কলকাতা: চাকরির জন্য সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty), দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh), শুভেন্দু অধিকারীও (Suvendu Adhikari) তাঁর কাছে তদ্বির করেছিলেন বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। বৃহস্পতিবার তিনি আদালতের বাইরে বলেন, যে সূজন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষেরা বড় বড় কথা বলছেন, তাঁরা নিজেদের দিকে দেখুন। উত্তরবঙ্গে তাঁরা কী করেছেন। ২০০৯-২০১০ এর সিএজি রিপোর্ট পড়ুন। পার্থ বলেন, আমি তাঁদের বলেছি, আমি নিয়োগকর্তা নই। কাউকে কোনও সাহায্য করতে পারব না। এর পরই তিনি শুভেন্দু প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, শুভেন্দু অধিকারীর ২০১১-১২ সালটা দেখুন। ডিপিএসসিতে কী করেছিল দেখুন না। পার্থর দাবি, তিনি অয়ন শীলকে চিনতেন না। তাঁর কথায়, কোনও শীলকে চিনি না আমি।
এদিন আদালতে হাজিরা দেওয়ার আগে পার্থ বলেন, কিছু বলব না ভেবেছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি, পুরো বিষয়টা আমার বিরুদ্ধেই যাচ্ছে। সেটা আমি একেবারেই চাই না। তাই এবার বলা শুরু করব। পাঁচ বছর ধরে যে লোকটা রাস্তায় বসে কাজ করেছে, করোনার সময় পরিস্থিতি সামলেছে, সে লোকটা চুরি করতে পারে না। যাঁরা সেটা জানেন, তাঁরা আমাকে নিয়ে খারাপ কিছু লিখতেই পারে না। আমি একই জায়গা থেকে পাঁচ বার জিতেছি। কখনও অন্য কোথাও থেকে লড়াই করিনি। আমি যদি সৎ না হতাম, তাহলে মানুষ কি জেতাত আমাকে?
আরও পড়ুন: SCC on Upper Primary Recuritment | | আদালতের সম্মতি পেলেই উচ্চপ্রাথমিকে নিয়োগ
সাংবাদিকরা পার্থকে বলেন, আপনাকে চোর বলেছে আপনারই বেহালার মানুষ। তার উত্তরে পার্থ বলেন, মিথ্যা কথা। আমার এলাকার মানুষজন আমাকে এই ধরনের কথা বলতেই পারে না। ওরা চুরির প্রমাণ নিয়ে এসে বলুক। যারা বলছে, তারা সব সিপিএমের লোক।
পার্থর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ২০০৯-১০ সালে কী হয়েছিল তা হঠাৎ পার্থবাবুর এখন মনে পড়ল? এতদিন মন্ত্রী থাকার সময়ে টনক নড়েনি? জেলে থেকে মাথাটা পুরো খারাপ হয়ে গিয়েছে তাঁর। চাইলে তদন্ত করুক না সিবিআই, ইডি। আমাদের কোনও আপত্তি নেই। পার্থবাবুকে লোক দেখানো সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল। আসলে কালীঘাটের নির্দেশেই এসব বলে এখন তিনি নজর ঘোরাতে চাইছেন।
দিলীপ ঘোষ বলেন, পার্থবাবু যে সময়ের কথা বলেছেন সেই সময়ে আমি সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলাম না। পার্থবাবু আমায় তখন চিনতেনই না। বাজার গরম না করে, আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ দিন। প্রমাণ দিলে আমি জেলে যাব। নইলে ওঁকে আজীবন জেল খাটতে হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগের দিনই আদালতে হাজিরার সময় পার্থ জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার তিনি পাঁচ মিনিট সময় চান কিছু বলার জন্য। গত বছরের ২৩ জুলাই নিয়োগ দূর্নীতি মামলায় নাকতলার বাড়ি থেকে পার্থকে গ্রেফতার করে ইডি। প্রায় বছর ঘুরতে চলল,এখনও জেলেই দিন কাটাচ্ছেন তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ।