ক্যানিং: জলে ভাসছে অ্যালুমিনিয়ামের বড় হাঁড়ি৷ আর সেই হাঁড়ির ভেতর শুয়ে ঘুম দিচ্ছে একরত্তি৷ পাশে দাঁড়িয়ে বাবা৷ কোমর সমান জলে দাঁড়িয়ে শিশুটির মুখে পোলিও টিকার দু’ড্রপ ফেলে দিলেন এক আশা কর্মী৷ রবিবার থেকে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল ওই ছবি নেট পাড়ার বাসিন্দাদের মুগ্ধ করেছে৷ সকলের প্রশংসা কুড়োচ্ছেন শিশুটির বাবা এবং ওই আশাকর্মী৷
আরও পড়ুন: পুজোর মরশুমে বনধ সমর্থনে নারাজ মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ীরা
রবিবার ছিল শিশুদের পালস পোলিও খাওয়ানোর দিন৷ কিন্তু গত কয়েকদিনের বৃষ্টির জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং-সহ একাধিক এলাকা জলে ঢুবে৷ জলমগ্ন এলাকাগুলিকে ঘরবন্দি শিশুদের পোলিও খাওয়ানোই বড় চ্যালেঞ্জ ছিল প্রশাসনের কাছে৷ সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজে নেমে পড়েছিলেন আশা কর্মীরা৷ জলের মধ্যে যাঁদের পক্ষে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়া সম্ভব হয়নি তাঁদের বাড়ি পৌঁছে যান ‘আশা দিদিরা’৷
আরও পড়ুন: হেলমেট পরেই স্টিয়ারিংয়ে হাত সরকারি বাস চালকদের
হাঁটু সমান জল ঠেলতে ঠেলতে আশা কর্মীরা পৌঁছন ক্যানিং ২ নম্বর ব্লকের সারেঙ্গাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিংহেশ্বরি গ্রাম৷ ওই গ্রামের বাসিন্দা নিজামুদ্দিন সদ্য বাবা হয়েছেন৷ আশাকর্মীদের ডাক শুনে সদ্যোজাতকে পোলিও খাওয়াতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন নিজামুদ্দিন৷ তবে কোমর সমান জলের মধ্যে শিশুটিকে কোলে করে নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নেননি৷ ঘরে থাকা একটি বড় অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ির ভেতর কাঁথা বিছিয়ে তার মধ্যে শিশুকে শোয়ান৷ এর পর সেই হাঁড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ঘর থেকে৷
এদিকে দূর থেকে আশাকর্মীরা দেখেন জলের মধ্যে ভাসছে একটি বড় হাঁড়ি৷ পিছনে নিজামুদ্দিন৷ খানিকক্ষণ পর তাঁরা বুঝতে পারেন ওই হাঁড়ির ভেতর রয়েছে শিশু৷ এভাবে একটা শিশু পোলিও খাওয়াতে হবে তা সম্ভবত কল্পনাও করতে পারেননি আশা কর্মীরা৷ কিন্তু সব ভালো যার শেষ ভালো৷ বাবার উপস্থিত বুদ্ধি এবং আশাকর্মীদের প্রচেষ্টায় পোলিও টিকা পেল শিশুটি৷