কাবুল: তালিবানের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের পঞ্জশিরে প্রথমবার নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের পতাকা উড়ল৷ আফগানবাসীকে তালিবানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বানও জানানো হয়েছে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের তরফে৷ এ দিকে তালিবানরা কাবুলের অসামরিক কর্মচারীদের অফিসে ফিরে যেতে বলেছে। কিন্তু অন্যান্য সকল কর্মচারী উপস্থিত থাকলেও মহিলা কর্মচারীদের বরখাস্ত করেছে অনেক সংস্থা। কারণ, হিসাবে ‘নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতি’র যুক্তি দেওয়া হয়েছে। ঠিক নব্বইয়ের দশকে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে মহিলা কর্মীদের সরানো হয়েছিল।
১৫ অগস্টে তালিবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছে। তারপর থেকেই বিশ্বের দরবারে নিজেদের স্বীকৃতি চায়ছে তারা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তালিবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে আফগানিস্তানের উত্তরে বসবাসকারী বিভিন্ন জনজাতি। ‘নর্দার্ন অ্যালায়েন্স’ নামক জোটের মাধ্যমে৷ যে জোট ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালিবানদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছিল৷ সেই জোট ফের সংঘবদ্ধ হয়েছে৷ নেতৃত্বে আফগান যোদ্ধা আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আলি রাশিদ দোস্তুম। তিনিও একজন উজবেক যোদ্ধা। তিনি দীর্ঘদিন আফগানিস্তানের উপ-রাষ্ট্রপতি ছিলেন। সদ্য প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি আমরুল্লাহ সালেহও এই জোটে যোগ দিয়েছে।
মাসুদের অধীনে সোভিয়েতের পরে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই করার অভিজ্ঞতা রয়েছে সালেহর। সালেহ জানিয়েছেন, তিনি আপাতত যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্ব সামলাবেন। বর্তমানে পঞ্জশিরে থেকে বিভিন্ন জনজাতির যোদ্ধা গোষ্ঠীর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ছক কষছেন দেশের প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি আমরুল্লাহ সালেহ।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ চলেছিল। সেই সময়ও তালিবানরা হিন্দুকুশ পর্বতের মাঝে অবস্থিত পঞ্জশির প্রদেশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি। এবারও এখনও পঞ্জশিরে পা রাখতে পারল না তালিবান। শুধুমাত্র পার্বত্য এলাকা হওয়ায় সোভিয়েত ইউনিয়নও ক্ষমতা দখলে ব্যর্থ হয়। পঞ্জশির দুর্গে প্রথমবার নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের পতাকা উড়িয়ে তালিবানকে স্পষ্ট বার্তা পাঠানো হল বলে মনে করা হচ্ছে।