নয়াদিল্লি: ‘পাপ্পু’ বলে একসময় যাঁকে হেলাফেলা করত বিজেপি (BJP), সেই রাহুল গান্ধীই (Rahul Gandhi) কি এখন বিজেপির মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে? রাজনৈতিক নেতা হিসেবে যে রাহুলের গুরুত্ব বেড়েছে তা সাম্প্রতিককালে গেরুয়া শিবিরের আচরণেই স্পষ্ট। বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের মুখে এখন শুধুই তাঁর কথা, তাঁর বিরোধিতা, তাঁকেই আক্রমণ। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে (Cambridge University) রাহুলের মন্তব্যের পর তাঁকে ছেড়ে কথা বলতে চায় না বিজেপি। লোকসভা থেকে তাঁকে বহিষ্কার করার দাবি উঠেছিল আগেই। এবার সে দলে নাম লেখালেন সাংসদ নিশিকান্ত দুবে (Nishikant Dubey)।
রাহুলের মন্তব্য বিচার করে দেখতে বিশেষ কমিটি গড়ার ডাক দিয়েছেন দুবে। তাঁর দল অবশ্য আগেই ওই মন্তব্যগুলিকে দেশের সংসদ, গণতন্ত্র এবং প্রাতিষ্ঠানিকতার অপমান বলে দাগিয়ে দিয়েছে। দুবে বলছেন, এই কমিটির উচিত রাহুল গান্ধীর লোকসভার (Loksabha) সদস্যপদ খারিজ করা।
এ প্রসঙ্গে ২০০৫ সালের একটি ঘটনার তুলনা টেনেছেন বিজেপি সাংসদ। সংসদের সম্মান হানি করার দায়ে ১১ জন সাংসদের সদস্যপদ বাতিল করেছিল তৎকালীন বিশেষ কমিটি। পরে বিশেষ কমিটির সিদ্ধান্তই বজায় রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। দুবে বলেছেন, ইউরোপ এবং আমেরিকায় তাঁর মন্তব্যে বার বার দেশ ও সংসদের সম্মান নষ্ট করেছেন রাহুল গান্ধী, তাই সময় হয়েছে তাঁকে বহিষ্কার করার।
আরও পড়ুন: Adani Group in Defense | প্রতিরক্ষা মন্ত্রকেও কেন আদানিদের হাত, প্রশ্ন বিরোধীদের
গত চারদিন ধরে কোনও না কোনও ক্যাবিনেট মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমের সামনে রাহুলকে তুলোধোনা করছেন। কংগ্রেস নেতাকে আক্রমণের এই ধারা কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা আলোচনা করতে শুক্রবার সকাল সকাল প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের (Rajnath Singh) সঙ্গে দেখা করেছেন আটজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাহুল বলেছিলেন, ভারতে গণতন্ত্র এখন বিপন্ন। এই কথাতেই চটেছেন বিজেপির সাংসদরা। তাঁদের দাবি, বিদেশের মাটিতে বসে ভারতের অপমান করেছেন ওয়েনাডের কংগ্রেস সাংসদ। এই নিয়ে হইচই করে প্রায় রোজই সংসদের দুই কক্ষ অচল করে দিচ্ছে বিজেপি। সংসদের অধিবেশন শাসকদলের প্রতিনিধিরা বানচাল করছেন, এ দৃশ্য অবশ্য বিরল। যাই হোক, রাহুল গান্ধীকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে চিৎকার জুড়েছেন বিজেপি সাংসদরা। সেই দাবি উড়িয়ে কংগ্রেস পাল্টা কটাক্ষ করে বলেছে, যারা গণতন্ত্র চুরমার করছে, তারাই আবার তা বাঁচানোর বুলি ঝাড়ছে।
লোকসভায় কংগ্রেসের উপপ্রধান মণিকম টেগোর (Manickam Tagore) গত মঙ্গলবার বলেন, ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই নেই। রাহুল কিছুই ভুল বলেননি। আরএসএসের লোকজন ক্ষমা চায়, কংগ্রেসের কেউ ক্ষমা চায় না। রাহুল ঠিকই বলেছেন, দেশে সাধারণ মানুষের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। উল্টে টুইটারে নরেন্দ্র মোদির অতীতের কিছু বক্তব্যকে তুলে ধরে টেগোর বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত। তিনি বিদেশে গিয়ে ভারতের অপমান করেছেন। সাভারকরের মতোই তিনি ক্ষমা চাইতে পারেন এবং চাইবেন।