কলকাতা: কোভিড পরিস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার নামে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের মাপকাঠিতে গোটা বিশ্বের মধ্যে সব থেকে শীর্ষস্থানে আছে ভারত। আমেরিকার পিউ রিসার্চ সেন্টার নামে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমীক্ষক সংস্থার গবেষণায় উঠে এল এমনই তথ্য। ওই গবেষণায় জানা গিয়েছে অতিমারীর সময়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্কের আবহ তৈরি করতে প্রথামত সামাজিক মাধ্যমকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
#CoronaJihad নামে সামাজিক মাধ্যমে একটি হ্যান্ডেল তৈরি করা হয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে প্রচারের জন্য। সমাজে ধর্মভিত্তিক হিংসার সূচক অনুযায়ী মোট ১৯৮টি দেশকে এই তালিকাভুক্ত করা হয়। তার মধ্যে ৭.২ সূচক-কে ন্যূনতম ভিত্তি ধরে মোট ১১টি দেশকে এই মাপকাঠিতে সব থেকে বেশি হিংসাপ্রবন হিসাবে চিহ্নিত করে ওই সমীক্ষক সংস্থা। যার শীর্ষে রয়েছে ভারত।
এরপর ক্রমানুসারে ওই তালিকায় জায়গায় পেয়েছে নাইজেরিয়া, আফগানিস্থান, ইজরায়েল, মালি সোমালিয়া আর পাকিস্তান। ওই সমীক্ষা অনুযায়ী সিএএ বিরোধী আন্দোলনের পরবর্তী সময়েই এই ধরণের অত্যাচারের ঘটনা বাড়তে থাকে ভারতে। একইসঙ্গে ওই সমীক্ষায় জানানো হয়েছে কোভিড পরিস্থিতির একেবারে শুরুতে দিল্লিতে তবলিঘি জমাত-এর সভার সময়ে নাকি করোনার প্রকোপ বাড়তে শুরু করে বলে একটি প্রচার শুরু হয়।
আর ওই প্রচার থেকে ছড়িয়ে পড়ে মুসলিম বিরোধী বিদ্বেষ। অতিমারির সময়ে এইভাবে নির্দিষ্ট করে কোনও ধর্মীয় গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক প্রচার বা সরাসরি শারীরিক আক্রমণের ঘটনা নানা ভাবে ছড়িয়ে পড়তে থাকে আরত, আর্জেন্টিনা, ইতালি আর আমেরিকায়। সমীক্ষার তথ্য বলছে এর মধ্যে শুধু করোনা ছড়িয়ে দেওয়ার আতঙ্ককে হাতিয়ার করে অনেক ক্ষেত্রেই সংখ্যালঘুদের উপর নির্মম অত্যাচার চালানো হয়েছে ভারতে।
সমীক্ষার শেষে জানানো হয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সমস্ত রকম ফৌজদারি তথ্য-পরিসংখ্যান যোগাড় করার পাশাপাশি রীতিমত পুলিশি কেস ডায়েরি বা অন্যান্য সূত্র থেকে পিউ রিসার্চ সেন্টার সমীক্ষার ওই সব উপাদান পেয়েছেন। দেশের সংখ্যালঘু অংশ বা বিরোধী শিবিরের একটা বড় অংশের তরফে যে অভিযোগ বারবার তোলা হয়েছিল তা এবার মান্যতা পেল আন্তর্জাতিক স্তরের খ্যাতনামা সমীক্ষক সংস্থার তথ্যে।