আগে৷ কেউ পরলোক গমন করেছেন বছর সাতেক আগে৷ সেই সব মৃত ব্যক্তিদের নামে ঘর বরাদ্দ হয়েছে বাংলা আবাস যোজনায়৷ বাড়ি তৈরির টাকাও চলে গিয়েছে অ্যাকাউন্টে৷ অভিযোগ, মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের পরিবর্তে টাকা ঢুকেছে অন্য কারও অ্যাকাউন্টে৷ বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে কালনার দুপসা গ্রামে ইতিমধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে৷ এবার মৃত ব্যক্তিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েত প্রধান এবং ১০০ দিনের কাজের সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে৷
এর আগে প্রতিবন্ধী এবং ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালানো ব্যক্তির প্রাপ্য টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছিল নান্দাই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে৷ এই গ্রামেরই যুবক মহসিন মণ্ডল। জন্ম থেকে ঠিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। বাবা পক্ষাঘাতগ্রস্ত। বাবাকে সঙ্গে করে বৃহস্পতিবার বিডিওর কাছে গিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেন। মহসিনের অভিযোগ, মাসখানেক আগে তৃণমূলের কয়েকজন এসে বলে, আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরি করে দেবে সরকার। এই বলে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাঙ্কের পাসবইয়ের প্রতিলিপি নিয়ে গিয়েছিল। পরে জানতে পারি, ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা তাঁর বদলে, চলে গিয়েছে অন্যের অ্যাকাউন্টে। তাঁরা ভাবতেও পাচ্ছেন না— ভিক্ষাবৃত্তি করে যাঁদের সংসার চলে, তাঁদের টাকাও এইভাবে কী করে আত্মসাৎ করতে পারে। এই নিয়ে অভিযোগ জানাতে বিডিওর কাছে আসার আগে ফোনে হুমকি দেয় অভিযুক্ত।
ঠিক দু’দিন পর এই গ্রামেরই চারটি পরিবার বিডিওর কাছে জমা দিয়ে গেলেন অভিযোগ৷ অভিযোগপত্রে লেখা, কারও বাবা পাঁচ বছর আগে মারা গেছে৷ কারও সাত বছর আগে৷ সেই সমস্ত মৃত ব্যক্তিদের নামে ঘর বেরিয়েছে এবং ঘরের এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে৷ যাঁরা উপভোক্তা তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা না যাওয়ায় পাঁচতারা কালনা ১ নম্বর বিডিওর দ্বারস্থ হন তাঁরা৷ বিডিও জানান, একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ খুব শীঘ্রই সত্যিতা সামনে আসবে৷ তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি জানান, এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই৷ আইন আইনের মতো কাজ করবে৷ এই ঘটনার পর থেকেই উধাও পঞ্চায়েত প্রধান৷