কলকাতা: কুন্তল ঘোষের (Kuntal Ghosh) চিঠি-মামলাতেও সোমবার আদালতের তোপের মুখে পড়ল সিবিআই (CBI)। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অমৃতা সিংহ (Justice Amrita Singh) এদিন সিবিআই আইনজীবীর কাছে জানতে চান, ২৮ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার নিষ্পত্তি করলেও সিবিআই কেন পদক্ষেপ করেনি। সিবিআইয়ের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য জানান, এজলাস বদল সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছিল। বিচারপতি বলেন, এজলাস বদলের সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের কী সম্পর্ক।
এদিন সিবিআই আইনজীবী বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Avishek Banerjee) যে মামলা করেছেন, তার কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। এখন দেখা যাচ্ছে, প্রত্যেক অভিযুক্ত তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। এই সব ভিত্তিহীন অভিযোগকে গুরুত্ব দিলে প্যান্ডোরার বাক্স খুলে যাবে। সুপ্রিম কোর্ট মামলার পথ মসৃণ করতেই তা স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে। সিবিআই আইনজীবী এদিন আদালতে ২৯ মার্চ শহীদ মিনার ময়দানের জনসভায় অভিষেকের বক্তব্য এবং কুন্তল ঘোষের চিঠি পড়ে শোনান।
সিবিআইয়ের আইনজীবী আরও বলেন, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর সিবিআই অভিষেককে তলব করেছিল। আবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর সেই তলবি নোটিস যে কার্যকর হবে না, সিবিআই তাও জানিয়ে দেয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে তা গোপন করা হয়। একজন জনপ্রতিনিধি এভাবে আদালতকে বিভ্রান্ত করতে পারেন না। তা ছাড়া মামলাকারী একজন বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তা তিনি পারেন না। আইনজীবী আরও বলেন, অভিষেক এখনও অভিযুক্ত নন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ না করে তিনি সম্ভাব্য অভিযুক্ত, তাও আমরা বলতে পারব না।
অভিষেকের আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, এই মামলার যথেষ্ট গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এজলাস বদল হয়েছে। ফলে নির্দেশ প্রত্যাহারের আবেদন এই এজলাসে না করলে কোথায় করব। আমাকে যা বলার, এখানেই বলতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি মঙ্গলবার। আগামিকাল কুন্তল ঘোষের মামলা নিয়ে সওয়াল করবে ইডি।
গত ১৩ এপ্রিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সিবিআই কিংবা ইডি দরকার পড়লে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। তাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান অভিষেক। সুপ্রিম কোর্ট দুটি মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তার মধ্যে একটি হল কুন্তলের চিঠির সঙ্গে জড়িত অভিষেকের প্রসঙ্গ। প্রধান বিচারপতি সেই মামলা শোনার জন্য বিচারপতি অমৃতা সিংহকে নিয়োগ করেন। তাঁর এজলাসেই এখন মামলা চলছে। গত সপ্তাহেও বিচারপতি অভিষেকের আইনজীবীকে বলেন, আপনার মক্কেল তদন্তে সহযোগিতা করছেন না কেন। আদালত কোনও রক্ষাকবচ দেবে না। তবে আদালত সাত দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। দরকার হলে আসতে পারেন আদালতে।