বোলপুর: বগটুই গণহ্ত্যার (Rampurhat Violence) প্রথম থেকেই তৃণমূল (TMC) নেতা আনারুল হোসেনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তৃণমূলের রামপুরহাট-১ ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি বিরুদ্ধে অভিযোগ, গ্রামবাসীদের একাংশ অগ্নিকাণ্ডের কথা তাঁকে জানালেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেননি তিনি। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বগটুই গ্রামে গিয়ে আনারুলকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন। পুলিস গ্রেফতার করতেই আনারুলকে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল। এর আগেও আনারুলকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে আনারুলকে পদে রেখে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
সেই অনুরোধের চিঠিই প্রকাশ্যে এসেছে বৃহস্পতিবার। যা ২০২১-এর জুনে লেখা। তৃণমূলেরই অন্দরে রামপুরহাটের প্রভাবশালী নেতা তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় আনারুলের হয়ে সুপারিশ করেন অনুব্রতকে। চিঠিতে লেখেন, পঞ্চায়েত ভোট অবধি আনারুলকে রেখে দেওয়া হোক ব্লক সভাপতির পদে। এই প্রসঙ্গে অনুব্রত বলেন, ‘ভোটের ফলাফল খারাপ হওয়ার জন্য আমি আনারুলকে তখন সরাতে চেয়েছিলাম। আশিসরা অনুরোধ করে আমাকে একটা চিঠি দিয়েছিলেন। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আনারুলকে রেখে দিয়েছিলাম। আমার দলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, তাই ওনার কথাটাও তো শুনতে হবে।’
এর পরই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন অনুব্রত মণ্ডল। অনুব্রতর কথায়, ‘ এই ঘটনা আনারুল ঘটায়নি। তবুও বলছি, আনারুলকে সেই মুহূর্তে সরিয়ে দিয়ে ওর ভালোই হত।’ সিবিআইয়ের ভূয়সী প্রশংসা শোনা গিয়েছে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতির মুখে। তিনি বলেন, প্রথমে সিট তদন্ত করছিল। তার পর সিবিআই তদন্তভার পেয়েছে। তদন্ত ভালো হচ্ছে। দোষীরা সাজা পাবে। ২২ জন আসামি ধরা পড়েছে। সিবিআইয়ের প্রতি পূর্ণ আস্থা রয়েছে। কেন্দ্র এবং রাজ্যের সব এজেন্সির উপরই আস্থা আছে বলেও দাবি করেছেন অনুব্রত।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: অনুব্রতকে গ্রেফতারের চক্রান্ত করছে বিজেপি, দাবি মমতার
দলীয় চিঠি সংবাদমাধ্যমে হাতে চলে আসায় বিস্ময় প্রকাশ করেন অনুব্রত। বলেন, ‘এই চিঠিটা আপনাদের কীভাবে পেলেন বলুন তো?!’ ২১ মার্চ, সোমবার সন্ধেয় বীরভূমের বগটুই মোড়ে খুন হন বড়শাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ৷ তাঁর মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বগটুই গ্রামের পূর্বপাড়ায় তাণ্ডব চালায় একদল যুবক৷ আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি বাড়িতে৷ সেই আগুনে মৃত্যু হয় ৭ জনের৷ পরে আরও একজনের মৃত্যু হয় রামপুরহাট হাসপাতালে। প্রথমে সিট এই ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার হাতে পেয়েছে সিবিআই।