কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: মহাভারতের কর্ণের মতো প্রকৃত নায়ক তথা সত্যিকারের যোদ্ধার প্রয়োজন আছে। আমাদের দেশের সংবিধান ও সাংবিধানিক আদালত সেই নবযুগের কর্ণদের রক্ষা করবে। এযুগের কর্ণদেরও অন্যান্য নাগরিকের মতোই সম্মান ও গর্বের সঙ্গে বাঁচার অধিকার রয়েছে। জন্ম শংসাপত্রে মায়ের নামই যথেষ্ট, এ সংক্রান্ত এক রায়ের প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেছে কেরালা হাইকোর্ট।
আদালত স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, যে কোনও কেউ তার জন্ম শংসাপত্রে শুধুমাত্র মায়ের নাম রাখতে পারে। শুধু জন্ম শংসাপত্র নয়, যে কোনও নথিতে বাবার বদলে কেবলমাত্র মায়ের নাম রাখতে চাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার। কেরালার পাঠানমথিট্টা পুরসভায় এক ব্যক্তির জন্ম শংসাপত্রে বাবার নাম হিসেবে এক অন্য ব্যক্তির নাম ছিল। তার কারণ, ওই মহিলা নাবালিকা অবস্থায় এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির দ্বারা গর্ভধারণ করেন। যার ফল হিসেবে এই ব্যক্তির ছোটবেলায় অন্য একজনের নথি দেখিয়ে শংসাপত্র তৈরি করা হয়েছিল। এখন এই ব্যক্তি চান পুরসভার রেজিস্ট্রার থেকে বাবার নামের জায়গায় তাঁর মায়ের নামই লেখা হোক। তা নিয়েই আদালতে আবেদন জানান এই ব্যক্তি ও তাঁর মা।
আরও পড়ুন: President Oath Ceremony: ভারতের পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন দ্রৌপদী মুর্মু
এর আগের সুপ্রিম কোর্টের বেশ কয়েকটি নির্দেশের কথা উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেছে, অবিবাহিত মায়ের সন্তানও এদেশেরই নাগরিক। কেউ তার মৌলিক অধিকার হরণ করতে পারে না। দেশের সংবিধান তাকে সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার দেয়। অবিবাহিত মায়ের সন্তানই হোক কিংবা ধর্ষণে নির্যাতিতার সন্তান, সকলেরই নিজের মতো করে বাঁচার, স্বাধীনভাবে বাঁচার, সম্মানের সঙ্গে বাঁচার মৌলিক অধিকার রয়েছে।
একইসঙ্গে আদালত এই নির্দেশও দিয়েছে, জন্ম শংসাপত্রের ফর্মে পরিবর্তন আনতে। যেখানে বাবার নাম-পরিচয় সংক্রান্ত কোনও অংশ জানতে চাওয়া হবে না। আদালত এই নির্দেশ দিতে গিয়ে বলেছে, আমরা চাই না, এদেশে আর কেউ কর্ণের মতো অপমান-লাঞ্ছনা নিয়ে বেঁচে থাকুক। কর্ণ যেমন তাঁর বাবা-মায়ের পরিচয় জানতে গোটা জীবন সমাজের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে গিয়েছে, আর কারও জীবনে এমনটা ঘটুক তা আমরা চাই না।