রামপুরহাট: লাঠি হাতে মহিলাদের “দাদাগিরি”। রাস্তায় লাঠি হাতে চলন্ত লরি দাঁড় করিয়ে চলছে টাকা আদায়। প্রকাশ্যে এভাবে টাকা আদায় করা আদিবাসী মহিলাদের নিত্যদিনের একপ্রকার পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, এলাকার পাথর শিল্পাঞ্চলে মিলছে না কাজ। নেই ১০০ দিনের কাজও। অনাবৃষ্টির কারণে এবছর এলাকায় হয়নি চাষাবাদও। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে চলন্ত লরি দাঁড় করিয়ে করছেন টাকা আদায়। আদিবাসী মহিলাদের সাফ জবাব, টাকা আদায় না-করলে খাব কী? এরকমই দৃশ্য দেখা যাবে রামপুরহাট-দুমকা রাস্তার প্রায় শতাধিক জায়গায়।
ঝাড়খণ্ড লাগোয়া রামপুরহাট বারোমেশিয়া পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকায় কয়েকশো পাথর কল রয়েছে। একসময় এই কলগুলিতে পাথর ভাঙার কাজ করতেন এলাকার কয়েক হাজার আদিবাসী। বর্তমানে এই পাথর কলগুলির অধিকাংশই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে পাথর কাটে। ফলে মানুষের কাজ করে দিচ্ছে আধুনিক যন্ত্র। তাতে কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন এলাকার আদিবাসীরা।
আরও পড়ুন: Aindrila Sharma: পঁচিশেই নিভল ঐন্দ্রিলার ‘জীবন জ্যোতি’
তাঁদের অভিযোগ, পাথর ভাঙা কলগুলিতে এত দিন ধরে তাঁরা শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতেন। এখন সেইসব পাথর কলে আর কাজ মেলে না। এলাকায় নেই ১০০ দিনের কাজ। এবছর বৃষ্টি না-হওয়ায় হয়নি চাষ। তাই অর্থাভাবে সংকটের মধ্যে দিন কাটছে আদিবাসীদের। সে কারণেই লাঠি হাতে নেমে পড়েছেন রাস্তায়।
পাথর নিতে আসা চলন্ত লরি মাঝরাস্তায় দাঁড় করিয়ে চলছে টাকা আদায়। টাকা না-দিলে মিলছে না লরি নিয়ে যাওয়ার ছাড়। বাধ্য হয়েই টাকা দিতে হচ্ছে লরির চালকদের। লরি চালকদের দাবি, এক লরি পাথর নিয়ে যেতে এই ৪ কিলোমিটার রাস্তায় এভাবে দিতে হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা। টাকা আদায়কারীদের সাফ জবাব, টাকা আদায় না-করলে খাব কী?
এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা একটি পাথর কলের মালিক মহম্মদ আমানতুল্লা অবশ্য দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না। তাই এলাকার মানুষ ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ পাচ্ছে না। সে কারণে লাঠি হাতে টাকা তুলতে হচ্ছে তাঁদের।