পাথরপ্রতিমা: সুন্দরবনের (Sunderban) পাথরপ্রতিমা দ্বীপের একটি অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুল (Primary School)। তার পরিবেশ দেখলে চমকে উঠতে হবে। স্কুলের নাম ছোট বনশ্যামনগর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। তার একটিমাত্র ঘর, ২০ ফুট লম্বা ১২ ফুট চওড়া। ওই একটা ঘরের মধ্যেই বসেন তিনজন শিক্ষক, চলে তাঁদের অফিসের কাজ। থাকে মিড ডে মিলের (Mid-day Meal) মালপত্র, আছে একটি বইপত্র রাখার একটি আলমারিও। ওই ছোট্ট ঘরটির লাগোয়া বারান্দা, যেখানে প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ৯০ জন ছাত্রছাত্রী একসঙ্গে বসে। অভিভাবকরা একে ইস্কুল না বলে চিড়িয়াখানা বলে বিদ্রুপ করতে ছাড়েন না।
একজন শিক্ষক (Teacher) যখন কোনও ক্লাস নেন অন্য ছাত্ররা তখন আপন মনে ঘুমায় অথবা খেলা করে। বাকি দু’জন শিক্ষকের দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া উপায় নেই। শীতকালে হাড়কাঁপানো উত্তরের বাতাস যখন বয়, বসে থাকতে পারে না ছাত্রছাত্রীরা। আবার প্রচণ্ড গরম সহ্য করতে না পেরে বাড়ি ফিরে যায় পড়ুয়ারা। আর বর্ষায় বারান্দায় জলের ছিটে আসে। ছাত্রছাত্রীরা পালিয়ে যায়। ফলে পড়াশোনার খতিয়ান দেখতে গেলে ছাত্র-ছাত্রীদের ভাঁড়ারে শুধু শূন্য ছাড়া আর কিছু নেই।
আরও পড়ুন: জল যন্ত্রণা অব্যাহত কালিকাপুরে, ফেরিঘাটে পৌঁছতে পার করতে হয় এক কোমর জল
কেন এমন দশা জানতে চাইলে স্কুলের এক শিক্ষক জানিয়েছেন, নোনাধরা ইটের গাঁথুনি দেয়ালের উপর কোনক্রমে টালি দেওয়া একটি লম্বা স্কুল ছিল। যে কোন মুহূর্তে ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, এই আশঙ্কায় ভেঙে দেওয়া হয় ঘরটি। পরে সরকারিভাবে এই ছোট্ট একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। এটা কি আদৌ কোনও স্কুল তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
এ নিয়ে প্রশাসনের কোন হেলদোল নেই। হেলদোল নেই স্থানীয় কোনও নেতার। চিন্তার শেষ নেই পড়ুয়াদের অভিভাবক ও অভিভাবিকাদের। সকাল থেকে স্কুল ছুটি পর্যন্ত বাইরে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে সন্তানদের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। তাঁরা জানিয়েছেন, এইভাবে যদি আরও কিছুদিন চলে তাহলে এ রাজ্যে উঠে যাওয়া স্কুলের তালিকায় স্থান পাবে বনশ্যামনগর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়।
দেখুন অন্য খবর: