কলকাতা: মাসের শেষ, তার উপর সবেমাত্র মা দুগ্গার বাপের বাড়ি ভ্রমণের ধাক্কা বুকে বিঁধে রয়েছে। ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছেন মা লক্ষ্মী (Godess Laxmi)। ফলে ঘরে লক্ষ্মী আনতে হাঁড়ির হাল হয়েছে মধ্যবিত্তের (Middle Class)। বাজারে (Retail Market) গিয়ে ঘাম ছুটে যাচ্ছে গেরস্তের। গৃহিণীর দেওয়া ফর্দের সঙ্গে বাজারে দরদস্তুর করেও পকেটের ওজন ধরে রাখতে পারছেন না কেউ।
প্রতিমা হোক বা পট, ধানের ছড়া হোক বা নারকেল নাড়ু। মায় পুরোহিতের দাম থুড়ি দক্ষিণাতেও লেগেছে জ্বলুনির আঁচ। এমনিতেই পুজো করা বামুনের সংখ্যা প্রত্যেক পাড়াতেই কমে এসেছে। তার উপর বিলুপ্তপ্রায় পূজারী ব্রাহ্মণরা লোকবিশেষে ৫০০ থেকে দেড় হাজার টাকা দক্ষিণা হেঁকে রেখেছেন। তৎসহ চালকলা-ফলমূলাদি। সব মিলিয়ে ধনদেবীর আরাধনা (Kojagari Laxmi Puja) করতে গিয়ে নির্ধন হওয়ার জোগাড় বাঙালির।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুজোয় বৃষ্টি! অক্টোবরের শেষে শীতের আগমনীর সুর?
বরানগর থেকে বাগুইআটি। সিঁথি থেকে সোদপুর। কিংবা গড়িয়া, গড়িয়াহাট, বালিগঞ্জ, যাদবপুর, ভবানীপুর, মানিকতলা, শ্যামবাজার যেখানেই হোক দাম (Price Hike) বেলাগাম। সে কারণে দুর্গাপুজোর ঠাকুর দেখার মতো ভিড় মূল বাজারে দেখা যাচ্ছে না। রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে বসা ট্রেন লাইনের বিক্রেতাদের কাছেই ভিড় জমছে থিকথিকে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেল, ক্যাম্বিস বলে মতো নারকেলের দাম ৪০ টাকা। তার থেকে এক সুতো বেশি হলে ৫০-৬০ টাকা। আখের ছোট এক টুকরোর দাম ৩০-৫০ টাকা। ডাব ৫০ টাকা। ন্যাসপাতি বরাবরই কুলীন প্রজাতির ফল। তাই আড়াইশো টাকার উপরে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আঙুরও তাই। আনারস দেড়শো। লক্ষ্মীপুজোয় পদ্ম লাগেই। তাই মওকা বুঝে পদ্মও নিজেকে শিকেয় তুলে রেখেছে। ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিকোচ্ছে পদ্ম।
লাল গাঁদার মালা ৪০ টাকা পিস। হলুদ হলে ৫৫-৬০ টাকা। গাঁদা-রজনীগন্ধার ছোট মালা, যেগুলির অন্য সময় ৫ টাকা দাম, তা উঠেছে ১৫ টাকায়। কুচো ফুল ন্যূনতম ২০ টাকার নিতেই হবে। অতিরিক্ত তুলসী পাতা, আম্রপল্লবের অতিরিক্ত দাম। কলার খোলা ছোট টুকরো ১০ টাকা, গোটা এক পিস নিলে ৫০ টাকা।
লক্ষ্মীপুজোর ভোগ মানেই খিচুড়ি। খিচুড়ি মানে প্রায় চার-পাঁচ পদের একটা টিম। বেগুনি বা বেগুন ভাজা, আলুর দম বা ফুলকপির তরকারি, চাটনি। ফুলকপি মাঝারি মাপের ৫০, বড় হলে ৭০ টাকা। বেগুন ৮০ টাকা। টম্যাটো ৫০, জলপাই ১০০ টাকা। ফলে আত্মীয়স্বজন পুজোর আয়োজন দেখে ধন্যি ধন্যি করে চলে গেলেও কোজাগরী রাতে গিন্নি ঘুমিয়ে পড়বেন হাসিমুখে। কিন্তু, মাস চালানোর দুশ্চিন্তায় গেরস্তকে জেগে থাকতে হবে লক্ষ্মীর বাহনের মতোই।
দেখুন অন্য় খবর