সল্টলেক করুণাময়ীতে প্রাথমিকে টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের ধরনার বিরোধিতায় আদালতের দ্বারস্থ হল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। অভিযোগ, চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের জেরে পর্ষদের দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। কোনও কর্মী দফতরে ঢুকতে পারছেন না। এই আন্দোলনের ফলে কর্মীদের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হচ্ছে বলে আদালতের কাছে পর্ষদের অভিযোগ। বুধবারই তারা শুনানির আর্জি জানায় কলকাতা হাইকোর্টের কাছে। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি, তারা ঢুকতে বেরতে কাউকে আটকাচ্ছেন না, গেট খোলাই আছে। হাসপাতালেও কারও ঢুকতে বেরতে অসুবিধা হচ্ছে না।
বিচারপতি লোপিতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এদিনই শুনানির আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এত দ্রুত শুনানির কী আছে। এতদিন আন্দোলন চলছে, আর একদিন চললে এমন কী অসুবিধা হবে। তিনি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দেন। আগামিকাল বৃহস্পতিবার মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
২০১৪ সালের প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা অনেকদিন ধরেই ধরনা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। কখনও ধর্মতলায়, কখনও করুণাময়ীতে আচার্য ভবনের সামনে তাঁদের বিক্ষোভ চলছে। পুলিশ কখনও তাঁদের মেরে উঠিয়ে দিচ্ছে, আবার কখনও তাড়া করছে। সোমবার রাতভর রাস্তায় শুয়ে চাকরিপ্রার্থীরা বিক্ষোভ দেখান। মঙ্গলবার সকাল থেকে তাঁরা আমরণ অনশন শুরু করেছেন। বুধবারও অনশন চলছে।
আরও পড়ুন: CM Meeting: শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনী, মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার অপেক্ষায় কর্মী-সমর্থকরা
মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেন, চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন অন্যায্য। ওইদিনই তিনি অভিযোগ করেন, আন্দোলনের জন্য কাজে খুব অসুবিধা হচ্ছে। তাঁর আরও অভিযোগ, এই আন্দোলনের পিছনে রাজনৈতিক ইন্ধন রয়েছে। ওই আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মঙ্গলবার মালবাজারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, টেট নিয়ে কী হবে, সেটা আদালতকে জিজ্ঞাসা করুন। আদালতের নির্দেশে সব হচ্ছে।
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে ঘোষণা করেছিলেন, টেট পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সফলদের ধাপে ধাপে নিয়োগ করা হবে। সেই প্রতিশ্রুতি এখন প্রতারণায় পরিণত হয়েছে। তাঁদের দাবি, যতদিন না নিয়োগ হচ্ছে, ততদিন আমরণ অনশন চলবে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তন্নিষ্ঠা দাস নামে এক আন্দোলনকারী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী পুজোর কার্নিভাল নিয়ে ব্যস্ত। তিনি এরপর এখান থেকে মৃতদেহের কার্নিভাল করবেন।