কলকাতা: দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2023) পরেই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো (Kojagari Lakshmi Puja2023)। আশ্বিন মাসের শেষের পূর্ণিমার (Purnima) দিনে যে লক্ষ্মীপুজো পালিত হয়, তাকে বলা হয় কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। কোজাগরী শব্দটির উৎপত্তি ‘কো জাগতী’ থেকে। এর আক্ষরিক অর্থ ‘কে জেগে আছো?’ কথিত আছে, কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিনে দেবী লক্ষ্মী স্বর্গ থেকে মর্ত্যে অবতরণ করেন এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে সকলকে আশীর্বাদ দেন। কিন্তু যার বাড়ির দরজা বন্ধ থাকে, তাঁর বাড়িতে লক্ষ্মী প্রবেশ করেন না ও সেখান থেকে ফিরে চলে যান। তাই লক্ষ্মীপুজোর রাতে জেগে থাকার রীতি প্রচলিত আছে। যে ভক্ত রাত জেগে আরাধনা করেন, তাঁকে দু’হাত ভরে আশীর্বাদ করে যান তিনি ৷ তাঁর ঘর ভরে ওঠে ধনসম্পত্তি ও সমৃদ্ধিতে।
আবার প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, লক্ষ্মীপুজোর দিন রাতে যাঁরা পাশা খেলেন, তাঁদের দেবী ধন-সম্পদ প্রদান করেন। একই ভাবে, অনেকে মনে করেন যে এই দিনে যদি কেউ অন্যের বাগান থেকে কিছু চুরি করেন, তাহলে দেবী তাঁকে আশীর্বাদ করবেন। এই সব মিলিয়েই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো রীতিমতো দারুণ সব কাহিনিতে ভরা। বর্তমান সময়ে পাশা খেলা বা বাগান থেকে কিছু চুরি করার মতো বিষয়গুলি আর মানা হয় না। কিন্তু রাত জেগে পুজো করার চল এখনও আছে বহু বাঙালি বাড়িতেই। এখনও লক্ষ্মীপুজোর দিন ঘরে ঘরে সন্ধ্যা বেলায় প্রদীপ জ্বলে ওঠে। এবছর লক্ষ্মীপুজো ২৮ অক্টোবর। কোজাগরী লক্ষ্মীদেবীর আরাধনার তোড়জোড় চলছে।
আরও পড়ুন: কোজাগরী পূর্ণিমায় বছরের শেষ চন্দ্র গ্রহণ, জানুন কখন করবেন লক্ষ্মী পুজো?
লক্ষ্মীর মূর্তি পুজো ছাড়াও আরও নানান ভাবে লক্ষ্মীকে কল্পনা করে এদিন তাঁকে পুজো করা হয়। যেমন- আড়ি লক্ষ্মী। এ ক্ষেত্রে ধান ভর্তি ঝুড়ির ওপর কাঠের লম্বা দুটি সিঁদূর কৌটো লালচেলিতে মুড়ে লক্ষ্মীর রূপ দেওয়া হয়। আবার কলার পেটোর তৈরি নৌকা লক্ষ্মী আরাধনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এগুলিকে সপ্ততরী বলা হয়। বাণিজ্যিক নৌকার প্রতীক এই সপ্ততরী। অনেকেই পুজোর সময় এই সপ্ততরীতে টাকা, শস্য, হরিতকি, কড়ি, হলুদ রাখেন। আবার বিভিন্ন পটচিত্রের সাহায্যেও লক্ষ্মীপুজো হয়। যেমন- ঢাকাই সরা, ফরিদপুরি সরা, সুরেশ্বরী সরা ও শান্তিপুরি সরা। অনেক জায়গায় আবার কলার বের ও লক্ষ্মীর মুখ সমন্বিত পোড়া মাটির ঘটকেও লক্ষ্মী রূপে কল্পনা করে পুজো করা হয়। এই ঘটে চাল বা জল ভরে সেটিকে লক্ষ্মী মনে করে পুজো করা হয়।
দেখুন আরও অন্য খবর: