‘অ্যাডভেঞ্চারের’ (Adventure) জায়গা হিসেবে পর্বতারোহীদের সবসময় নজর কেড়েছে মাউন্ট এভারেস্ট পর্বত (Mount Everest) । রোমাঞ্চ ও রহস্যে ভরা এই পর্বতমালা চড়ার স্বপ্ন দেখেন প্রায় সব পর্বতপ্রেমীই। তবে সেই ‘অ্যাডভেঞ্চার’ (Adventure) কতটা ক্ষতি করছে মাউন্ট এভারেস্টের (Mount Everest) পরিবেশের? মানুষের দ্বারা সংক্রমিত জীবাণু কি সত্যিই বেঁচে থাকছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে?
সম্প্রতি মাউন্ট এভারেস্ট নিয়ে কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের (University Of Colorado) তরফে একটি গবেষণা করা হয়। সেই গবেষণার রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি এভারেস্টের উপর দাঁড়িয়ে হাঁচলে বা কাশলে তাঁর মাধ্যমে জীবাণু ছড়ায় পরিবেশে। গবেষকদের মতে, হিমশৈল্যের বুকে সেই জীবাণু বেঁচে থাকতে পারে হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে। এমনকি প্রবল ঠান্ডা সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে ওই জীবাণুর। শতাব্দীর পর শতাব্দী তা পড়ে থাকতে পারে মাটিতে বরফের উপর।
শুধু হাঁচি নয় কাশি নয়, এই জীবাণু ছড়ানোর সম্ভবনা থাকছে জামা কাপড় থেকেও। মানুষ যেই জামা পড়ে শৃঙ্গে ওঠার তোড়জোড় করেন সেখানেও বাসা বাধে বিভিন্ন জীবাণু।
সমীক্ষা বলছে, প্রতি বছর ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে পর্যন্ত বেড়াতে যান। এর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকশো মানুষ সামিটে পৌঁছনোর রেকর্ড গড়েন। কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের (University Of Colorado) গবেষকদের মতে, মানুষের দ্বারা সংক্রমিত জীবাণু আবার মানব শরীর পেলেই চাঙ্গা হয়ে ওঠে। তার আগে পর্যন্ত এইসব জীবাণু থাকে সুপ্ত অবস্থায়। প্রবল শীতের মধ্যে যদি উষ্ণ ও ভেজা পরিবেশ পায় তবে তারা আবার তাজা হয়ে ওঠে। ফলে মানুষের নাক, মুখ, কানে জীবাণুরা খুব সহজেই জায়গা করে নেয়।
পর্বতারোহীরা ট্রেকিংয়ে গিয়ে প্রতি বছর বহু জিনিস ফেলে আসেন নেপালের এই শৃঙ্গে। অনেক সময় তার থেকেও দূষণ ছড়ায় এভারেস্টের বুকে। গবেষকরা বলছেন, অত উঁচুতেও প্রচুর পরিমান পাল্টিকের প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখা যায়। দূষণ ছড়ায় সেই প্লাস্টিক থেকেও। নেপাল সরকার প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে চাইলেও তা সম্ভব হচ্ছে না মানুষের গাফিলতির জন্যই। ফলে দিনের পর দিন দূষণ বাড়চ্ছে মাউন্ট এভারেস্টে। ভ্রমণপ্রেমীরা দূষণের পাশাপাশি জীবাণুও ছড়াচ্ছেন বলে কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের (University Of Colorado) গবেষকদের মত।