কাবুল: তালিবানের আফগানিস্তান দখল নেওয়ার গতি পশ্চিমী আত্মবিশ্বাসকে প্ররোচিত করেছে৷ কুড়ি বছর ধরে আমেরিকার বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় সবই কি বৃথা? কী ভুল হয়েছে? কোন পথে ভুল হয়েছে যে, অপ্রতিরোধ্য গতিতে তালিবানরা এগিয়ে দখল করল। এই সব প্রশ্ন নিয়ে কাটাছেড়া চলবে। তবে, বর্তমান পরিস্থিতি চীন অপেক্ষায় আছে। কীভাবে মার্কিনদের ছেড়ে যাওয়া ‘শূন্যস্থান’ পূরণের সুবর্ণ সুযোগকে কাজে লাগানো যায়৷ তার প্রমাণ পাওয়া যায়, কয়েকদিন আগে চীনের গ্লোবাল টাইমস পত্রিকা প্রকাশিত খবরে বলা হয়, চীন বিশেষভাবে নজর রাখবে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি যেন শিনজিয়াং প্রদেশে কোন নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে। এই স্বশাসিত অঞ্চলটি আফগানিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন।
কারণ, চীন এখনও তালিবান নিয়ে মুখ খোলেনি। কিংবা, বেইজিং আনুষ্ঠানিকভাবে তালিবানকে আফগানিস্তানের নতুন সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। বরং, বিবৃতিতে জানিয়েছে, “স্বাধীনভাবে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণে আফগান জনগণের অধিকারকে সম্মান করি” এবং “আফগানিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রস্তুত।” এখানে বিষয়টি স্পষ্ট: তালিবানের সঙ্গে বেইজিংয়ের আরও ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর বিষয়ে কিছু দ্বিধা রয়েছে৷ ঠিক তেমনি, আফগানিস্তানের সবচেয়ে প্রভাবশালী বাইরের খেলোয়াড় হিসেবে নিজেদের দাবী করতে প্রস্তুত৷ অথচ, তারা যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা পরিত্যক্ত। আফগানিস্তানের চীনা দূতাবাস সেখানে কোনও চীনা নাগরিক হতাহত হওয়ার খবর পায়নি বলে জানিয়েছে। তবে চীনা দূতাবাস এই মূহুর্তে আফগানিস্তানে তাদের নাগরিকদের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শও দিচ্ছে।
একই ভাবে আফগানিস্তানে মার্কিন আক্রমণের পর থেকে সেদেশে চীন নিম্ন প্রোফাইল বজায় রেখেছে, কোনও ক্ষমতার রাজনীতিতে না গিয়ে। বরং, বেজিং চুপ থেকে আফগানিস্তানে মার্কিনিদের আগ্রাসন ও পাহাড় সমান খরচ দেখছিল। পাশাপাশি, চীন চিকিৎসা সহায়তা, হাসপাতাল, একটি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ-সহ একাধিক খাতে কয়েক মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রদান করেছে। সার্বিক ভাবে, আফগানিস্তানের ক্ষমতায় তালিবান ফিরে আসার পর ভবিষ্যৎ কী দাঁড়াবে তা নিয়ে দোলাচলে বেইজিং৷