skip to content
Sunday, June 16, 2024

skip to content
HomeফিচারPadma Awards Controversy: পদ্মসম্মান পুরস্কারের রাজনীতি যেন হীরকরাজার দেশ

Padma Awards Controversy: পদ্মসম্মান পুরস্কারের রাজনীতি যেন হীরকরাজার দেশ

Follow Us :

পোখরান পরমাণু বোমা পরীক্ষার অন্যতম নায়ক অটলবিহারী বাজপেয়ী। ১৯৯৮ সালের মে মাসে পরীক্ষামূলক ভাবে রাজস্থানের মরু মাটির তলায় পরপর বিস্ফোরণ ঘটালেন। সঙ্গে ছিলেন ভারতের পরমাণু কারিগর ডক্টর এপিজে আবদুল কালাম। রাতারাতি আন্তর্জাতিক শিরোনামে উঠে এলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজেপেয়ী।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ভারতের উপর একাধিক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করল। পালটা বোমা ফাটাল পাকিস্তান। জাতীয়তাবাদের জিগিরে ধামাচাপা পড়ে গেল নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামবৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কলকাতায় তখন পিঁয়াজের দাম সোনার অলঙ্কারের মতো মূল্যবান। পার্ক স্ট্রিটের লোভনীয় কাঠি কাবাব রোলে পিঁয়াজের বদলে সেঁধিয়ে দিয়েছে সাদা মুলোর কুচি।

কিছুদিন পর কলকাতায় এলেন প্রধানমন্ত্রী। অটলবিহারী বাজপেয়ীর সম্মানে এক চা-চক্রের আয়োজন করা হল। কলকাতা শহরের বিশিষ্ট নাগরিকরা নিমন্ত্রণ পেলেন। অনেকেই গেলেন যাঁরা তথাকথিত বামপন্থী বলে পরিচিত। তাঁদের নাম এই এতদিন পর টেনে এনে বিতর্ক বাড়িয়ে লাভ নেই। প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রে যোগ দিলেন না একজন বাঙালি সাহিত্যিক। পরমাণু বোমা ফাটিয়ে উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে ওই টুকুই ছিল তাঁর প্রতিবাদ। বাঙালি ওই লেখকের নাম সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেছিলেন দার্শনিক জ্যঁ পল সার্ত্রে। Being and nothingness-এর তাত্ত্বিক দর্শন লিখে যিনি চিন্তাভাবনার জগতে এক বিপুল আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলেন। শুধু নোবেল কেন ফরাসি দেশের সেরা সম্মান লিজিয়ঁ অফ অনার-ও প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সার্ত্রে। কেন? একজন লেখকের কাছে নোবেল সম্মান তো সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি৷ সার্ত্রে বলতেন, পুরস্কার তাঁর লেখার মেধাকে বেঁধে রেখে দেবে। লেখার ভিতরের যে দর্শন তাকে নিজের যাপনেও চর্চার কথা বলেছেন জ্যঁ পল সার্ত্রে। আর তাই মর্ত্যের সেরা সম্মান হেলায় প্রত্যাখ্যান করেছেন।

লি ফকের যেমন ‘ফ্যানটম’, বাংলায় যে চরিত্র ‘বেতাল’ বা ‘অরণ্যদেব’ নামে পরিচিত। আর্জের যেমন ‘টিনটিন’। অ্যালেক্স রেমন্ডের ‘ফ্ল্যাশ গর্ডন’। বাংলার নারায়ণ দেবনাথের সে রকম ‘বাঁটুল দ্য গ্রেট’ বা ‘নন্টে ফন্টে’। হাওড়ার বাড়ি ছেড়ে তিনি মৃত্যুশয্যায় শুয়ে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে। এগারো মাস পর কেন্দ্রের পদ্মসম্মান এসে পৌঁছল বিছানায়। ২০২১ সালে পদ্মশ্রী দেওয়া হয় নারায়ণ দেবনাথকে। ৯৮ বছরের বৃদ্ধ শিল্পী অসুস্থতার কারণে দিল্লি গিয়ে সেই সম্মান নিতে পারেননি। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলও পদ্মস্মারক এসে পৌঁছয়নি। শেষপর্যন্ত এল, তাও সেই মৃত্যুর কয়েক দিন আগে। ফরাসি দেশে জন্মালে নারায়ণ দেবনাথের জন্য হয়ত আলাদা সংগ্রহশালা হত। আমাদের শৈশবের কল্পনা তৈরির জাদুকরের হয়ত আমাদের দেশ-শাসকের কাছে এ রকম সম্মানই প্রাপ্য ছিল।

সম্রাট আকবরের সভায় যেমন টোডরমল ছিলেন, তানসেন ছিলেন, সে রকমই একজন ছিলেন তাঁর নাম বীরবল। আকবরের ভুল ত্রুটির চাঁচাছোলা সমালোচক ছিলেন তিনি। নিজের প্রখর বুদ্ধি আর রসবোধের মাধ্যমে রাজারনীতিকে সাধারণ মানুষের কল্যাণে সোজা পথে নিয়ে আসতেন। আজকের সভাকবি এবং নবরত্নেরা প্রত্যেকেই যেন হীরকরাজার আসন আলো করে বসে আছেন। ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ-তে হ্যাঁ লাগাতে পারলেই পুরস্কার, সম্মান। আর না হলে মৃত্যুশয্যার পাশে যমদূতের মতো প্রয়োজনহীন রাজার বদান্যতা। সূর্যাস্তে পৌঁছন যে কোনও মানুষের কাছে যা অপমানজনক।

RELATED ARTICLES

Most Popular