skip to content
Monday, June 17, 2024

skip to content
Homeচতুর্থ স্তম্ভFourth Pillar | দুর্নীতির এক্কেবারে শিখরে কারা? কারা ডুবে রয়েছে আকণ্ঠ দুর্নীতির...

Fourth Pillar | দুর্নীতির এক্কেবারে শিখরে কারা? কারা ডুবে রয়েছে আকণ্ঠ দুর্নীতির পাঁকে?

Follow Us :

আমাদের দেশে দুর্নীতি হল সবথেকে বেশি ব্যবহৃত এক শব্দ, মানুষ থেকে শুরু করে প্রতিটা রাজনৈতিক দল এই শব্দ তাদের বিরোধীদের জন্য ব্যবহার করে। করতে করতে আপাতত তা সব্বার গা সওয়া হয়ে গেছে। চোখের সামনে মানুষ বিভিন্ন স্টিং অপারেশনে দেখেছে নেতারা হাত পেতে টাকা নিচ্ছে। শহরের মেয়র টাকা নিয়ে তোয়ালে মুড়ে ব্যাগে ঢোকাচ্ছে, অবশ্যই সে সব খুচরো টাকা, তারচেয়েও অনেক অনেক বেশি টাকা হাতবদল হয়, মানুষ জানে। চোখের সামনে বিড়ি ফোঁকা লোকটাকে চারচাকাতে চড়ে ঘুরতে দেখেছে, মিছিলের সামনে দড়ি পাকানো চেহারা নিয়ে ঝান্ডা ধরা লোকটার জাহাজ বাড়ি দেখেছে। এ বছরে যার রোজগার ১ কোটি, তার রোজগার পরের বছরে ১০ কোটি হতেও দেখেছে। সব মিলিয়ে বামপন্থীদের খানিক বাদ দিলে বাকি রাজনৈতিক ব্যবস্থাতে দুর্নীতি এতটাই প্রকট যে মানুষ ওসব নিয়ে ভাবাই বন্ধ করে দিয়েছে। হ্যাঁ, সিএসডিএস-এর এক সমীক্ষা বলছে, দেশে বাড়তে থাকা দুর্নীতি নিয়ে জনসংখ্যার ১৭-১৮ শতাংশের বেশি মানুষ ভাবতেই রাজি নন। আম আদমির চাহিদা রোটি কপড়া মকানের, একটা চাকরির, একটু কম মূল্যবৃদ্ধি, ছেলেমেয়ের স্কুলের শিক্ষা আর অসুখ হলে দওয়াদারু। তার বয়ে গেছে কোন রেল কেরানির ছেলের মেয়র বনে যাওয়ার পরে খান আষ্টেক বিদেশি গাড়ি আছে কি নেই। ওদিকে সেই তিনি আপাতত তাঁর বান্ধবীর কন্যার জন্মদিনে সমাজের উচ্চস্তরের মানুষজনদের নেমন্তন্ন করছেন, তাঁরাও হেঁ হেঁ করে গিয়ে হাজিরও হচ্ছেন। কাজেই দুর্নীতি ইস্যু নয়, কিন্তু দুর্নীতি আছে। চরম দুর্নীতি। সেই দুর্নীতির মূল কারণ হল নির্বাচন। নির্বাচনে জিততে হলে গাড়ি লাগে, টাকা লাগে, প্রচুর মানুষের সাহায্য লাগে, প্রচারের বিভিন্ন কায়দা লাগে আর এসবের জন্যই লাগে টাকা।

আপনি ভোটে দাঁড়িয়েছেন, দেশের সেবা করতে। গরিব মানুষের রোটি কপড়া মকানের ব্যবস্থা করার জন্য আপনি এই গণতান্ত্রিক নৃত্যে মানে নির্বাচনে শামিল হয়েছেন। তো টাকাটা কে দেবে? কেনই বা দেবে? একটু আধটু টাকা নয় যে বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে হয়ে যাবে। কোটি কোটি টাকা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। কাজেই যার টাকা আছে এবং যে ওই টাকাকে কাজে লাগিয়ে তার সম্পদকে দ্বিগুণ তিনগুণ, একশো গুণ করতে চায়, সে আপনাকে টাকা দেবে। কিন্তু আপনি তো দেশের সেবা করতে নেমেছেন, দেশের সেবার সঙ্গে তার কী সম্পর্ক? এইখানে এসেই উইংস-এর পাশ দিয়ে দুর্নীতির প্রবেশ। আপনি নির্বাচনে জিতে এমপি-এমএলএ হবেন, বেশ, কিন্তু আপনার হাতে ক্ষমতাও তো থাকবে, সেই ক্ষমতা ব্যবহার করে সেই যিনি আপনাকে টাকা দিচ্ছেন, তাঁর ব্যবসা বাড়ানোর দায় আপনাকেই নিতে হবে। এবং এসবের মধ্যে আপনারও কি শখ-আহ্লাদ নেই? আপনার নেই তো কী? আপনার ছেলে হালুয়ার তো আছে, কাজেই দুর্নীতি এবারে সেন্টার স্টেজ দখল করে ফেলল। প্রথম নির্বাচন ৫২ সাল, প্রায় তখনই আমাদের সামনে এল জিপ কেলেঙ্কারি। আজকের তুলনায় তা শিশু, কিন্তু কেলেঙ্কারির সূত্রপাত হল। ত্যাগব্রতের যাবজ্জীবনের শপথ নিয়ে যারা বসেছিল স্বরাজের জুড়িগাড়িতে, এবার তারাই সেই জুড়িগাড়ি হাঁকাল পথচারীদের সরিয়ে দিয়ে, সঙ্গে নিয়ে ওই টাকা জোগান দেনেওলাদের। ব্যবসায়ীদের কালো টাকা নির্বাচনে খাটে সেই থেকে। ব্যবসায়ী শিল্পপতিরা নির্বাচনে টাকা ঢালেন নিজেদের ফায়দা লুঠতে, অন্য কোনও কারণে নয়। বহুবার মধ্যে কথা উঠেছে, কমিউনিস্ট পার্টি বলেছে, তৃণমূল নেত্রী বলেছেন, আরও কিছু দলের নেতা বলেছেন নির্বাচনের টাকা দিক রাষ্ট্র, মানে স্টেট ফান্ডিং। কিন্তু কিছুই হয়নি। শেষমেশ মোদি সরকার আসার পরে ২০১৭তে অরুণ জেটলির বাজেটে এই বিষয়টি আসে এবং বলা হয় শিল্পপতিরা ইলেকশন বন্ড কিনতে পারেন এবং তা যে কোনও রাজনৈতিক দলকে দিতে পারেন। এই বন্ড কারা কিনছে তাও কেউ জানবে না, কারা পাচ্ছে তাও কেউ জানবে না। বছরের জানুয়ারি, এপ্রিল, জুলাই আর অক্টোবর মাসের প্রথম ১০ দিনে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ২৯টা ব্যাঙ্ক থেকে যে কোনও ব্যক্তি বা শিল্পপতি যে কোনও মূল্যের বন্ড কিনতে পারেন, যাকে ইচ্ছে খুশি দিতে পারেন, রাজনৈতিক দলগুলোকেও কে টাকা দিল তা জানাতে হবে না। তারা ব্যাঙ্কে এই বন্ড জমা দিলেই ব্যস, টাকা পেয়ে যাবেন।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | মহুয়া মৈত্রকে সংসদে বলতে দেওয়া হবে না

এতদিন কালো টাকা নির্বাচনে আসছিল এবার সাদা টাকা আসা শুরু হল। কিন্তু এতদিন এক বেআইনি পদ্ধতিতে দুর্নীতির জন্ম হচ্ছিল এবারে সেই দুর্নীতি লিগালাইজড হল, মানে আইনি দুর্নীতি যাকে বলা যায়। কীভাবে? আসুন দেখা যাক। এই বন্ড চালু করার সময় বলা হল এর গোপনীয়তা বজায় রাখা হবে। মানে কী কিনছে কেউ জানবে না, কাকে দিচ্ছে সেটাও কেউ জানবে না আর রাজনৈতিক দলগুলোকে কেবল কত টাকা পেয়েছে তা জানাতে হবে কে দিয়েছে তা জানাতে হবে না। কিন্তু বন্ড বিক্রি হবে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া থেকে, কোন শিল্পপতির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে বন্ড কেনা হল সেটা বিরোধীরা, সাংবাদিকেরা, সাধারণ মানুষ নাই জানতে পারে, কিন্তু সরকার? সে তো সব জানে। মিঃ ঝুনঝুনওয়ালা ১০০ কোটির বন্ড কিনেছেন এখবর তো মোদি-শাহের কাছে আছে। এবার মিঃ ঝুনঝুনওয়ালা যদি ২০ কোটি বিজেপিকে দেয়, তাহলে ৮০ কোটি বিরোধীদের দিয়েছে এই সহজ অঙ্ক জানার পরে সিবিআই বা ইডি কি বসে ঝুমঝুমি বাজাবে? বিরোধী দলকে দেবার ইচ্ছে থাকলেও কেউ কি দেবে? বা দিলেও সম্ভবত ৮০-২০ রেশিওতে দেবে, ৮০ টাকা বিজেপিকে ২০ টাকা বিরোধীদের। হচ্ছেও তাই। হিসেব বলছে ২০১৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত মোট ১৬৪৩৭ কোটি টাকার মধ্যে বিজেপি ৯১৮৮ কোটি টাকা পেয়েছে। মানে যে দল দেশের ৩৭ শতাংশ মানুষের ভোট পায় সেই দল দেশের শিল্পপতিদের ৫৬ শতাংশ ডোনেশন পেয়েছে। এবং এই হিসেবে কিঞ্চিৎ জল আছে, শুরুর দিকের থেকে এই সময়ে বিজেপির ডোনেশনের পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে এখন মোট বন্ডের চারভাগের তিন ভাগই পাচ্ছে বিজেপি। খুব স্বাভাবিক। কে আর হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে চায় হায়?

কোন শিল্পপতি খামোখা বিরোধী দলকে টাকা দেবেন? এবং যখন তারা ভালো করেই জানেন দেওয়ার মানেই হল ইডি আর সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্সকে নেমন্তন্ন পাঠানো। কর্পোরেট গোষ্ঠী বুঝেই ফেলেছে, তারা এক হাতে টাকা দিচ্ছে, অন্য হাতে লাভ বুঝে নিচ্ছে। যে ক্ষমতায় আসবে সেই টাকা পাবে। কিন্তু ক্ষমতায় আসবে কী করে? সেই শিল্পপতিরা টিভি চ্যানেল থেকে নিউজ পেপার কিনে রেখেছে সরকারের প্রচারের জন্য, তারপর কোটি কোটি টাকা দিচ্ছে এই ইলেকশন বন্ডের মাধ্যমে। কংগ্রেস পাচ্ছে ১০ শতাংশ ইলেকশন বন্ডের টাকা, বিজেপি ৫৭ শতাংশ। বিজেপি টাকার ফোয়ারা ছড়িয়ে দিচ্ছে নির্বাচনে, গরিব মানুষজনদের ভোট সরাসরি কেনা হচ্ছে, প্রচারের আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে। ধরুন না এই মধ্যপ্রদেশ নির্বাচনের কথা। সার্ভে দেখাচ্ছিল হারছে, বিজেপি হারছে। তারপর গ্যাপ কমতে শুরু করল, এবং এখন গ্যাপ তো নেইই, যাকে বলে কাঁটে কা টক্কর। ভোটের আগে আদানির এনডিটিভি দেখাতেই পারে যে বিজেপি এগিয়ে গেছে। কীসের জোরে হচ্ছে? টাকার জোরে। এবং এমন ভাবার কোনও কারণ নেই যে এটা কেবল বিজেপিই করছে, যে যেখানে ক্ষমতায় আছে সেই করছে, ভালোভাবেই করছে। মানে দেশ জুড়ে এক লিগালাইজড দুর্নীতি চলছে। ২০১৮তেই কিছু দুষ্টু মানুষজন চলে গেলেন আদালতে। কারা টাকা দিচ্ছে জানান। মানুষের স্বার্থ বিক্রি হচ্ছে কি না, টাকার বিনিময়ে সেই শিল্পপতিকে আলাদা সুবিধে দেওয়া হচ্ছে কি না জানান। তো অ্যাটর্নি জেনারেল অফ ইন্ডিয়া আর ভেঙ্কটরামানি আদালতে বলেছেন রাজনৈতিক দল কোথা থেকে টাকা পাচ্ছে সেটা আম জনতার জানার কীই বা দরকার? মামদোবাজি আর কী? সাধারণ মানুষ কোথা থেকে টাকা পাচ্ছে, সে টাকা কোথায় যাচ্ছে তার পাই পাই হিসেব সরকার রাখবে আর সরকারে বসে থাকা শাসকদল বা বিরোধী রাজনৈতিক দল কার কাছ থেকে কত টাকা পাচ্ছে তা জানানো হবে না, কেন হবে না? এই অ্যাটর্নি জেনারেল দেশের মানুষের জন্য কথা বলছেন না ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলের জন্য কথা বলছেন? এবং এই মামলা সেই ২০১৮ থেকে চলছে তো চলছেই। সানি দেওলের ‘দামিনী’ ছবিতে ছিল, তারিখ পে তারিখ, তারিখ পে তারিখ, সেটাই চলছে আজও। এবং আপাতত কোনও রায় আসবে বলেও মনে হচ্ছে না। দেশ চলবে পিছনে থাকা সেই সব অদৃশ্য মুখোশধারী কর্পোরেট মাথাদের নির্দেশে, দেশের শাসক পুতুল, তা চলছে দু’ তিনজন কর্পোরেট মালিকদের অঙ্গুলিহেলনে কাজেই প্রশ্ন করবেন না কেন ধামরা পোর্ট চলে যাচ্ছে আদানিদের হাতে, কেন কেরলের বাম সরকারও জেলে বা তীরবর্তী মানুষজনকে উচ্ছেদ করেই বন্দর তুলে দিচ্ছে আদানিদের হাতে। কেন এই রাজ্যেও হলদিয়া, খিদিরপুর এবং তাজপুরে বাড়ছে আদানি সাম্রাজ্য, কেন রাজস্থানে পবন চাক্কি, উইন্ড মিল আদানি পাওয়ারের হাতে গেল, কেন হিমাচলের আপেল ব্যবসা রাজনৈতি ক্ষমতা বদলের পরেও আদানিদেরই হাতে রয়ে গেল এসব বেয়াড়া প্রশ্ন করা নিষেধ। করলেই এথিক্স কমিটি ডেকে সংসদের বাইরে বের করে দেওয়া হবে, এখন দেশে আইনি দুর্নীতির এথিক্স বাঁচিয়েই এথিকাল কাজ হচ্ছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
BJP | ঠাঁই হল না দলবদলুদের সংঘের চাপে, ভোট প্রার্থী আদি বিজেপি?
00:00
Video thumbnail
লোকসভায় জোর ধাক্কা, হতোদ্যম বঙ্গ বিজেপি, প্রার্থীতালিকায় নেই চমক, সংঘের চাপে প্রার্থী আদি বিজেপি?
00:00
Video thumbnail
Sukanta | Kanchenjunga Express | কী করে হলো দুর্ঘটনা? দায়ী কে? শুনুন সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য
00:00
Video thumbnail
Mamata Banerjee | ভাড়া বাড়িয়ে যাচ্ছে, সুরক্ষায় নজর নেই! বিজেপিকে জোর ধাক্কা মমতার
00:00
Video thumbnail
N. Chandrababu Naidu | BJP | স্পিকার পদ বিজেপির, জোটের হাতে ডেপুটি? বিরাট ঝড়ের মুখে এনডিএ?
00:00
Video thumbnail
Kanchenjunga Express | Sukanta Majumder | রেল দুর্ঘটনায় পাশে দাঁড়ানোর রাজনীতি? এগিয়ে কোন দল?
00:00
Video thumbnail
Sukanta Majumder | Railway | শকুনের নজর ভাগাড়ে, বিরোধীর নজর রাজনীতিতে, রেল দুর্ঘটনায় এ কী মন্তব্য?
00:00
Video thumbnail
Kanchenjunga Express | কাঞ্চনজঙ্ঘা দুর্ঘটনা বাতিল বহু ট্রেন দেখে নিন তালিকা
00:00
Video thumbnail
Kanchanjunga Express | উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল উড়ানে কি দেখা হবে মমতা-আনন্দ বোসের?
00:00
Video thumbnail
Train Accident | ১২ মাসে ৪টি ভয়াবহ দুর্ঘটনা , কতটা সুরক্ষিত রেলযাত্রা ?
00:00