বাঁকুড়া: পুজোর মুখে জঙ্গলের ছাতু ক্রেতাদের কাছে হটকেক। শরতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গলে গজিয়ে ওঠে এই ছাতু। স্থানীয় নাম কাড়ান ছাতু। আবার অনেকেই বলেন দুগ্গা ছাতু। কেউ কেউ আবার শিক ছাতুও বলেন। তবে বাঁকুড়ার বিভিন্ন বাজারে কাড়ান ছাতু নামেই চল সবথেকে বেশি। এই ছাতুর চাহিদা থাকে মাত্রাতিরিক্ত।
ভোজনপ্রিয় মানুষের খাদ্য তালিকায় মরসুমি ছাতু এখন ‘সামথিং স্পেশাল’ তা বলায় যায়। আর অন্যদিকে এই ছাতু অনেকের কাছে লক্ষ্মীলাভ। পুজোর মুখে এই ছাতু বেচেই অনেকেই বাড়তি উপার্জন করেন, বিশেষ করে জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের মানুষ। বাঁকুড়ার বিভিন্ন বাজার ছাড়াও ছাতু বিক্রির মেলাও বসে জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
বাঁকুড়ার জয়পুরের কৃষক বাজারে জমে উঠেছে ছাতু বিক্রির মেলা। তবে শুধু জয়পুরে নয়, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এই সময় জঙ্গলের কাড়ান ছাতু বা মাশরুমের মেলা বসে। সকালে এবং বিকেল, এই দু’বেলা জঙ্গল থেকে ছাতু তুলে নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেন প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষজন। বছরের স্বাদ গ্রহণে হাজির হন ক্রেতারাও।
আরও পড়ুন: পর পর দু’দিন এসএসকেএমে, মুকুলের শরীর খারাপের কারণ কী?
জঙ্গলের মরসুমি এই ছাতুর লা জবাব স্বাদের কারণে চাহিদা থাকে বেশ ভালোই। দাম যাই হোক, ভোজনপ্রিয় মানুষের কাছে শরৎ ছাতুর স্বাদের যে ভাগ হবে না, তা বলছেন অনেকেই। বাড়ির জন্য কেনা ছাড়াও আত্মীয়দের পাঠাতেও ভোলেন না ক্রেতারা। ক্রেতাদের কথায়, এই স্বাদ মেটানোর জন্য বছরভর অপেক্ষা করে থাকেন তাঁরা।
জঙ্গল লাগোয়া বহু মানুষের কাছে পুজোর মুখে লক্ষ্মীলাভ জঙ্গলের ছাতু। পদে পদে জঙ্গলে মৃত্যুর ভয়। কখনও হাতির তো কখনও বন শুয়োরের। ছাতু তুলতে গিয়ে হাতির সামনে পড়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু সব ভয়কে উপেক্ষা করেই বাড়তি উপার্জনের আশায় গভীর জঙ্গল থেকে ছাতু তুলে বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে আসেন অনেকেই। অনেকেই একটু বেশি লাভের আশায় ছুটে আসেন শহরের বাজারে। আবার অনেকেই স্থানীয় ছাতু বিক্রির মেলায় পসরা সাজিয়ে বসেন।
আরও পড়ুন: অভিনব কায়দায় উধাও ১৪ লক্ষ, হাওড়া থেকে গ্রেফতার জামতাড়া গ্যাংয়ের সদস্য
শরতের আগমণ মানেই জঙ্গলে গজিয়ে ওঠে এই ছাতু। যা বিক্রি করে পুজোর মুখে বাড়তি উপার্জন করেন জঙ্গল লাগোয়া বহু গ্রামের বাসিন্দা।
ছাতু বিক্রেতা মিঠু সর্দার, দুর্গা মহাদন্ড জানাচ্ছেন, জন্মাষ্টমীর থেকেই জঙ্গলে এই ছাতু ফুটতে শুরু করে কালীপুজো সময় পর্যন্ত দেখা মেলে এই ছাতুর। প্রায় দু’মাস একটু বাড়তি উপার্জন হয় তাঁদের। বর্তমানে এই ছাতুর বাজার দর কেজি প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। প্রথম প্রথম এই বাজার দর থাকলেও, পরে ধীরে ধীরে কমতে থাকে। বিক্রেতাদের কাছে পুজোর মুখে জঙ্গলের এই ছাতু উপরি উপার্জন।