skip to content
Monday, June 17, 2024

skip to content
Homeচতুর্থ স্তম্ভFourth Pillar | ৩ ডিসেম্বর মোদি সাম্রাজ্যের পতনের শুরুয়াত

Fourth Pillar | ৩ ডিসেম্বর মোদি সাম্রাজ্যের পতনের শুরুয়াত

Follow Us :

পৃথিবীর যে কোনও শাসন ক্ষমতা, বংশ, শাসকের ওঠা ধীরে হলেও হতে পারে, কিন্তু পতন এক ঝটকায় হয়। উঠেছেও উল্কা গতিতে, নেমেছেও ততোধিক তাড়াতাড়ি এমনটাও আছে, উদাহরণ দিতে হলে রাত কাবার হয়ে যাবে। ধরুন মোগল সাম্রাজ্য, তার বিস্তারের চূড়ান্ত সময় কিন্তু আওরঙ্গজেবের সময়েই, কিন্তু পতন? আওরঙ্গজেব মারা যাচ্ছেন, হু হু করে এক শক্তিশালী বংশ প্রায় উবেই গেল। ১৯২১, ২২, ২৩ থেকে হিটলারের উত্থান শুরু, ক্ষমতায় আসতে আসতে ১০ বছরেরও বেশি কেটে গেল, আর পতন? আগের বছরেও, মানে ৪৫-এও বোঝা যায়নি যে ওই বার্লিনেই হিটলারের আধপোড়া দেহ পড়ে থাকবে, মুসোলিনিরও তাই। শাসকের ইতিহাসে পতনের কি কোনও তারিখ থাকে? না থাকে না, আসলে যেদিন সে ক্ষমতায় বসে, সেদিন থেকেই এক উলটা গিনতি চালু হয়ে যায়, যা একটা সময়ে গিয়ে ঝপাং করে সে ক্ষমতাকে কেবল বইয়ের পাতার ইতিহাস করে তোলে। তো এই মোদিজির বেলাতেই বা সেটা অন্যরকম হতে যাবে কেন? কিন্তু এই পতনের ইতিহাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মোড় থাকেই, স্তালিনগ্রাদের যুদ্ধে হার হিটলারের পতনকে অনিবার্য করে তুলেছিল। এসব কথা থাক আপাতত মোদি সাম্রাজ্যের কথায় আসি। আমাদের দেশের শাসন ব্যবস্থায় এ এক নতুন ধরনের শাসন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বা সংসদীয় গণতন্ত্রে শাসক আর বিরোধী দল থাকে, আমাদের দেশের শাসকরা যুক্তরাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলেই যে প্রাদেশিক ক্ষমতাতেও থাকবেন তার গ্যারান্টি তো নেই, ডাবল ইঞ্জিন চাইছেন বটে মোদিজি কিন্তু হচ্ছে তো না। বহু রাজ্য আছে যেখানে বিরোধীরা ক্ষমতায়। ১৯৬২ থেকেই এমনটা একাধিক রাজ্যে হয়েছে, তার আগেও কিছু রাজ্যে ছিল, কিন্তু দেশের শাসকদল সমস্ত বিরোধী দল বা নেতাদেরকে দেশ বিরোধী বলে মনে করেন, দুর্নীতিগ্রস্ত বলে মনে করেন এমনটা ছিল না। এখন ছবিটা বদলে গেছে।

গত কয়েক বছর ধরে নরেন্দ্র মোদির ভাষণ শুনলেই বোঝা যাবে দেশে একটাই দল আছে যারা দেশের কথা ভাবছে, দেশের ভালো চাইছে। বাকি বিরোধী সমস্ত দল, তাদের সরকার, তাদের অতীত নেতারা সব্বাই চোর, সব্বাই দেশের ক্ষতি চেয়েছেন, দেশের উন্নতির অন্তরায় ছিলেন। এইবার এক দল ক্ষমতায় এসেছে যারা নাকি দেশকে উন্নতির পথে নিয়ে যাবে। এই অসম্ভব ঔদ্ধত্যই এই সাম্রাজ্য, এই সরকারকে সিংহাসন থেকে নামাবে। সেই পতনের এক উল্লেখযোগ্য দিন হল এই ৩ ডিসেম্বর। দুটো কারণে এই ৩ ডিসেম্বর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমটা প্রায় সকলেই জানেন, নির্বাচনের ফল বের হবে। এখন যা অবস্থা তাতে প্রত্যেকের চোখ রাজস্থানের দিকে। রাজস্থান কি কোনওভাবে বিজেপির একটু হলেও মুখরক্ষা করবে? নাকি রাজস্থানও হাত থেকে বেরিয়ে যাবে। একটা সময়ে তো মনেই হচ্ছিল যে রাজস্থানে কংগ্রেস পিছিয়ে, তার ওপরে গেহলট পাইলটের ঝগড়া কংগ্রেসের নিশ্চিত পরাজয়ের কারণ হয়ে উঠবে, এটাই সব্বাই মনে করছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে কংগ্রেস কিছুটা, বেশ কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং উল্টোদিকে বিজেপি শিবিরে বসুন্ধরা রাজে এবং হাই কমান্ডের দ্বন্দ্ব আরও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। সেই কোন্দলই রাজস্থানের হাওয়া ঘুরিয়ে দিচ্ছে। বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া অন্তত ৫০টা আসনে নিজের প্রভাবেই ফলাফল বদলে দিতে সক্ষম। কী করবেন তিনি? তার ওপরেই নির্ভর করছে রাজস্থান নির্বাচনের ফলাফল। তেলঙ্গানাতে কংগ্রেস বিআরএস সমান সমান টক্কর দিচ্ছিল এখন কংগ্রেস একটু হলেও এগিয়ে। বিআরএস এখন বিজেপির নামও নিচ্ছে না, তারা কংগ্রেসকেই তাদের মূল শত্রু ধরেই লড়াই করছে। সব মিলিয়ে তেলঙ্গানায় লড়াইটা এখন বিআরএস কংগ্রেসের মধ্যে, বিজেপি কিছু আসনে জিতে বিআরএসকে সমর্থন করে বিআরএস-এর সরকার বাঁচিয়ে রাখবে, এটাই আপাতত লক্ষ্য। মধ্যপ্রদেশ আর ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসছে, এটা বিজেপি নেতারাও বলছেন।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | মোদি–অমিত শাহের নির্বাচন আর গণতন্ত্র

মধ্যপ্রদেশে সমস্যা আরও বড় কারণ এখানে তিনজন মন্ত্রী ৭ জন সাংসদ নির্বাচনে লড়ছেন, তার মধ্যে কয়েকজনের হেরে যাবার সম্ভাবনা আছে। নরেন্দ্র সিং তোমর, এক কালের কৃষিমন্ত্রী যদি তাঁর আসনে হারেন, তাহলে তা বিরাট ধাক্কা হবে। মিজোরামে সম্ভবত কংগ্রেসের সমর্থনেই সরকার হবে। অনেকেই বলবেন, ২০১৮ তে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থান তেলঙ্গানাতে বিরোধীদেরই সরকার ছিল। কিন্তু ২০১৯-এ মোদিজি এই প্রত্যেকটা রাজ্য প্রায় সুইপ করেছেন। আমাদের দেশে রাজ্যে আর কেন্দ্রে আলাদা আলাদা সরকার তৈরি হয়েছে বহুবার, মানুষ কেন্দ্রে একদলকে আর রাজ্যে অন্যদলকে ভোট দিয়েছে। কিন্তু এই কথাগুলোর পেছনের তথ্য অন্য কথা বলছে। যা বলা হচ্ছে তা কিন্তু সেই অর্থে ওই একবারই হয়েছে। ২০১৯-এর ক’ মাস আগে দেশের মানুষের এক অংশ লোকসভায় মোদিজিকে ঝোলা উজাড় করেই ভোট দিয়েছেন। আগেও কর্নাটক বা ওড়িশাতে কেন্দ্র আর রাজ্যে আলাদা আলাদা দলকে ক্ষমতায় আনার ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু ২০১৯-এর মতো করে হয়নি। এবং সেখান থেকেই এক মিথের জন্ম হয়েছে এবারেও মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, তেলঙ্গানা, রাজস্থানে বিজেপি হারলেও লোকসভার ভোটে বিজেপিই জিতবে। কেন জিতবে? মধ্যপ্রদেশে মোদিজি কি শিবরাজ সিং চৌহানের নামে ভোট চেয়েছেন? রাজস্থানে কি বলেছেন বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়াকে ভোট দিন, উনিই মুখ্যমন্ত্রী হবেন রাজ্যের উন্নয়ন বিকাশের দায়িত্ব নেবেন? ছত্তিশগড় বা তেলঙ্গানাতেও রমন সিং নন, বন্দি সঞ্জয় কুমার নন, উনিই মুখ। প্রত্যেক জনসভায় জিজ্ঞাসা করছেন, মোদি সরকার সে খুশ হ্যায় কি নহি? যাঁরা আজ তাঁর বিরুদ্ধে ভোট দিচ্ছেন, তাঁরা কোন কারণে ক’দিন পরেই ওনাকে ভোট দেবেন? ২০১৯-এর এক অন্য প্রেক্ষিত তৈরি হয়েছিল বা তৈরি করা হয়েছিল। পুলওয়ামা না হলে ২০১৯-এই মোদির সরকার অন্তত সংখ্যালঘু মিলিজুলি সরকার হয়ে যেত। হয়নি কারণ পুলওয়ামা, সার্জিকাল স্ট্রাইকের সেই উত্তেজনা, সব মিলিয়ে এক জঙ্গি জাতীয়তাবাদ বহু মানুষের ভোট এনে দিয়েছিল বিজেপির ঝোলাতে। এবারে সেরকম হবার সম্ভাবনা কতটা? আপাতত পাকিস্তানের সঙ্গে তেমন কিছু হবার পরিপ্রেক্ষিত নেই, চীনের সঙ্গে সেরকম কিছু করার চেষ্টা অবান্তর, বাংলাদেশের সঙ্গে করে লাভ নেই, তাহলে? হঠাৎ করে উগ্র দেশপ্রেমের কুলকুল করে ফল্গুধারা বইয়ে দেবার মতো অবস্থা নেই। তাহলে হবেটা কী? হাতে সাকুল্যে ওই রাম মন্দির, যে তাস ফেলা হয়ে গেছে, সামান্য আবেগ তৈরি করা যাবে কিন্তু গোটা নির্বাচনকে ঘুরিয়ে দেওয়া যাবে না।

অন্যদিকে ১০ বছরের রেজাল্ট কার্ডে দারিদ্র বেড়েছে, বেকারত্ব বেড়েছে, মূল্যবৃদ্ধির ছাঁকা লেগেছে দরিদ্র, মধ্যবিত্ত মানুষের হেঁসেলে। এবং স্বাভাবিকভাবেই এক অ্যান্টি এস্টাবলিসমেন্ট হাওয়াও তৈরি হয়েছে। তাহলে কেন ২০১৯ এর পুনরাবৃত্তি হবে? কর্নাটকে তো মোদিজি নিজের নামে আর বজরঙ্গবলির নামে ভোট চেয়েছেন, তাতে কি ছবি পাল্টেছে? এবারেই বা পাল্টাবে কেন? কাজেই এই ৫ রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফল যেদিন ঘোষণা হবে, সেই দিন কিন্তু এক রাজনৈতিক পতনকে অনিবার্য করে তুলবে। আবার আমাদের ধারণা ভুল প্রমাণিত করে পাঁচ রাজ্যের তিন কি চারটেতে বিজেপির সরকার হলে ২০২৪ এ বিজেপি ৪০০ পার করে যাবে, এটাও ঠিক। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, তিন তারিখের পরে আরও কিছু আছে। সুপ্রিম কোর্টে ঝুলছে তিনটে বড় মামলা যা ওই তিন তারিখের পরেই সামনে আসবে, রায়দানও হবে, সেগুলোও বিজেপির বিরুদ্ধে যেতেই পারে। আর তা হলে ২০২৪ বিজেপির কাছে আরও অসম্ভব এক নির্বাচন হয়ে দাঁড়াবে। প্রথমটা হল আদানির সম্পত্তি, বেনামে শেয়ার বাজারে নিজেদের শেয়ারের দাম বাড়িয়ে নেবার যে অভিযোগ এসেছিল সেই বিষয়ক মামলা ঝুলছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। সেই রায় যদি কোথাও এক পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেয়, তাহলে কেলেঙ্কারিটা আরও সামনে আসবে। এখানেই শেষ নয়, মহারাষ্ট্রের দলবদল আর দল ভাঙার মামলাটাও আপাতত সুপ্রিম কোর্টে, সেটারও রায় আসার কথা। এমনিতেই সমীক্ষা বলছে দল যারা ভেঙেছেন, মানুষ তাদের পক্ষে নেই, তার ওপরে সুপ্রিম কোর্টের রায় বিরুদ্ধে গেলে বিপদ আরও বাড়বে। তিন নম্বর মামলা যা তিন তারিখের পরেই উঠবে এবং সুপ্রিম কোর্টকে মতামত দিতেই হবে, তা হল ইলেকটোরাল বন্ডের মামলা। দেশের সমস্ত শিল্পপতি, কর্পোরেট হাউস আর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লক্ষ কোটি টাকা তোলার এই সরল সহজ ব্যবস্থার আসল রহস্য কিন্তু মানুষ বুঝে ফেলেছে। সর্বোচ্চ আদালতই বলেছে, টাকা কারা দেয় তা জানার অধিকার কি মানুষের নেই? এবার সেটাই যদি সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের রায় হয়? সেটা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় বিরুদ্ধে গেলে বিজেপির ফান্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, এক বিরাট দূর্নীতি সামনে আসবে, সব মিলিয়ে এই তিনটে রায় বিজেপি, মোদি শাহের সরকারের সামনে এক বিরাট অগ্নিপরীক্ষা। কাজেই ৩ ডিসেম্বর ৫ রাজ্যের নির্বাচনে মানুষের রায়, আর সুপ্রিম কোর্টে ঝুলতে থাকা এই তিন মামলার রায় আমাদের দেশের আগামী রাজনৈতিক ভবিষ্যতের দিক ঠিক করে দেবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
water crisis | জলের জন্য হাহাকার,পানীয় জলের দাবি, দেখুন কীভাবে বিক্ষোভ চলছে
03:22:08
Video thumbnail
Ration Scam | আবার রেশন দুর্নীতি! এবার আটা, দেখুন ভিডিও
03:47:47
Video thumbnail
Prosenjit Chatterjee | প্রসেনজিতকে অপদার্থ বললেন অনামিকা সাহা! তারপর কী হলো দেখুন
01:35:26
Video thumbnail
Narendra Modi | Nitin Gadkari | মোদির বিকল্প কে ?নীতিন গড়করিকে চায় সঙ্ঘ ?
00:00
Video thumbnail
TMC | CPIM | রামধাক্কা ! ৪০ বছর দল করেছেন, এবার সিপিএম থেকে তৃণমূলে
00:00
Video thumbnail
WB BJP By Election | বাংলার চার উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী কারা? এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট
08:44:16
Video thumbnail
NEET UG 2024 | ৩০ লক্ষ দিলেই হাতে NEET-এর প্রশ্ন, বিরাট পর্দাফাঁস তদন্তে
08:03:06
Video thumbnail
EVM | Rahul Gandhi | EVM হ্যাকিং? FIR হতে চলেছে? দেখুন চাঞ্চল্যকর ভিডিও
05:37:01
Video thumbnail
Lok Sabha Election 2024 | লোকসভা ভোটে EVM জালিয়াতি? কেন ট্য়ুইট রাহুলের?
08:17:35
Video thumbnail
Yusuf Pathan | ইউসুফ পাঠানকে নোটিস গুজরাতের, পুরসভার বিজেপির হারের বদলা?
06:37:21