নয়াদিল্লি: প্রত্যাশামতো শুরুতেই ফেটে পড়ল সংসদ (Parliament)। প্রথম দফার মুলতুবির (Adjourn) পর দুপুর ২টোয় ফের অধিবেশন বসতেই নতুন করে হট্টগোল বাধে। অবশেষে সোমবার দিনের মতো অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়। দিনের শুরুতে সরকার পক্ষ ও বিরোধীদের হই-হট্টগোলে দ্বিতীয় পর্বের বাজেট অধিবেশন দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতুবি করে দেওয়া হয়।
এদিন সভা বসতেই বিজেপি রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) ভারতনিন্দা নিয়ে চেপে ধরে কংগ্রেসকে। অন্যদিকে, আদানি নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি (JPC) গঠনের দাবিতে সরব হয় বিরোধী দলগুলি। ভারতকে ‘অপমান’ করার অভিযোগে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে মুখিয়ে ওঠে সরকার পক্ষ। যা নিয়ে সংসদের দুই কক্ষই উত্তাল হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: Pakistan | Toshakhana | তোষাখানায় কী কী উপহার জমে পড়েছে ২১ বছরে, তথ্য প্রকাশ্যে আনল পাক সরকার
লোকসভায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, রাহুল গান্ধী এই সভার সদস্য। তিনি লন্ডনে গিয়ে ভারতকে অপমান করেছেন। এই কারণে তাঁকে সভার সামনে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলির একটি যৌথ বিবৃতিতে কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভা সদস্য মল্লিকার্জুন খাড়্গে বলেন, মোদিজির সরকারে কোনও আইনের শাসন নেই। গণতন্ত্র নেই। এখানে একনায়কতন্ত্র চলছে।
আজ, সোমবার শুরু হল সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব। বাজেটের উপর আলোচনা ছাড়াও এই অধিবেশনে উত্তাল হয়ে উঠতে পারে বিরোধী দলগুলির বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বক্তব্য দাবি করাকে কেন্দ্র করে। অধিবেশন চলবে আগামী ৬ এপ্রিল পর্যন্ত। এই অধিবেশনে লোকসভায় ৯টি এবং রাজ্যসভায় ২৬ বিল পাশ করানো নিয়ে মাথাব্যথা সরকারের। কিন্তু, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি, সিবিআই ও আয়কর যেভাবে তদন্ত চালাচ্ছে, তা নিয়ে বিরোধীরা মুখর হবে দুই কক্ষেই।
এছাড়া এদিনই লন্ডনের মাটিতে রাহুল গান্ধীর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শাসকদল রণমূর্তি ধরল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। সদ্যসমাপ্ত তিন রাজ্যের বিধানসভা ভোটে বিজেপির জয়ে কংগ্রেস বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে। এদিনই সভা শুরুর আগে কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা তথা দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের ডাকে বিরোধীরা সংসদের রণকৌশল ঠিক করে নেয়। সেই বৈঠকে ১৬টি বিরোধী দল অংশ নিলেও কেসিআরের দল ভারত রাষ্ট্র সমিতি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস উপস্থিত ছিল না।
সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান রবিবারই বিভিন্ন দলনেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। সেখানে সকলকে সভার শিষ্টাচার ও বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি। সকলের কাছে সুষ্ঠুভাবে সভা পরিচালনা করতে দেওয়ারও জন্য শান্তি বজায় রাখার আবেদনও করেন জগদীপ ধনখড়।
তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আদানি, মুদ্রাস্ফীতি বা বাজারদর বৃদ্ধি এবং চীনের আগ্রাসন নিয়ে মুখর হবেই বিরোধীরা। তবে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি যেভাবে আম আদমি পার্টি, আরজেডি, কেসিআর-কন্যার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে, তার আঁচও এসে পড়বে সংসদের দুই কক্ষে।
পর্যবেক্ষক মহলের মতে, এত কিছুর মধ্যেও বিরোধীদের মিলিত ঐক্য খুব একটা সম্ভব হবে না। কারণ, আপ কিংবা বিআরএস অথবা আরজেডি সম্পর্কে কংগ্রেস দূরত্ব বজায় রাখার নীতি নিয়ে চলবে। আম আদমি পার্টির শীর্ষস্তরের নেতা মণীশ সিসোদিয়াকে নিয়ে তাঁর দল বিক্ষোভ দেখালেও অন্য দলগুলির সমর্থন কতটা জুটবে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থেকেই যায়। একই প্রসঙ্গ খাটে আরজেডি প্রসঙ্গেও।