সন্দেশখালি: বেড়মজুর ১ এবং ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করার পর শনিবার সকাল থেকে শান্ত গোটা তল্লাট। শুক্রবার বেড়মজুর, কাঠখোলা প্রভৃতি অঞ্চল ছিল অগ্নিগর্ভ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয়বার সন্দেশখালি (Sandeshkhali Incident) ছুটে গিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার (DG Rajeev Kumar)। তাঁর নির্দেশেই রাতে সন্দেশখালিতে জরুরি বৈঠক করেন পদস্থ পুলিশ কর্তারা। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প করবে। সেখানে সাধারণ মানুষের অভিযোগ শোনা হবে। রাত থেকেই পুলিশ গ্রামে গ্রামে টহল দিতে শুরু করে।
শনিবার সকালে এলাকায় পৌঁছন দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সুপ্রতিম সরকার। তিনি কাঠপোলের অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এদিন সন্দেশখালিতে গিয়েছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmick) এবং দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু (Sujit Bose)। তাঁরাও গ্রামে ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। সুজিত বলেন, এখানে কিছু ঘটনা ঘটেছে গতকাল। আমরা পরিস্থিতি দেখতে এসেছি। গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলছি। গত তিনদিন ধরে এলাকায় ঘুরছেন সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাত। তিনি দাবি করেন, শেখ শাহজাহান অপরাধী, এমন কথা তাঁকে গ্রামের কেউ বলেনি। কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সেই ক্ষোভ মেটানোর চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব-৯)
এদিন সন্দেশখালিতে যান সিপিএমের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় (Minakshi Mukherjee)। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ডিওয়াইএফের রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা। একাধিক জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় ঘুরপথে সন্দেশখালিতে ঢোকেন সিপিএমের যুব নেতৃত্ব। মীনাক্ষীকে পুলিশ আটকালে যুব নেতাদের সঙ্গে তাদের তর্কাতর্কি হয়। পরে অবশ্য মীনাক্ষীদের যেতে দেওয়া হয়। তাঁরা জেলবন্দি প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের বাড়িতে যান। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল শনিবারও গ্রামে গ্রামে ঘুরেছে। ওই দলটি শুক্রবারও গোলমালের সময় সন্দেশখালিতে ছিল।
আরও পড়ুন: প্রাপ্য টাকা না পেয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পোস্টার চিত্রশিল্পীর
সন্দেশখালির (Sandeshkhali Incident) বেড়মজুর-ঝুপখালি এলাকায় দিনভর উত্তেজনা ছিল শুক্রবার। মহিলারা দফায় দফায় লাঠি-ঝাঁটা হাতে বিক্ষোভ দেখান। গ্রামের রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে বিভিন্ন এলাকায় অবরোধ করা হয়। বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। একাধিক তৃণমূল নেতার আলাঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি অজিত মাইতির বাড়িতে ভাংচুর চলে। তাঁকে মারধর করে গ্রামবাসী। রাতেই পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যায়। এদিন সকাল থেকে এলাকায় দোকানপাট খুলেছে। যানবাহনও চলছে। নজরদারির জন্য কাঠপোল নতুনবাজার এলাকায় তিনটি সিসিটিভি বসানো হয়েছে। এদিন সকাল থেকে এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল ব়্যাফ এবং কমব্যাট ফোর্স।
অন্য খবর দেখুন