skip to content
Tuesday, June 25, 2024

skip to content
HomeCurrent Newsচতুর্থ স্তম্ভ:  মিশন ২০২৪

চতুর্থ স্তম্ভ:  মিশন ২০২৪

Follow Us :

প্রিয়জনদের মৃত্যু মিছিলে হাঁটার আর কোনও ইচ্ছে আমার নেই, পরিচিত জনেদের শোকসভায় হাজির থাকার কোনও তাগিদ, আর আমি বোধ করছি না, কোনও শোকগাঁথা লেখার জন্য কলম সায় দিচ্ছে না আর, চারিদিকে এত মৃত্যু, এত বিষণ্ণতা গ্রাস করছে আমাদের, যাঁরা মরে গেলো, তাঁরা কেন মরল? যারা বেঁচে আছি, তাঁরা কেনই বা বেঁচে আছি গোছের এক বিষাদ, সর্বাঙ্গে জড়িয়ে থাকছে, জড়িয়ে থাকছে সারাদিন। শৌনক দা থেকে অঞ্জন, শীর্ষ, মাত্র গতকাল শর্মিষ্ঠা, ক’দিন আগেও যে রাজপথে হেঁটেছে, নো ভোট টু বিজেপি লেখা ব্যানারের এক্কেবারে সামনে থেকেছে, সে চলে গেলো। অসুস্থ তো ছিলই, হাসপাতাল থেকে বেরিয়েই ১০ মার্চের মিছিলে গিয়েছিল, সেও একদিন কোভিড আক্রান্ত হল, ক’দিন পর সেরেও উঠল, কিন্তু কোভিড তাঁকে ছাড়ল না, সে ওই ক’দিনেই তাঁর অঙ্গ প্রত্যঙ্গে থাবা বসিয়েছে, আজ তাঁর দেহদান হল, তাঁর মস্তিষ্কের প্রতিটা নিউরোনে বিজেপির বিরোধিতা, আরএসএস – ফ্যাসিবাদের বিরোধিতা লেখা আছে, ডিসেকশন টেবিলে সেটাই আরও পরিস্কার বোঝা যাবে। এ এক কালবেলায় হাজির আমরা, প্রত্যেকের চেনা পরিচিত, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধবী, সন্তান মারা যাচ্ছে। প্রতিদিন মারা যাচ্ছে, এক শোকগাথা শেষ হবার আগে অন্যটা আসছে, এ তো সমুদ্রের ঢেউ নয়, যে অন্যটা ভেঙে যাবে, নতুনটা আসবে, পুরনোটাও থেকে যাচ্ছে, নতুনটা এসে জমা হচ্ছে, সেই মৃত্যু মিছিল আমাদের ক্লান্ত করছে। আর সমান্তরালভাবে সেই মৃত্যু, করোনা, সংক্রমণ, ভ্যাক্সিন নিয়ে তামাশা চলছে, ভয়ঙ্কর ঠাট্টা, অত্যন্ত ক্রূর হিংস্র সেই তামাশা চলছে চারদিকে, আজ সেই তামাশার ছবি নিয়ে কিছু কথা।

প্রথম ওয়েভ চলে গেছে, দ্বিতীয় ওয়েভ আসার আগেই সবার জানা হয়ে গেছে যে ভ্যাক্সিন ছাড়া আর কোনও উপায় নেই, প্রধানমন্ত্রী, দেশসেভক, চায় ওলা কাম চওকিদার ঘটা করে টিকা উৎসবের ঘোষণা করলেন, জাতীয় ভ্যাক্সিন পলিসি ঘোষণার আগেই নানান বজ্জাতি হল, তিন রকমের টিকার দাম হল, সেসব আলোচনা করেছি। আর এত কিছু করার পর, দেশের ১৩৫ কোটি জনসংখ্যার মাত্র ৩.৫% মানুষ দুটো করে টিকা পেয়েছেন। মুফত মে টিকা মিলেগা বলে তিনি ভাষণ দেওয়ার পর জানা গেলো, ভ্যাক্সিনই নেই, ভ্যাক্সিন দেওয়া হবে কী করে? ওদিকে এতদিন পর তিনি সংবিধানের দায়রা নিয়ে কথা বলছেন, এতদিন পর হঠাৎ আবিস্কার করেছেন আমাদের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে, যেখানে স্বাস্থ্য রাজ্যের তালিকাভুক্ত বিষয়। তো সেই কথা বলে, গোটা করোনা পরিস্থিতিকে ঘুলিয়ে ঘেঁটে এখন তিনি পতলি গলি দিয়ে কেটে পড়ার প্ল্যান করছেন, যদিও আমরা বড় রাস্তা দিয়েই তেনাকে ফেরত পাঠানোর দাবি জানাচ্ছি, তিনি হঠাৎ করে সম্বিত ফিরে পাচ্ছেন, জি ৭ এর ভার্চুয়াল বৈঠকে ভাষণ দিয়ে গিয়ে বললেন, অথরেটেরিয়ানিজম মানে কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে, মানে স্বৈরাচারী প্রবণতার বিরুদ্ধে নাকি লড়তে হবে, সবটাই আমি জানি, আমার নির্দেশেই সব কিছু চলবে, এমন ধ্যান ধারণার বিরুদ্ধে লড়তে হবে, কে বলছেন? নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদী। ভাবা যায়? এদিকে স্বৈরাচার কোথায় গিয়ে ঠেকেছে? সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন না, প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ওনার ধাতে নেই, প্রায়োরিটি বোধ নেই, যে সময়ে করোনা ছড়াচ্ছে, সেই সময়ে উনি নিজেই করোনার সুপার স্প্রেডার হিসেবে কাজ করছেন, মাঠভর্তি মানুষ দেখে উল্লসিত হচ্ছেন, তাঁর মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদের পাঠিয়ে দিচ্ছেন বাংলায় ঘাঁটি গেঁড়ে বসে থাকার জন্য, করোনা নয়, ওনার দরকার বাংলার মসনদ, এসব আমরা জানি।

YouTube player

এদিকে তার চেয়েও নোংরা খেলা চলছে, সবার অলক্ষ্যে চলছে, আমরা এতদিন পরে টের পাচ্ছি, কিছু কাগজ, বিদেশী ম্যাগাজিনে লেখা হচ্ছিল, আমরা গুরুত্ব দিইনি, মনে হয়েছিল, বিরাট জনসংখ্যার ভিত্তিতে তাঁরা অনুমান করে, স্রেফ অনুমানের ভিত্তিতে খবর করছেন। আজ পর্যন্ত ভারতবর্ষে, কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত মানুষের সংখ্যা কত? আজ সকাল পর্যন্ত সরকারি তথ্য বলছে ৩ লক্ষ ৭৪ হাজার ৩০৫ জন, এটা সরকারি তথ্য, সাধারণ ভাবে ভাবা হচ্ছিলে ৫% থেকে ১০% মৃত্যু হয়তো জানানো হচ্ছে না, হয়তো ডাক্তারকেই দেখানো হয়নি, হয়তো টেস্টই হয়নি। তাই আমাদের মনে হয়েছিল, সংখ্যাটা আরও খানিকটা বাড়তে পারে, বেশ কিছু দিন আগে দ্য ইকোনমিস্ট লিখেছিল, ভারতবর্ষে সম্ভবত ১০ লক্ষের বেশি মানুষ করোনাতে মারা গিয়েছেন, তাঁদের এই তথ্যের ভিত্তি ছিল করোনা আক্রান্ত এবং তার মৃত্যু হার, তার ভিত্তিতে তাঁরা এই খবর প্রকাশ করেছিলেন, সরকার এর বিরোধিতাও করেনি, সমর্থনও করেনি, ইগনোর করেছিল, আমরাও সেরকম গুরুত্ব দিইনি। এরপর নিউ ইয়র্ক টাইমস এই সংক্রান্ত খবরে জানালো, খুব কনজারভেটিভ রিপোর্টে ৬ লক্ষ মানুষ মারা গেছেন, তবে তাঁদের মনে হয় এই সংখ্যা ১৬ লক্ষের কাছাকাছি, যদি অবস্থা আরও খারাপ হয় তাহলে ৪২ লক্ষ মানুষের মারা যাবার সম্ভাবনা আছে, খবর ছাপার পর আমরা গুরুত্ব দিইনি কারণ সরকারি তথ্য তিন লক্ষ বলছে, আর এক বিদেশের পত্রিকা ৪২ লক্ষ বলছে, এ আবার হয় নাকি? কিছু দিন আগে দৈনিক ভাস্কর এ এক সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছিল, সি ভোটার এই সমীক্ষা করেছিল, তাঁরা জানিয়েছিল, করোনায় মৃত্যু সম্ভবত ২৫ লক্ষ ছুঁয়েছে। এরপর থেকে বিভিন্ন খোঁজ খবর শুরু হয়, এবং প্রাথমিক তথ্য যা আসছে, তা সত্যিই আমাদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে, এই যে মৃত্যু মিছিল আমাদের চারপাশে, রোজ স্বজন হারানোর ব্যাথা, এই সংখ্যাকে সমর্থন করছে। কিছুদিন আগে আমরা জানিয়েছিলাম যে গুজরাটে এক স্থানীয় পত্রিকা, গতবছর এই সময়ে মোট স্বাভাবিক মৃত্যু, যার জন্য সরকারি দফতর ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করেছে, আর এ বছরের মোট মৃত্যু, যার ডেথ সার্টিফিকেট সেই সরকারি দফতরই জারি করেছে, তা এনে হাজির করে, দেখা যায় গত বছরের থেকে এ বছরে গুজরাটে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৫৬ হাজার বেশি, যেখানে করোনাতে মৃত্যু দেখানো হয়েছিল মাত্র ৪২১৮, তাহলে স্বাভাবিক মৃত্যু সংখ্যা কেন বাড়লো? তদন্ত শুরু হয়, পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে যে, এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি করোনা মৃত্যুর জন্যই হয়েছে। তার মানে যে মৃত্যু সংখ্যা দেখানো হয়েছে, তার থেকে আসল মৃত্যু সংখ্যা প্রায় ১৪ গুণ বেশি, এটা কেবল গুজরাটের তথ্য ছিল।

এবার সামনে আসলো মধ্যপ্রদেশের তথ্য, দৈনিক ভাস্কর এই তথ্য প্রকাশ করলো, এখনও কোনও ন্যাশনাল চ্যানেল, কোনও মিডিয়া এই খবর দেখানোর প্রয়োজনীয়তা মনেও করেনি, তাদের তথ্য বলছে মধ্যপ্রদেশ সরকার সরকারি ভাবে করোনায় মৃতদের সংখ্যা জানিয়েছে, তাদের হিসেবে এ পর্যন্ত ২৪৫১ জন মারা গেছেন, অথচ ঠিক সেই সময়ে এই মাসে, মানে মে মাসে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে, ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৮৩৮ জনের জন্য, গতবছরে এই মে মাসে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু হয়েছে ৩৪ হাজার ৩২০ জনের, অর্থাৎ সাধারণ ভাবে ৩৪ হাজারের বদলে মারা গেছেন ১ লক্ষ ৬৪ হাজার জন। ১ লক্ষ ৩০ হাজার বৃদ্ধি, এই বৃদ্ধি কেন? আর কোন অতিমারি আমাদের দেশে চলছে? এই পত্রিকাতেই ছাপানো হিসেব বলছে, জানুয়ারি ২০২০ তে মৃত মানুষের সংখ্যা ৪১২৮১, ২০২১ এ সেই সংখ্যা ৪৪১৩৩। ২০২০ ফেব্রুয়ারিতে মারা গেছিলেন ৩৪৬৪৫, ২০২১ এ সেই সংখ্যা ৩৬৫৩৫, মার্চ ২০২০তে ২৯৭৪৭, ২০২১ এ ৩৪৫৬৬। এপ্রিল, এপ্রিল ২০২১ মানে, আমাদের রাজ্যে মোদী–শাহ ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করছেন, সেই সময়ে ডাবল ইঞ্জিন রাজ্য মধ্যপ্রদেশে মারা গেলেন ৬৮৫৩৫, এই সময়েই ২০২০ তে ওই রাজ্যে মারা গিয়েছিলেন ২৪১৯৮ জন। এবার আসুন মে মাসের তথ্যে, ২০২০ মে মাসে মধ্যপ্রদেশে ৩৪৩২০ জনের ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছিল, ২০২১ এ? মে মাসে মারা গেলেন ১৬৪৮৩৮ জন। মানে বৃদ্ধি ১ লক্ষ ৩০ হাজারের বেশি৷

এদিকে মধ্যপ্রদেশ সরকার বলছেন করোনায় মারা গেছেন মাত্র ২৪৫১ জন, ডাবল ইঞ্জিনের সরকার মিথ্যে বলছেন, এটা পরিস্কার। তার মানে আসলে করোনায় মৃত্যু ৫২ গুণ বেশি, এর পরেও আছে সেই মৃত্যু সংখ্যা, যা সরকারের নজরেই আসে না, গ্রামেই পুড়িয়ে ফেলা হয় বা কবর দেওয়া হয়। সারা দেশের হিসেব, সরকার বলছেন মারা গেছে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার, এই হিসেবকে মাথায় রেখে সাধারণ মৃত্যু আর করোনার জন্য যে বৃদ্ধি তার হিসেব প্রায় ৫ গুণ, ৪.৮ গুণ। এবং এই হিসেব কেবল মে মাসের, আমাদের দেশে প্রতি আসে গড়ে সাধারণ ভাবে ৭ লক্ষ মানুষ মারা যান, যদি আমরা এই বৃদ্ধিকে সারা দেশের ওপর প্রয়োগ করি, তাহলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩৫ লক্ষে, ৭ লক্ষ সাধারণ মৃত্যু বাদ দিলে, করোনা জনিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াবে কম বেশি ২৮ লক্ষ, বাদই দিলাম সেই সংখ্যা যা কোনও দিনই সরকারি হিসেবের মধ্যেই আসে না, তার মানে দেশে কম বেশি ২৮/২৯ লক্ষ মানুষ মারা গেছে, রাষ্ট্রের দেওয়া, সরকারের দেওয়া তথ্য বলছে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার, মৃত্যু সংখ্যা নিয়েও তামাশা চলছে, মৃত্যুও নরেন্দ্র মোদীর কাছে এক প্রকান্ড তামাশা, তিনি মৃত্যু নিয়েও মিথ্যে বলেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Video thumbnail
Mamata Banerjee | হাওড়ার বারোটা বাজালো কে? বিজেপি প্রার্থীর নাম বললেন মমতা
01:40:01
Video thumbnail
Mamata Banerjee | টেন্ডার দিতে পারবে না, পুরসভাগুলি ক্ষমতা কেড়ে নিলেন মমতা
03:17:06
Video thumbnail
Mamata Banerjee | বিরোধীদের অভিযোগ মমতার মুখেই, এবার আর কী বলবে বিজেপি?
03:04:40
Video thumbnail
Mamata Banerjee | নর্দমা কি আমি পরিস্কার করব? বিস্ফোরক মমতা শুনুন কী বললেন
01:32:36
Video thumbnail
Mamata Banerjee | লোভ বাড়ছে নেতাদের, জমি দখল করছে বহিরাগতরা, বিস্ফোরক মমতা
01:36:31
Video thumbnail
Mamata Banerjee | পুর-বৈঠকে বড় খবর!, কী বললেন মমতা?
01:50:11
Video thumbnail
Sayani Ghosh | প্রথমবার সাংসদ দিল্লি গিয়ে কী করলেন সায়নী?
03:06:26
Video thumbnail
Shantanu Thakur | বনগাঁর ঠাকুর বাড়ি থেকে সংসদে শপথ, কী বললেন শান্তনু ?
01:20:50
Video thumbnail
Rachana Banerjee | সংসদে পা রচনার, সেলফি তুললেন কি?
03:03:00
Video thumbnail
June Malia | বিধায়কের পর সাংসদ জুন মালিয়া, দিল্লি গিয়ে কী করলেন?
02:14:00