skip to content
Friday, June 28, 2024

skip to content
HomeদেশEmergency in India | চুপ, সরকার চলছে, কোনও কথা নয়

Emergency in India | চুপ, সরকার চলছে, কোনও কথা নয়

Follow Us :

কলকাতা:  গত শতাব্দীর সাতের দশকের প্রথম ভাগ মানেই বাংলায় এক ত্রাসের রাজত্ব। খুনোখুনি, বোমা, গুলির লড়াই লেগেই রয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নব কংগ্রেসের গুন্ডা বাহিনী। বামপন্থীদের উপর চলছে চরম অত্যাচার। চলছে নকশাল নিধন। বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে যে কত যুবককে খুন করেছে সিদ্ধার্থ রায়ের পুলিশ, তার ইয়ত্তা নেই।

১৯৭১ এর ডিসেম্বর মাস। ক্লাস ফাইভ। স্কুলে হঠাৎ বলা হল, বাইরে খুব গোলমাল। বাড়ি থেকে লোক না এলে কাউকে ছাড়া হবে না। স্কুল শিক্ষিকা মা খবর পেয়ে নিতে এলেন। মায়ের হাত ধরে বাড়ির পথে। দেখলাম, রাস্তায় আগুন জ্বলছে, সাইকেল, রিকশা পুড়ছে। পাড়ার সিপিএম অফিস দাউ দাউ করে জ্বলছে। গোটা রাস্তা ফাঁকা। তারপর স্কুল এক মাস ধরে বন্ধ। স্কুলে সিআরপির ক্যাম্প। এখন শুনি কেন্দ্রীয় বাহিনী, সেন্ট্রাল ফোর্স। তখন কি আর বুঝতাম, এই সিআরপিও সেন্ট্রাল ফোর্স। রোজ সকালে সন্ধ্যা পাড়ায় পাড়ায় বেয়নেট উঁচিয়ে সেন্ট্রাল ফোর্সের জওয়ানদের ভারী বুটের যাতায়াত। পাঁচিলের পাশের জঙ্গলে নকশাল কিংবা সিপিএম করা যুবকরা লুকিয়ে আছে কি না, তা দেখতে তারা হিমশীতল চোখে। বাড়িতে জনা সাতেক বাম রাজনীতি করা ছেলে, দাদার বন্ধু। ভাগ্যিস জওয়ানরা বাড়ির ভিতরে ঢোকেনি। পরের দিন সকালে ওরা পাড়া ছেড়ে অন্যত্র ধা।

গোলমাল, অরাজকতায় পড়াশোনা লাটে। দেশে খাদ্য সংকট চরমে। কংগ্রেসের ভিতরে চূড়ান্ত গোলমাল। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর স্বৈরতান্ত্রিক কাজের বিরুদ্ধে দেশে আওয়াজ উঠেছে। ধিকি ধিকি জ্বলছে সারা দেশ।ইন্দিরা আর দেশ চালাতে পারছেন না। ১৯৭৪ সালের ৮ মে থেকে শুরু হল ঐতিহাসিক রেল ধর্মঘট। টানা কুড়ি দিন চলল সেই ধর্মঘট। বহু রেলকর্মী, ইউনিয়ন নেতা গ্রেফতার হলেন। চাকরি গেল বহু কর্মীর।

১৯৭৫ সালের ১২ জুন। এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহা ইন্দিরা গান্ধীর নির্বাচন বাতিল করে দিলেন বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে। পরের দিন গুজরাত বিধানসভার ভোটের ফল প্রকাশ হল। কংগ্রেস সেখানে গোহারা হেরেছে। ইন্দিরা গান্ধী বেশ বিপর্যস্ত। তবু তিনি ইস্তফা দেবেন না। এদিকে সর্বোদয় আন্দোলনের পুরোধা জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে দেশে দুর্বার গণআন্দোলন।

এল ২৫ জুন। মধ্যরাতে ঘোষিত হল জরুরি অবস্থা। ইন্দিরার ঘনিষ্ঠ সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের পরামর্শেই নাকি জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল। দেশ জুড়ে বহু বিরোধী নেতাকে গ্রেফতার করল কংগ্রেস। সব রাজনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধ। সংবাদপত্রের কন্ঠ রোধ করা হল। রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের কবিতা, গান, প্রবন্ধ ছাপা পর্যন্ত নিষিদ্ধ কাগজে। কোন খবর ছাপা হবে, কোনটা ছাপা হবে না, তা ঠিক করে দিতেন সরকারি আমলা কিংবা কংগ্রেসের মন্ত্রীরা। গ্রেফতার হলেন অনেক সাংবাদিক। বাংলায় বরুণ সেনগুপ্ত, নিশীথ রায়, গৌরকিশোর ঘোষ, জ্যোতির্ময় দত্তের মতো সাংবাদিকদের গ্রেফতার করে এই জেল, সেই জেলে ঘোরানো হল। সে এক কালা সময়। অবশেষে ইন্দিরা বুঝলেন, এভাবে চলবে না। ১৯৭৭  সালের ১৮ জানুয়ারি ইন্দিরা গান্ধী সংক্ষিপ্ত বেতার ভাষণে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করলেন। লোকসভা নির্বাচনের দিনও ঘোষণা হল। তারপর সব ইতিহাস।

আরও পড়ুন: Wagner | ক্ষমতাচ্যুত হবেন পুতিন? 

আজ জরুরি অবস্থার ৪৮তম পূর্তি দিবস। সেই কালা দিনগুলির কথা মনে পড়লে এখনও শিউরে উঠতে হয়। আজকে নরেন্দ্র মোদির জমানাতেও মানুষ সুখে নেই। দেশে বেকারি বেড়েই চলেছে। নতুন শিল্প নেই।  শিক্ষিত যুবক, যুবতীদের কাজ নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আগুন। বাড়ছে খুন, জখম, ধর্ষণের ঘটনা। সেসবের দিকে নজর নেই। শুধু আছে লম্বা চওড়া ভাষণ। তার সঙ্গে ধর্মীয় ভাবাবেগে সুড়সুড়ি দেওয়া। হিন্দুত্বের ধ্বজাধারীদের দাপট বেড়েই চলেছে।

আর সরকারের বিরুদ্ধে, হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে কথা বললেই বিরোধী নেতা, বুদ্ধিজীবী, সমাজকর্মীদের উপর দমন পীড়ন চালানো নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কখনও তাঁদের শহুরে নকশাল, কখনও টুকরে টুকরে গ্যাং বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গারদে পুরে দেওয়া হচ্ছে। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় ইউএপিএ আইনে এখনও একাধিক বুদ্ধিজীবী কারান্তরালে রয়েছেন।  বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই লাগিয়ে দেওয়া তো আছেই।
সব মিলিয়ে এও এক অঘোষিত জরুরি অবস্থা। ইন্দিরা জমানার থেকে একেবারেই ভালো নেই দেশ। নরেন্দ্র মোদির অচ্ছে দিন যে কেমন, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি আমরা।

এ হেন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। কিন্তু তার কোনও স্ফূরণ ঘটছে না। জরুরি অবস্থার ৪৮ তম বর্ষ পূর্তির দুদিন আগে শুক্রবার সেই জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনের পীঠস্থান পাটনায় অনুষ্ঠিত হল বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মেগা বৈঠক। বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতারা বিজেপি বিরোধী জোট গড়ে ঐক্যের ডাক দিলেন। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপিকে হারানোর ডাক দিলেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, আজ দেশে জয়প্রকাশ নারায়ণের মতো নেতা কোথায়, যাঁর কথা সকলে মানবে। তবু বিরোধী দলগুলি তো বিজেপি বিরোধিতায় একটি মঞ্চে এল। তাই বা কম কী। জরুরি অবস্থার ৪৮ তম বর্ষে মোদি কি কিছু শিক্ষা নেবেন? নাকি ইন্দিরা গান্ধীর এবং কংগ্রেসের বাপবাপান্ত করেই কেন্দ্রীয় সরকার কংগ্রেস সরকারের কালা দিনকে স্মরণ করবে?

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Rahul Gandhi | স্পিকার ওম বিড়লাকে কী কথা বললেন রাহুল গান্ধী?
03:31:46
Video thumbnail
Mamata Banerjee | পুলিশ-পুরসভাকে কড়া বার্তা, কী কী বললেন?
01:00:15
Video thumbnail
Mamata Banerjee | রাজ্যপালের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছে মেয়েরা! এ কী বললেন মমতা?
01:26:41
Video thumbnail
Mamata Banerjee | মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জয়েন্ট ইনসপেকশন কাদের নির্দেশ? কী কী নির্দেশ?
34:06
Video thumbnail
Mamata Banerjee | ১টা রাস্তা ৫ বছর চলে না কেন? প্রবল ক্ষুব্ধ মমতা
26:01
Video thumbnail
Mamata Banerjee | রাস্তায় আবর্জনা ফেলা যাবে না আর কী কী বললেন মমতা?
36:06
Video thumbnail
Mamata Banerjee | জবরদখল দেখলে গ্রেফতার কাউকে ছাড় নয়
24:16
Video thumbnail
Mamata Banerjee | মন্ত্রীদের কী কী বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
02:16:51
Video thumbnail
Mamata Banerjee | হকার উচ্ছেদ আমার লক্ষ্য নয়, বললেন মমতা
22:05
Video thumbnail
Mamata Banerjee | নেতাদের কথায় ক্রস চেক হবে না বিরাট মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর
31:51