ডায়মন্ড হারবার: ‘মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম, হিন্দু মুসলমান।’ সাম্প্রদায়িক বিভেদ ভুলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দেখা গেল ডায়মন্ড হারবারে (Diamond Harbour) । দীর্ঘদিনের বন্ধু তিলক রায়ের আপন বলতে কেউ নেই, সেই বন্ধুর মৃত্যুর খবর পেয়ে ছুটে গেলেন রেজাউল করিম। হিন্দুদের সমস্ত রীতি মেনেই প্রিয় বন্ধুর শেষ কাজ (Last Rites) সারলেন রেজাউল। তিনি তিলকের মুখাগ্নি করলেন, এমনকি কাছাও পরলেন।
স্থানীয় সুত্রে খবর, ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তিলক রায় শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তিনি একাই থাকতেন বাড়িতে। একই এলাকায় থাকার সুবাদে দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। রেজাউল তাঁকে যথাসাধ্য সাহায্যও করতেন। রবিবার রাতে তিলকের মৃত্যু হয়। তিলকের কোনও আত্মীয়স্বজন (Relatives) না থাকায় রেজাউলই শেষকৃত্যের সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। পাড়ার কয়েকজনকেও সঙ্গে নেন রেজাউল। তিনি তাঁদের বলেন, কোনও অসুবিধা থাকলে আসার দরকার নেই। কিন্তু সমস্ত ধর্মীয় বিভেদ ভুলে পাড়ার যুবকরাও রেজাউলকে সাথ দেন।
আরও পড়ুন : Potato | রাজ্যে ১০ হাজার মেট্রিক টন আলু কেনার ব্যবস্থা হয়েছে, জানালেন কৃষিমন্ত্রী
শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার পর রেজাউল বলেন, তিলক আমার বন্ধু এবং প্রতিবেশী। ওঁর কেউ নেই বলে আমি তাঁর শেষ কাজে পাশে থেকেছি। আমি মানুষ হিসেবে মানুষের কাজ করেছি। কে হিন্দু, কে মুসলিম, তা নিয়ে অনর্থক মাথা ঘামাইনি।
স্থানীয় সুত্রের খবর, তিলকের বাবা বিদ্যুৎ দফতরে কাজ করতেন, তাঁর মা স্থানীয় স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। বর্তমানে তাঁর পরিবারে কেউ নেই। গত একমাস ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। রবিবার রাতে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। খবর পাওয়ার পর পাড়ার ছেলেদেরকে নিয়ে হাসপাতালে (Hospital) যান রেজাউল । সেখান থেকে তিলকের মৃতদেহ কালীঘাট শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই হিন্দু রীতি মেনেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।