কলকাতা: কামদুনি-কাণ্ডে জোড়া মিছিলে মঙ্গলবার দাবি উঠল, দোষীদের চরম শাস্তি চাই। আওয়াজ উঠল, আন্দোলন চলবে, দরকার হলে সু্পিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে কামদুনি। অভিযোগ উঠল, রাজ্য সরকারের গাফিলতির কারণেই দোষীদের কারও শাস্তির মেয়াদ কমল, কেউ রেহাই পেয়ে গেল। কামদুনি এবং কলকাতার দুই মিছিল থেকে আরও স্লোগান উঠল, রাজ্য সরকারকে আমরা আর বিশ্বাস করি না।
এদিন নাগিরক সমাজ মহামিছিলের ডাক দিয়েছিল কলকাতায়। কামদুনির নির্যাতিতার ভাইয়ের আবেদন ছিল, সচেতন নাগরিকরা রাজনৈতিক পতাকা দূরে সরিয়ে মিছিলে শামিল হোন। ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউস থেকে মিছিল যায় মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত। খুব কম সময়ের নোটিসে ডাকা ওই মিছিলে ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। বাম, ডান নির্বিশেষে সব দলেরই অনেক পরিচিত মুখকে দেখা গিয়েছে এদিন। রাজ্য সিপিএমের প্রথম সারির মহিলা নেত্রী কণীনিকা ঘোষ, রেখা গোস্বামী, অঞ্জু করের পাশাপাশি ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেত্রী কৃষ্ণা দেবনাথ, কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। দেখা গিয়েছে সমাজকর্মী শাশ্বতী ঘোষ, শিল্পী সমীর আইচ, কামদুনি আন্দোলনের পরিচিত মুখ মৌসুমি কয়াল, টুম্পা কয়াল, মাস্টারমশাই প্রদীপ মুখোপাধ্যায়রাও। মিছিলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন টুম্পা। তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নির্যাতিতার দুই বাল্যবন্ধু টুম্পা এবং মৌসুমি কান্নায় ভেঙে পড়েন। মিছিলে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা বা রাজনৈতিক স্লোগান ছিল না। মিছিলকারীদের হাতে ছিল দোষীদের চরম শাস্তি চেয়ে লেখা প্ল্যাকার্ড।
এদিকে বিজেপির মহিলা মোর্চা মিছিল করে কামদুনিতে। তার আগেই সকালে গোটা এলাকায় তৃণমূলের পতাকা দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়। বিজেপির রাজ্য সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ আরও অনেকে। শুভেন্দু বলেন, হাইকোর্টের রায়ে যারা ছাড়া পেয়ে গেল, কামদুনিতে সেই ধর্ষকদের বাড়ির সামনে রাজ্য সরকার পুলিশ মোতায়েন করেছে। আবার তারাই হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লোকদেখানো আপিল করেছে সুপ্রিম কোর্টে। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত রুখতে সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিখ্যাত আইনজীবী নিয়োগ করতে পারে। কিন্তু কামদুনির অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারে না এই সরকার। তিনি পরিবারকে সমস্ত রকম আইনি সহায়তার আশ্বাস দেন।