কলকাতাঃ সব ঠিক থাকলে, আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) এক ঐতিহাসিক রোড শোয়ের সাক্ষী থাকতে চলেছে উত্তর কলকাতা (North Kolkata)। বিজেপি (BJP) সূত্রের খবর, ওইদিন স্বামীজির জন্মভিটে থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত রোড শো করার কথা মোদির। স্বামীজির জন্মস্থান থেকে বিধান সরণী ধরে হেদুয়া, স্টার থিয়েটার হয়ে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে নেতাজি মুর্তিতে গিয়ে শেষ হবে সেই রোড শো। মোদির জন্য আলাদা রথের ব্যবস্থা থাকবে। হাজির থাকবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রমুখ।
এবার ভোটের সব দফাতেই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী সভা করেছেন বাংলায়। ভোট ঘোষণার আগেও তিনি আরামবাগ, কৃষ্ণনগর এবং বারাসতে সভা করেছেন। সব সভাতেই তিনি চড়া সুরে বিঁধেছেন তৃণমূলকে। তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, তোলাবাজি, মাফিয়াবাজির মতো মারাত্মক অভিযোগ করেছেন। তৃণমূলের দুর্নীতিগ্রস্তদের জেলে পোরারও হুমকি দিয়েছেন। কেন্দ্রে মোদি সরকারের দ্বিতীয় ব্যক্তি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও প্রধানমন্ত্রীর মতোই কার্যত দিল্লি-বাংলা ডেলি প্যাসেঞ্জারি করছেন। মোদির মতোই অমিতও তৃণমূল সরকারকে বাছা বাছা বিশেষণে ভূষিত করছেন। দুজনের ভাষণেই বারবার উঠে এসেছে সন্দেশখালির কথা। শাহ তো সন্দেশখালির অপরাধীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে দেওয়ার মতো হুমকিও দিয়েছেন।
অমিত শাহ বাংলায় প্রচারে এসে কয়েকটি জেলায় রোড শো করলেও প্রধানমন্ত্রী কোনও রোড শো বা পদযাত্রা করেননি। বস্তুত সেই অর্থে মঙ্গলবারই তিনি প্রথম শো করতে চলেছেন উত্তর কলকাতায়। সেটাই তাঁর শেষ প্রচার। বিজেপির অন্দরের খবর, উত্তর কলকাতা কেন্দ্রকে এবার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েই উত্তর কলকাতার টিকিট পেয়েছেন প্রবীণ নেতা তাপস রায়। একমাত্র তাঁর কেন্দ্রেই প্রধানমন্ত্রী রোড শো করবেন বলে স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজিত পোড় খাওয়া এই নেতা। উত্তর কলকাতাকে তিনি হাতের তালুর মতো চেনেন। বুধবার বলেন, খোদ প্রধানমন্ত্রী আমার কেন্দ্রে রোড শো করবেন, এটা ভেবেই আমার ভালো লাগছে।
আরও পড়ুন: অধিকারী পরিবার হাজির অমিত শাহের মঞ্চে
উত্তর কলকাতায় জেতার ব্যাপারে আশাবাদী বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। তৃণমূল প্রার্থী পাঁচবারের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও জয় সম্পর্কে সুনিশ্চিত। তবে এবার তৃণমূলের অন্দরে বেশ চোরাস্রোত রয়েছে। সে ব্যাপারেও সুদীপ সজাগ।
সম্প্রতি রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ এবং ইস্কনের সন্ন্যাসীদের একাংশের সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম তা নিয়ে প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেষ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ বলেন, আমরা অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। আমাদের সন্ন্যাসী, ব্রহ্মচারীরা রাজনীতি করা দূরে থাককু, ভোটদানেও অংশ নেন না। স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শ ও নির্দেশ আমরা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলি।
প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী সন্ন্যাসীদের সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে বিতর্ককে উস্কে দিয়েছেন। তিনি তাঁর সঙ্গে মিশন এবং ভারত সেবাশ্রমের ঘনিষ্ঠতার কথাও তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্র্রীর সন্ন্যাসী মন্তব্যকে সামনে রেখেই রাজ্য বিজেপি প্রধানমন্ত্রীর রোড শোয়ের যাত্রাপথ চূড়ান্ত করেছে। রোড শোয়ের সূচনা হচ্ছে স্বামীজির মুর্তিতে মালা দিয়ে। শেষ হবে শ্যামবাজারে নেতাজির মুর্তিতে মাল্যদান করে।
আরও খবর দেখুন