কলকাতা: ঝড়ে কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, মুখ্যসচিবের কাছ থেকে তার প্রাথমিক রিপোর্ট নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রেমালের তাণ্ডবে এ রাজ্যে সবথেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবন ব্লকে। বারোশোরও বেশি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। ভেঙে গিয়েছে প্রায় তিনশো বাড়ি। নবান্নের নির্দেশে জরুরি ভিত্তিতে চলছে সমীক্ষা। সরকারি তরফে বলা হয়েছে, দ্রুত উদ্ধারকার্য শুরু করতে হবে। কলকাতায় যেখানে যেখানে জল জমেছে সেখানে পাম্প চালিয়ে জল বের করতে হবে। ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে জেলাশাসকদের থেকে ব্লকভিত্তিক রিপোর্ট তলব করেছেন মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকার (Chief Secretary BP Gopalika)। ভোট মিটলেই স্বজনহারা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। সোমবার এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে এ কথা জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের (Cyclone Remal) প্রভাবে রাজ্যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু প্রাণহানি অনেক কম। এখনও পর্যন্ত রেমালের তাণ্ডবে রাজ্যে মোট ৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলেরও। রেমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে থাকবে সরকার। পাশাপাশি স্বজনহারা এবং কৃষকদের কাছে ভোট মিটলে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে যাবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিবের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বাংলায় মোট ১৪০০ আশ্রয় শিবির তৈরি করা হয়েছে। সেখানে মোট ২ লক্ষ বাসিন্দাকে নিরাপদে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফের বঙ্গে মোদি, মঙ্গলে তিলোত্তমায় রোড শো
রবিবার রাতে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। সাগরদ্বীপ এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মধ্যবর্তী অংশে বাংলাদেশের মোংলার কাছ থেকে ঝড় স্থলভাগে প্রবেশ করেছিল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উপকূলবর্তী এলাকায়। কলকাতা শহরেও বহু অংশে গাছ পড়ে, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে বিপত্তি ঘটেছে। কলকাতার পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলাতেও ঝড়ের তাণ্ডব চলে। সোমবারও দিনভর দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হয়। হুগলি, হাওয়া, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ারেও নাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। এই জেলাগুলিতে কমলা সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর।
রেমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিক প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন মমতা। এক্স হ্যান্ডলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গ নদীমাতৃক রাজ্য, প্রতিবছরই তাই আমাদের নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়। এবারও সাইক্লোন ‘রেমালে’র প্রভাবে আমাদের রাজ্যে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হল ও হচ্ছে। প্রশাসনের তৎপরতায় এবারের ঝড়ে প্রাণহানি তুলনামূলকভাবে কম। ঝড়-বৃষ্টির দুর্যোগের মধ্যে যাঁরা নিজেদের কাছের মানুষকে হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। স্বজনহারাদের আর্থিক সহায়তার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আইন মোতাবেক প্রশাসন দেখে নেবে। নির্বাচনের আচরণবিধি উঠে গেলে আমরা এই সব বিষয় আরও গুরুত্ব দিয়ে পুরোটা বিবেচনা করব। আমি বিশ্বাস রাখি, সকলের সহযোগিতায় এই ঝড়ও আমরা কাটিয়ে উঠব।
পশ্চিমবঙ্গ নদীমাতৃক রাজ্য, বঙ্গোপসাগরের উপকূলে। প্রতিবছরই তাই আমাদের নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়। এবারো সাইক্লোন ‘রেমালে’র প্রভাবে আমাদের রাজ্যে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হল ও হচ্ছে। কিন্তু সবার উপরে মানুষের জীবন। সৌভাগ্যক্রমে এবং অবশ্যই রাজ্য প্রশাসনের তৎপরতায় এবার…
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 27, 2024
অন্য খবর দেখুন