কলকাতা: রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের জন্য তৈরি হওয়া সার্চ কমিটিতে এই প্রথম রাখা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর মনোনীত প্রতিনিধিকে। সেই সঙ্গে রয়েছেন আরও চারজন প্রতিনিধি। এবার থেকে তিন সদস্যের বদলে পাঁচ সদস্য থাকছেন সার্চ কমিটিতে। থাকছেন আচার্য তথা রাজ্যপালের মনোনীত প্রতিনিধি, রাজ্য সরকারের মনোনীত প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের মনোনীত প্রতিনিধি ও রাজ্য উচ্চ শিক্ষা সংসদের মনোনীত প্রতিনিধি। বাদ দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মনোনীত প্রতিনিধিকে। ওই মর্মে তৈরি হওয়া অর্ডিন্যান্সে ইতিমধ্যেই সই করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপা। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি কৃষ্ণকলি বসু, জানিয়েছেন অর্ডিন্যান্সে যখন রাজ্যপাল সই করেছেন তখন সেই সিদ্ধান্তকে সকলকেই সম্মান জানানো উচিত। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসেবে রাজ্যপালকে নন, মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁরা চান বলে এদিন ফের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
২০১১ সালে সংশোধিত বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সার্চ কমিটিতে তিনজন সদস্য ছিলেন। এরা হলেন রাজ্যপালের মনোনীত প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মনোনীত প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্ট বা কাউন্সিলের তরফে মনোনীত প্রতিনিধি। তারাই মূলত উপাচার্য পদের জন্য তিনজন প্রার্থীর নাম মনোনীত করতেন। কিন্তু এবার থেকে সেই কমিটিতে থাকছেন পাঁচজন। কিন্তু সার্চ কমিটি গঠনের নয়া অর্ডিন্যান্স জারি নিয়ে প্রতিবাদে সরব যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন জুটা। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিকে সার্চ কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য সরকারের নিজস্ব কায়েমি স্বার্থ চরিতার্থ করা ও বিরোধী কণ্ঠকে রোধ করা।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee | হতাশ হবেন না, অবসাদে ভুগবেন না, চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
অতীতে রাজ্যের সঙ্গে একাধিক বিষয় নিয়ে রাজভবনের সংঘাত চরমে উঠেছিল। সেই সংঘাত এখনও কম-বেশি চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য রাজ্যপাল নন, মুখ্যমন্ত্রীকে করার কথা বহু আগেই জানিয়েছিলেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যদিও বিধানসভায় বিল পাস হওয়ার পরে সেই সংক্রান্ত ফাইল রাজভবনে পাঠালে তাতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সই করেননি বলেও অভিযোগ করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। এবার সার্চ কমিটি সংক্রান্ত নয়া অর্ডিন্যান্সে রাজ্যপালের পাশাপাশি এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী মনোনীত প্রতিনিধিকে এনে আসলে রাজভবনের সম প্রশাসন চালানোর ক্ষমতা খর্ব করার দিকেই একধাপ এগোল শিক্ষা দফতর তথা রাজ্য সরকার। এমনটাই মনে করছে শিক্ষাবিদ থেকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
নয়া এই সার্চ কমিটি নিয়ে টুইট করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি লিখেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই সদস্য সংখ্যা তিন থেকে বেড়ে চার করা হয়েছে। তবে কোনও কমিটিতে চার জন থাকা বাঞ্ছনীয় নয়। সেক্ষেত্রে মতভেদের ফল ২-২ হলে সমস্যা হত। তাই মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের প্রতিনিধিকে এই কমিটিতে রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফের প্রতিনিধিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে অনেক সময়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপারিশ আসে না বা নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্ট্যাটুট তৈরির জন্য এখনও কোর্ট তৈরি করা যায়নি।’
#WBHED pic.twitter.com/mfqopt1Dsf
— Bratya Basu (@basu_bratya) May 15, 2023