skip to content
Monday, July 1, 2024

skip to content
HomeCurrent News৩৭ বছরের সুনীল ছেত্রীর জোড়া গোলেই ভারত হারাল কম্বোডিয়াকে

৩৭ বছরের সুনীল ছেত্রীর জোড়া গোলেই ভারত হারাল কম্বোডিয়াকে

Follow Us :

ভারত–২       কম্বোডিয়া–০

(সুনীল ছেত্রী-২)

পনেরো বছর আগে আগস্টের এক সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির আম্বেডকর স্টেডিয়ামে নেহরু কাপের ম্যাচে বব হাউটনের ভারত ছয় গোলে হারিয়েছিল কম্বোডিয়াকে। সেই ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন সুনীল ছেত্রী। হাউটনের সেই ভারতীয় দলের সবাই এখন অবসরে। টিমের অন্যতম ডিফেন্ডার মহেশ গাউলি তো এখন ভারতের সহকারি কোচ। সেদিনের সেই তরুণ স্ট্রাইকার সুনীল ছেত্রীর বয়স এখন ৩৭। কিন্তু এখনও ভারতকে জেতাচ্ছে তাঁর পা কিংবা মাথা। বুধবার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডে ভারত জিতল বটে। কিন্তু ইগর স্টিমাকের টিমের খেলা দেখে মন ভরল না। সুনীলের দুটো গোল ছাড়া ভারত নিশ্চিত সুযোগ পেয়েছে একেবারে ম্যাচের শেষ দিকে। সুনীলেরই বদলি আশিক কুরুনিয়ান তিন জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে গোল করতে পারলেন না গোলকিপার হূল কিমহুয়েকে পরাস্ত করতে না পারায়। এর বাইরে ভারতের যে দাপট ছিল তা গোল হয়নি বেশির ভাগ শট বাইরে যাওয়ায়। কম্বোডিয়া ফিফা র‍্যাংকিংয়ে ভারতের চেয়ে ৬৫ ধাপ নীচে। সেই টিমের বিরুদ্ধে পঞ্চাশ হাজার দর্শকের সমর্থন পেয়েও ভারত যা খেলল তাতে তাদের একশোয় পঞ্চাশের বেশি দেওয়া যাচ্ছে না।

ভারতের কোচ ইগর স্টিমাক ক্রোয়েশিয়ার হয়ে বিশ্ব কাপ খেলেছেন, আটানব্বইয়ের ফ্রান্স বিশ্ব কাপে দেশকে তৃতীয় করার পিছনে ডিফেন্ডার স্টিমাকের বড় ভূমিকা ছিল। তেমনই কম্বোডিয়ার কোচ কেওসাকি হন্ডাও জাপানের হয়ে তিনটি বিশ্ব কাপ খেলেছেন। ২০১০, ২০১৪ এবং ২০১৮-র বিশ্ব কাপে হন্ডা ছিলেন জাপানের মিডফিল্ড জেনারেল। সার জীবনই এসি মিলানের হয়ে খেলেছেন হন্ডা। তাঁর কোচিংয়ে কম্বোডিয়া যে জাপানের মতো খেলবে এটা ভাবা অবাস্তব। কিন্তু একটা জিনিস তিনি কম্বোডিয়ার অখ্যাত, অজ্ঞাত ফুটবলারদের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে পেরেছেন। তা হল নির্ভয় ফুটবল। কম্বোডিয়ার ফুটবলারদের উচ্চতা খুবই কম। খাটোই বলা যায়। তাদের স্কিলও যে দুর্দান্ত তাও বলা যাবে না। ফরোয়ার্ড লাইনের ভেদশক্তিও নেই বললেই চলে। সারা ম্যাচে বিরতির আগে একটি উঁচু ফ্রি কিক ছাড়া ভারতের দীর্ঘকায় গোলকিপার গুরপ্রীত সিংকে তেমন বলই ধরতে হয়নি। কম্বোডিয়ানদের সব আক্রমণই সন্দেশ ঝিঙ্গন কিংবা আনোয়ার আলির কাছে এসেই থমকে যাচ্ছিল। কিন্তু তাদের সম্পর্কে যা বলার তা হল ছেলেগুলোর সাহস আছে। তাদের ডিফেন্সিভ সংগঠন বেশ ভাল। বক্সের মধ্যে যে ভাবে তারা নিজেদের মধ্যে দেওয়া নেওয়া করে ভারতের অ্যাটাকারদের রুখে দিলেন তা তারিফ করার মতো।

তবে সব মিলিয়ে কম্বোডিয়া তো জর্ডন কিংবা বাহারিন নয়। এ রকম একটা টিমের বিরুদ্ধে ভারতের মাঝ মাঠ কিংবা ফরোয়ার্ড লাইন আরও বেশি উজ্জীবিত ফুটবল খেলতে পারত। কিন্তু সামনের দিকের প্লেয়ারদের মধ্যে সুনীল ছেত্রীকে বাদ দিলে লিস্টন কোলাসো ছাড়া বাকিদের ভূমিকা খুবই অকিঞ্চিৎকর। বিরতির পর মনবীর সিংয়ের বদলে মাঠে নেমে উদান্ত সিং তবু চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাঁর মধ্যে যে ডাউন দ্য লাইন দৌড় আমরা আগে দেখেছি তা এদিন পেলাম কোথায়? প্রশংসা করতে হবে লিস্টনের। সুনীলের উত্তরসূরি হিসেবে এখন তাঁর কথাই ভাবা যায়। চোদ্দ মিনিটে সুনীলের প্রথম গোলটা তাঁরই উদ্যোগে পাওয়া। বাঁ দিক দিয়ে লিস্টন দুজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন। তৃতীয় জনকে কাটাবার সময়েই তাঁকে বিশ্রি ট্যাকল করা হল। পরিষ্কার পেনাল্টি। এবং সুনীল ছেত্রী তা থেকে গোল করতে ভুল করেননি। এদিনের জোড়া গোলের পর ভারতের জার্সি গায়ে সুনীলের গোল হয়ে গেল ৮২।

ভারত অধিনায়কের দ্বিতীয় গোলটা ৫৯ মিনিটে। ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজের ইন সুইং সেন্টারটা ঠিক ফলো করে বলের লাইনে পৌছে গিয়েছিলেন সুনীল। তার পর চমৎকার একটা হেড এবং গোল। তাঁর পিছনে ভারতের তরুণ মিডফিল্ডাররা কোথায় যে বল রাখবেন বা কখন যে শট নেবেন তার হদিশ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পারলে ভারতের ব্যবধান আরও বাড়ত। ৬৭ মিনিটে সুনীলকে তুলে নেওয়া হল। সুনীল মাঠে থাকলে কি হ্যাটট্রিক হতে পারত? অনুমানের বিষয়। তাঁর উত্তরসূরিদের যা অবস্থা। তবু ওরই মধ্যে আশিক কুরুনিয়ান কিংবা ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজ মন্দের ভাল। ভারতের কোচ স্টিমাক দুই উইং ব্যাকে প্রীতম কোটাল এবং শুভাশিস বসুকে না নামিয়ে শুরু থেকে নামান রোশন নাওরেম এবং আকাশ মিশ্রকে। দুজনে ভালই খেললেন। প্রীতমকে শেষ দিকে কিছুক্ষণের জন্য নামানো হল। তাহলে কি দীর্ঘ দিন ভারতের হয়ে খেলা দুই বঙ্গ সন্তানের দিন কি শেষ হয়ে এল?

দিনের প্রথম ম্যাচে হং কং ২-১ গোলে হারিয়ে দিল আফগানিস্তানকে। চারটি টিমের প্রথম ম্যাচ দেখে বলে ফেলা যায়, গ্রুপ ডি থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সামনের বছরের এশিয়ান কাপে ভারতের কোয়ালিফাই করা শুধু সময়ের অপেক্ষা।

RELATED ARTICLES

Most Popular