কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: প্রচারের সময় বিপুল ঢক্কানিনাদে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, এবার সরাসরি কৃষকের ঘরে পৌঁছে যাবে বছরে ছয় হাজার টাকা৷ তিন কিস্তিতে দেওয়া সেই আর্থিক প্রকল্পে ২০১৯ সালের ভোটে তাঁর নির্বাচনী প্রচারের অন্যতম হাতিয়ারও হয়ে উঠেছিল৷ কিন্তু নরেন্দ্র মোদির সেই বহুঘোষিত পিএম কিষান প্রকল্পে অন্তত তিন হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ৷ আর সে দুর্নীতি যে হয়েছে তা সংসদে দাঁড়িয়ে স্বীকার করেছেন খোদ কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী৷
গত বছরের জুলাইয়ে তাঁর বিবৃতি অনুযায়ী, অন্তত ৪২ লক্ষ অনুপযুক্ত উপভোক্তাকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে মোট তিন হাজার কোটি টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে৷ পরিস্থিতি এতটাই বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছেছে যে কেন্দ্রকে এখন রাজ্যওয়ারি তালিকা দিয়ে সংসদে ঘোষণা করতে হচ্ছে, অসমকে মোট ৫০০ কোটি টাকা ফেরত নিতে হবে প্রায় ৮ লক্ষ ৩০ হাজার বেআইনি উপভোক্তার কাছ থেকে৷ অথচ ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তাঁর বেজায় ঢাক পেটানো পিএম কিষাণ নিধি যোজনা প্রকল্পে বারবার জানানো হয়েছিল, এবার সরাসরি কৃষকের ঘরে পৌঁছে যাবে বছরে ছয় হাজার টাকা৷ তিন কিস্তিতে দেওয়া সেই আর্থিক প্রকল্প ২০১৯ সালের ভোটে তাঁর নির্বাচনী প্রচারের অন্যতম হাতিয়ারও হয়ে উঠেছিল৷
কিন্তু সংসদে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য বলছে, এই প্রকল্পে লুঠ হয়েছে অন্তত তিন হাজার কোটি টাকা৷ কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী গত বছরের জুলাইয়ে তাঁর বিবৃতিতে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিলেন, অন্তত ৪২ লক্ষ অনুপযুক্ত উপভোক্তাকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে মোট তিন হাজার কোটি টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে৷ বিজেপি সরকারের সেই বহুচর্চিত প্রকল্প সব থেকে নির্মমভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছিল ডবল ইঞ্জিনের রাজ্য অসমে৷
কীরকম সেই দুর্নীতির ধরণ? সরকারি অর্থ এভাবে লুঠ হওয়ায় অসমের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব জিষ্ণু বরুয়ার নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল গঠন করতে বাধ্য হয় অসম সরকার৷ সেই তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী যে ৩১ লাখ উপভোক্তাকে এই অর্থ দেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে ১৫ লক্ষই ভুয়ো৷ প্রকল্প যাঁর নামে তিনি অন্য কারোকে নিজের ইউজার আইডি আর পাসওয়ার্ড বিক্রি করে দিয়েছেন৷ পিএম কিষাণ যোজনার ওয়েবসাইটে ঢুকে নিজের নামে লগইন করতে হলে এই ইউজার আইডি আর পাসওয়ার্ড অবশ্যই জরুরি৷
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর গোটা অসমে বিজেপি নেতা আর স্থানীয় আমলাদের মধ্যে যেন প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় কে কত উপভোক্তার নাম ঢোকাতে পারবে৷ আর এই থেকেই দুর্নীতি ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ে গোটা অসম জুড়ে৷ যার ফলে বঞ্চিত হয়েছেন অসংখ্য কৃষক যাদের আসলে ওই যোজনার সুবিধা পাওয়ার কথা৷