লখনউ: আতিক আহমেদের (Atiq Ahmed) পর তার স্ত্রী শাইস্তা পারভিন (Shaista Parveen)? যাকে ধরিয়ে দিতে পারার পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা। পারভিনই এখন আতিকের সাম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞী। আতিকের গ্রেফতারির পর থেকে ৫১ বছর বয়সি পারভিনই তার মাফিয়ারাজের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের ধারণা ছিল আতিকের শেষকৃত্যে এসে ধরা দেবে পারভিন। কিন্তু, সে আসেনি।
শাইস্তা পারভিন কে? কীভাবে সে আতিক গ্যাংয়ের রানি হয়ে উঠল?
১। শাইস্তা এক পুলিশ পরিবারের মেয়ে। তার বাবা ছিলেন পুলিশ কর্মী। ১৯৯৬ সালে আতিকের সঙ্গে তার বিয়ের আগে পর্যন্ত শাইস্তার জীবনচক্রটাই ছিল অন্যরকম। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনাও করেছে। সেই সময় তার নামে কোনও বেআইনি কাজের অভিযোগ ছিল না।
আরও পড়ুন: Atiq Ahmed | NHRC | আতিক-আশরাফ হত্যাকাণ্ডে যোগীর পুলিশকে নোটিস জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের
২। কিন্তু, আতিকের সঙ্গে বিয়ের পর থেকে তার জীবনের গতিপথ বদলাতে শুরু করে। ২০২১ সালে সে যোগ দেয় আসাউদ্দিন ওয়েইসির দল মিম-এ। ‘২৩ সালে যোগ দেয় বহুজন সমাজ পার্টিতে। সে সময় তার কথায়, আমার স্বামীর প্রাক্তন সমাজবাদী পার্টির সর্বময় কর্তা প্রয়াত মুলায়ম সিং যাদবের সঙ্গে দোস্তির কারণে কোনও ভদ্রতা-সভ্যতার জ্ঞান হয়নি। আতিক বরাবরই বসপাকে পছন্দ করে। বসপার শীর্ষ নেতৃত্বকে অনেক সাহায্যও করেছে বিভিন্ন সময়। এতকিছুর পরেও মায়াবতী শাইস্তাকে পুরভোটে টিকিট দেননি।
৩। উমেশ পাল খুনের গোটা ছক এবং সক্রিয় অ্যাকশনে ছিল শাইস্তা।
৪। উমেশ পাল খুনে প্রধান অভিযুক্তও হল পারভিন।
৫। আতিক যখন জেলে যায়, তখন তার সিন্ডিকেটের পুরো দায়িত্ব কাঁধে নেয় সে।
৬। আতিকের অবর্তমানে সে-ই হয়ে ওঠে ‘গডমাদার’।
৭। আতিকের এক আত্মীয় মহম্মদ জিশান জানিয়েছে, একবার আতিক তার ছেলেকে ২৫ জন শুটার সহ জিশানের কাছে পাঠিয়েছিল। জিশানের জমি শাইস্তার নামে লিখে দেওয়া এবং ৫ কোটি টাকা চেয়েছিল আতিক।
৮। ২০০৯ সাল পর্যন্ত শাইস্তার নামে প্রয়াগরাজে চারটি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে তিনটি হল প্রতারণা এবং উমেশ পাল খুন।
শাইস্তার ছেলে, দেওর ও স্বামীর মৃত্যুর আগে সে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে একটি চিঠি লেখে। ২৭ ফেব্রুয়ারি লেখা ওই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে সে জানিয়েছিল, উমেশ পাল খুনে তাদের পরিবার জড়িত নয়। মিথ্যা মামলায় তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। পরভিনের অভিযোগ ছিল, মন্ত্রী নন্দগোপাল গুপ্তা উমেশ পাল খুনের মুল পান্ডা। মুখ্যমন্ত্রীকে পরভিন লেখে আপনি যদি পদক্ষেপ না করেন, তাহলে আমার স্বামী, দেওর ও ছেলে খুন হয়ে যেতে পারে।
এই অবস্থায় শাইস্তাকে খুঁজতে পুলিশ হন্যের মতো ঘুরে বেড়ালেও অনেকেরই ধারণা পরভিনের নাগাল পাওয়া এখন মুশকিল। কারণ স্বামী আতিকের মৃত্যুর পর শাইস্তা এখন ইদ্দাহ পালন করছে। যে সময় বাইরের কারও সঙ্গে সে দেখা করবে না।