হিজাব আন্দোলনের জেরে উত্তপ্ত হয়ে আছে ইরানের পরিস্থিতি। বিক্ষোভ-আন্দোলনে অংশ নেওয়া দে্শবাসীর মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। যদিও বেড়েই চলেছে আন্দোলনের তীব্রতা। আর যে মহিলা সাংবাদিকের ফটোগ্রাফ থেকে বিক্ষোভের সূচনা হয়েছিল তিনিই আপাতত রয়েছেন জেলে। আশ্চর্যের বিষয় ওই সাংবাদিক নিলুফার হামেদির বিরুদ্ধে একমাত্র অভিযোগ তিনি ওই ছবিটা ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন। আর সেকারণেই তাঁকে জেলে বন্দি করা হয়েছে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর টুইটারে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন ওই চিত্রসাংবাদিক। সেই ফটোটি ছিল মাহসা আমিনির বাবা আর মায়ের। ইরানের রাজধানীতে হাসপাতালে চিকিৎসার মধ্যে কোমায় চলে যাওয়া ২২ বছরের মেয়ের মা ও বাবা সেই সময় পরস্পরকে সাহস জোগাতে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। কিন্তু সেই ছবি নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই স্পষ্ট হয়ে যায়, ইরানে কতটা দুর্বিসহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর যেন ঠিক তার জেরেই মাহসার মৃত্যুর পর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা দেশ।
গত তেত্রিশ বছরের মধ্যে ইরানে সম্ভবত সব থেকে উত্তাল হওয়া বিক্ষোভের পরিস্থিতির জেরে ১৯ জন শিশু সহ ১৮৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত কয়েকশো মানুষ আর গ্রেফতার হন হাজার হাজার ইরানের বাসিন্দা। সাংবাদিক হিসাবে সবসময় একরোখা নিলুফার হামেদি। আগেও অনেক সাড়া জাগানো খবর করেছিলেন তিনি। কিন্তু এই ছবিটি যেন সব কিছুকেই ছাপিয়ে গিয়েছে। বিদ্বজনেরা মনে করছেন তারই ফলস্বরূপ এই হাজতবাস। গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি জেলেই আছেন। তাঁর বন্দি হওয়ার খবর টুইট করে সবাইকে জানিয়েছিলেন আইনজীবী মহ1ম্মদ আলি কামফিরৌজি। টুইটে তিনি জানিয়েছিলেন, তল্লাশির নামে নিরাপত্তা কর্মীরা এসে ঘর তছনছ করে তল্লাশি চালায়। এরপরে গ্রেফতার করে নিলুফারকে।
গত তিন সপ্তাহ ধরে চলছে হিজাব বিরোধী আন্দোলন। কিন্তু প্রতিবাদের উত্তাপ যেন ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। চলছে লাগাতার ধরপাকড়। প্রসঙ্গ, মাহসা আমিনিকে (Mahsa Amini) নীতি পুলিশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ, পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় মারধরের জেরেই অসুস্থ হন তিনি। যদিও পুলিশের দাবি, আমিনিকে মারধর করা হয়নি। কিন্তু গ্রেফতারের পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে মাহসার মৃত্যুর পর থেকেই যেন আন্দোলনের আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে। রাস্তাকেই রাস্তা হিসাবে বেছে নেন দেশের আমজনতা।