পারবেন কি তিনি? আসমুদ্র হিমাচল দেশবাসীর একটা বড় অংশের দীর্ঘ আশঙ্কার আবহে ছেদ টেনে দেশে গেরুয়া শাসনের অবসান ঘটাতে? তিনি রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) আসলে কতটা শক্তি অর্জন করলেন ভারত জোড় যাত্রায় মানুষের সঙ্গে জনসংযোগের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশের নানা রাজ্যে প্রায় ভেঙে পড়া সংগঠনের হাল ফেরাতে? অথবা কংগ্রেসের (Congress) খানিকটা সাংগঠনিক শক্তি আছে এমন সব রাজ্যে অন্তর্দলীয় বিরোধকে আটকে প্রদেশ নেতৃত্বকে একজোট করতে। এসব নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে মহারাষ্ট্রের বিদর্ভে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির পদযাত্রায় তাঁর সঙ্গী হয়েছিল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। তাঁদেরই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে দেশের গত বেশ কয়েক দশকের রাজনৈতিক ইতিহাসে দীর্ঘতম পদযাত্রার নানা মুহূর্তের কোলাজ।
দল হিসাবে কংগ্রেস নেতৃত্ব বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছেন, দেশের প্রতিটি অংশে এখনও বজায় থাকা অন্তর্নিহিত ঐক্যবদ্ধ ভাবধারার অনুভূতিকে অটুট রাখার লক্ষ্যে এই পদযাত্রার আয়োজন। ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করা নয়। কিন্তু পদযাত্রার যিনি কেন্দ্রবিন্দু সেই সোনিয়া-তনয় নিজে যেভাবে যাত্রার ফাঁকে প্রতিটি সভায় বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলে বেকারত্ব (Unemployment), আর্থিক দুরবস্থা, কৃষক আত্মহত্যার মত সমস্যা নিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছেন তাতে ভোটব্যাঙ্কের তত্ত্ব মোটেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কংগ্রেসের এই কর্মসূচিতে পা মিলিয়েছেন সিনে দুনিয়ার তারকা থেকে সমাজকর্মী, বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতার পাশাপাশি সমাজের নানা অংশের পরিচিত মুখ এবং আমজনতা। মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্র তুষার গান্ধীও সামিল হয়েছিলেন ওই পদযাত্রায়।
আর দলের তরফে কানহাইয়া কুমার থেকে জয়রাম রমেশ (Jairam Ramesh) সকলেই আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়েছেন, আসলে তথাকথিত নামদার-এর তকমাটা মুছে এবার আমজনতার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে পথ চলছেন ওয়েনাড়-এর সাংসদ। যদিও তাতে আদপে লাভ কতটুকু হবে সেটি বুঝতেই জনমত সমীক্ষা চালিয়েছিল সি ভোটার (C-Voter) সংস্থা। তাতে দেখা যাচ্ছে যে সব জায়গা পেরিয়ে এসেছে ভারত জোড় যাত্রা (Bharat Joro Yatra) সেখানে তিন থেকে নয় শতাংশ জনপ্রিয়তা বেড়েছে রাহুল গান্ধীর। অবশ্য সি ভোটারের ডিরেক্টর যশবন্ত দেশমুখ-এর বিশ্লেষণ, ভারত জোড় যাত্রা এখনও যে সব রাজ্য অতিক্রম করেছে তার অধিকাংশই দক্ষিণের এবং একটি বাদে কোনওটিই বিজেপি-শাসিত নয়। তাই এই পদযাত্রা কতটা সাড়া ফেলেছে তা বোঝা যাবে উত্তর ভারতে (North India) এলে। আপাতত সে অপেক্ষায় আছে রাজনৈতিক মহল।