কলকাতা: ‘ভার্চুয়াল শুনানির নামে সার্কাস চলছে’৷ নেটওয়ার্ক সমস্যা নিয়ে হাইকোর্ট প্রশাসনের উপর ক্ষোভ উগরে দিলেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য৷ সাফ জানিয়ে দেন, সমস্যার সমাধান না হলে এজলাসেই আসবেন না৷ অবিলম্বে এই পরিস্থিতির বদল দরকার৷ না হলে অবমাননার রুল জারির হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি৷
আরও পড়ুন: ১০ মিনিটের ব্যবধানে কোভিশিল্ডের দুটি ডোজ পেলেন মহিলা
অতিমারীর সময় যতটা সম্ভব দুরত্ববিধি বজায় রেখে কাজকর্ম করতে হচ্ছে৷ তাই ভার্চুয়াল মাধ্যমই ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে৷ স্কুল-কলেজের পড়াশোনা থেকে অফিসের কাজকর্ম- সবই হচ্ছে ভার্চুয়ালি৷ কিন্তু গোল বাধছে নেটওয়ার্ক সমস্যায়৷ যে সমস্যা থেকে রেহাই পায়নি বিচারব্যবস্থা৷ শুনানি চলাকালীন বার বার নেট পরিষেবায় প্রযুক্তিগত ক্রুটি হচ্ছে৷ যে কারণে বিচারপতিদের সওয়াল শুনতে সমস্যা হচ্ছে৷
অনেকদিন ধরে সহ্য করার পর আজ শুক্রবার বিরক্তি প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য৷ আদালতের সেন্ট্রাল প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটরকে রীতিমতো তুলোধোনা করেন তিনি৷ ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি সমস্যায় তিতিবিরক্ত হয়ে বিচারপতি বলেন, ‘কলকাতা হাইকোর্টের মতো ঐতিহাসিক আদালতে এই ধরনের ঘটনা লজ্জার বিষয়৷ হাইকোর্ট প্রশাসনকে সুযোগ দিচ্ছি এই ব্যবস্থা ঠিক করার জন্য৷ আমি ব্যক্তিগত ভাবে অনুভব করি এটা অপরাধের সমান৷ ভার্চুয়াল শুনানির নামে সার্কাস চলছে। আমি এই সার্কাসের অংশ হতে রাজি নই৷ যতক্ষণ না সুরাহা হচ্ছে, আমি এজলাসে বসব না৷’
আরও পড়ুন: ভুয়ো ম্যাজিস্ট্রেটের পরিচয় দিয়ে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণা
করোনার ধাক্কায় গতবছর থেকেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলাগুলোর ভার্চুয়াল শুনানি চলছে। পুরো প্রক্রিয়াই চলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় কয়েকজন বিচারপতি আদালতে আসা শুরু করেছেন৷ কিন্তু আইনজীবীরা অনলাইনেই শুনানি চালাচ্ছেন। এদিকে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণের সময়মতো মামলার শুনানি শুরু করা যাচ্ছে না৷ এ নিয়ে একাধিকবার বিচারপতিরা সতর্ক করলেও সমাধান মেলেনি। এ কারণেই শুক্রবার ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য৷ বলেন, ‘ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে সমস্যার কারণে বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ৷ অবিলম্বে এই পরিস্থিতির বদল না হলে অবমাননার রুল জারির হুঁশিয়ারিও দেন বিচারপতি৷ এই বিষয়টি অন্তর্বতীকালীন নির্দেশিকা হিসাবে বজায় থাকবে৷ ৩১ জুলাই পর্যন্ত এই নির্দেশিকা বজায় থাকবে৷