মিনেসোটা: আঁকার ক্লাসে ছাত্রছাত্রীদের চতুর্দশ শতাব্দীতে আঁকা পয়গম্বরের একটি ছবি দেখিয়েছিলেন এক অধ্যাপিকা (adjunct professor)। কেবল এই অপরাধে চাকরি গেল মিনেসোটার হ্যামলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের (Hamline University in Minnesota) চিত্রকলার অধ্যাপক ৪২ বছর বয়সি এরিকা লোপেজ প্র্যাটারের। অভিযোগ উঠেছে, মিনেসোটার সহকারী অধ্যাপক লোপেজকে বারবার ওই ছবি দেখাতে বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সে বারণ শোনেননি। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করায় তাঁর বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান, হ্যামলিন ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ফেনিজ মিলার।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু মুসলিম পড়ুয়া রয়েছেন। তাঁদের ধর্মীয় গোঁড়ামিও আছে। পয়গম্বরের ছবি তাঁরা দেখেন না, এটা তাঁদের ধর্মীয় রীতির পরিপন্থী। তারপরেও ওই ছবি দেখানো হয়। কলেজের এক সিনিয়র ছাত্রী অ্যারাম ওয়েদাতাল্লা বলেন, ওই অধ্যাপক ছবিটি নিয়ে অন্ধের মতো আচরণ করছিলেন। আমরা তাঁকে ছবিটি দেখাতে নিষেধ করেছিলাম। তারপরেও বেশ কয়েক মিনিট ধরে পর্দায় ওই ছবি দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: Brazil: ব্রাজিলে বোলসোনারোর সমর্থকদের তাণ্ডব, কংগ্রেস, রাষ্ট্রপতির আবাস দখল
গোটা ঘটনার জন্য ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট মিলার পড়ুয়াদের কাছে চিঠি লিখে ক্ষমা চান। তিনি তাতে লেখেন, মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, কাউকে দোষ দেওয়া আমাদের লক্ষ্য নয়। কিন্তু যেখানে মুসলিমদের এই ছবি দেখানো বা দেখা নিষিদ্ধ, সেখানে পর্দায় তা দেখানো হল কী করে, এটাই বুঝতে পারছি না। এতে তাঁদের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানাচ্ছে, ওই অধ্যাপক যে সিলেবাস দেন, তাতে বলা হয়েছিল, ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে পড়ুয়াদের সকলের ছবিই দেখা উচিত। তবে তিনি এও জানান, কেউ ইচ্ছে করলে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়েও যেতে পারেন। যদিও কেউ তাতে কান দেননি। সকলেই উপস্থিত ছিলেন ক্লাসে। ওয়েদাতাল্লা আবার মুসলিম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের(Muslim Students Association) সদস্য। তিনি অন্য মুসলিম পড়ুয়াদের সমর্থন পেয়েছেন। যদিও তাঁরা সে সময় ক্লাসে ছিলেন না। তাঁরাও মনে করেন, এই ঘটনায় তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত লেগেছে। পরে ওয়েদাতাল্লা ওই অধ্যাপিকার সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন।
বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট জলঘোলা হয়। প্রতিষ্ঠানের অনেকে লোপেজের শাস্তি চান। আবার অনেকে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে যান। তাঁর হয়ে অনেকে গণস্বাক্ষর (mass) অভিযান চালান। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।