কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: হাতে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন বাবা, মা। অসহায় অবস্থায় বাড়ির উঠোনেই পড়ে রয়েছেন ২৬ বছরের কৃষ্ণেন্দু। ছেলের জন্য জমি-জায়গা বিক্রি করে দিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি ব্লকের বড় জামতলার ওই দম্পতি। তবুও সুস্থ হয়ে ওঠেনি তাঁদের ছেলে কৃষ্ণেন্দু।
কৃষ্ণেন্দুর মা রুমা দলুই জানিয়েছেন, দুই মেয়ে থাকলেও কৃষ্ণেন্দু তাঁদের একমাত্র ছেলে। ছোট থেকে লেখাপড়ায় ভালো। তবে, ক্লাস এইটের পর আর পড়াশোনা করতে পারেনি সে। অভাবের সংসারের হাল ধরতে স্কুল ছেড়ে নলকূপ বসানোর কাজ শুরু করে।
এরপর ২০১৪ সালের সরস্বতী পুজোর রাতে হঠাৎই ঘুমন্ত অবস্থায় চিৎকার শুরু করে কৃষ্ণেন্দু। তারপর থেকেই সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এরপর ওই দম্পতি ছেলের একাধিক চিকিৎসক ও হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যান। চিকিৎসার খরচ মেটাতে বিক্রি করতে হয় জমি ও দোকান। এরপর থেকে আর স্বাভাবিক হয়নি কৃষ্ণেন্দু দলুই।
মাঝে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। প্রায় ৪ মাস পরে আবার বাড়ি ফেরেন। ছেলে যাতে আগের মতোঁ সুস্থ-স্বাভাবিক হয়, সেই আশায় বিয়েও দিয়েছিলেন বাবা মা। বিয়ের পর কৃষ্ণেন্দুর আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখেই ২ মাস পর চলে যায় স্ত্রী।
আরও পড়ুন- Nadia: মেয়ে হওয়ায় অত্যাচার, ৯ মাসের শিশু কোলে বাপেরবাড়িতে বধূ
প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, কৃষ্ণেন্দুর শিকল খোলা থাকলেই তাঁর বাবা দীনেশ দোলুইয়ের উপর হামলা করে সে। এর আগে দু’একবার বাবার উপর আক্রমণও করেছিল। তাই বর্তমানে ছেলেকে ১ বছর ধরে হাত-পায়ে শিকল বেঁধে রেখেছে পরিবার। ছেলের চিকিৎসা করাতে সর্বস্বান্ত ওই পরিবার। অগত্যা শিকল বাঁধা অবস্থায় এখন দিন কাটছে কৃষ্ণেন্দুর। তাঁর স্বাভাবিক হওয়ার দিন গুনছে পরিবার।