Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeদেশনাগাল্যান্ড গুলিকাণ্ডের পুলিস রিপোর্ট: নিহতদের দেহ লোপাটের চেষ্টা করেছিল সেনা

নাগাল্যান্ড গুলিকাণ্ডের পুলিস রিপোর্ট: নিহতদের দেহ লোপাটের চেষ্টা করেছিল সেনা

Follow Us :

কলকাতা: নাগাল্যান্ডে নিরীহ শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর আগে তাঁদের পরিচয় জানার চেষ্টা করেনি সেনা (nagaland death) । নাগাল্যান্ডের ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিস (ডিজিপি) টি জন লংকুমের ও কমিশনার রবিলাটুয়ো মোর যুগ্ম ভাবে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন (Nagaland Civilian Killings,) । তাতেই অসম রাইফেলসের (Assam rifles) বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে (Nagaland shoutout) ।
শনিবার বিকেলে পিকআপ ভ্যানে করে বাড়িতে ফিরছিলেন ৮ শ্রমিক। মন জেলায় ওই শ্রমিকদের জঙ্গি ভেবে গুলি চালিয়ে দেয় অসম রাইফেলসের জওয়ানরা। ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ৬ শ্রমিকের। আহত বাকি ২ জনকে জওয়ানরাই হাসপাতালে ভর্তি করেন। এই ঘটনার জেরে শনিবার রাত থেকে অগ্নিগর্ভ মন জেলা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিসের দুই শীর্ষ কর্তা দাবি করেন, সেনার স্পেশ্যাল ফোর্স নিহত ৬ নাগরিকের দেহ লোপাট করার চেষ্টা করেছিল। দেহগুলি ভালো করে মুড়ে পিকআপ ট্রাকে তোলা হচ্ছিল। উদ্দেশ্য ছিল, বেস ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া।

আরও পড়ুন: শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপচে পড়া ভিড়, চোখের জলে বিদায় ১৪ সহ-নাগরিককে

রবিবার নাগাল্যান্ড সরকারের কাছে জমা দেওয়া দুই পুলিশকর্তার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘৪ ডিসেম্বর বিকেলে ফিরছিলেন আট খনি শ্রমিক। টিরুর একটি কয়লাখনিতে তাঁরা কাজ করতেন। বিকেল ৪-১০ মিনিটে সুরক্ষা বাহিনীর (২১ প্যারা স্পেশ্যাল ফোর্স, অসম) এলোপাথাড়ি গুলিতে ছ’জন নিহত হন। গুলি চালানোর আগে ওই শ্রমিকদের পরিচয় জানার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করা হয়নি।’
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, হতাহতদের কারও কাছে কোনও অস্ত্র ছিল না। তাঁরা সকলেই কয়লাখনির শ্রমিক। ঘটনাস্থলেই ৬ জন নিহত হন। পিকআপ ভ্যানে থাকা বাকি ২ জনও গুরুতর জখম।
গুলির আওয়াজ শুনেই গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের নজরে পড়ে একটি পিকআপ ট্রাক। তাতে কতগুলো মৃতদেহ ভালো করে প্লাস্টিকে মুড়ে তোলা হচ্ছিল। সকলের নজর এড়িয়ে দেহগুলো বেসক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে গায়েব করাই উদ্দেশ্য ছিল।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এখান থেকেই হিংসার সূত্রপাত। সুরক্ষা বাহিনীকে এ ভাবে দেহ লোপাট করতে দেখে নিজেদের রাগ সংযত করতে পারেননি গ্রামবাসীরা। সেনার তিনটি গাড়িতে তাঁরা আগুন লাগিয়ে দেন।

আরও পড়ুন:নাগাল্যান্ডের ঘটনায় অমিত শাহকে দায়ীকে করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি তৃণমূলের

আশান্ত গ্রামবাসীদের শান্ত করার চেষ্টা না করে, বিক্ষোভকারীদের নিশানা করে ফের এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হয়। তাতে আরও ৭জন গ্রামবাসী নিহত হন। দ্বিতীয় বারও যে গুলি সুরক্ষা বাহিনীই চালিয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীরা তা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ কর্তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবারই ১৩ নিরীহ নাগরিক নিহত হন। ১৪ জন গুরুতর ঘায়েল হন। আরও ৮ জনের আঘাত সামান্য। আহত ২ শ্রমিককে সেনাই যে হাসপাতালে ভর্তি করেছে, রিপোর্টে সে উল্লেখও রয়েছে। ডিব্রুগড় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে তাঁরা ভর্তি রয়েছেন। সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী নাগাল্যান্ড গুলিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯। ১৪ নাগরিকের মৃত্যু আগেই হয়েছিল। হাসপাতালে চিকিত্সাপধীন অবস্থায় আরও ৫ জন মারা গিয়েছেন।
এই রিপোর্ট সামনে আসার পরেই নাগাল্যান্ড পুলিশ ২১ প্যারা স্পেশ্যাল ফোর্সের বিরুদ্ধে সোমবার এফআইআর দায়ের করে। তাতে সরাসরি খুন, খুনের চেষ্টার (আইপিসি-র ৩০২ / ৩০৭ /৩৪) মতো ধারা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: নাগাল্যান্ড গুলিকাণ্ডে আলাদা তদন্ত করবে সেনা বাহিনী, সংসদে বিবৃতি অমিত শাহের

অসম রাইফেলসের অবশ্য সাফাই, তাদের কাছে জঙ্গি ঢুকছে বলে খবর ছিল। তাই ভুলবশত গুলি চালানো হয়েছে। ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশও করা হয়। সোমবার স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও সংসদে এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি সিট গঠনের কথাও জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে ভারতীয় সেনার তরফেও আলাদা করে তদন্ত হবে। কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে সেই আইনে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular