কলকাতা: তিলজলায় (Tiljala) শিশুকন্যাকে (Minor Girl) অপহরণ করে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার (Arrest) অভিযুক্ত। রবিবার রাতেই গ্রেফতার করা হয় অলোক কুমার নামে ওই যুবককে। অভিযুক্ত যুবক খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশ (Police) আধিকারিকদের। জেরায় ধৃত জানিয়েছে, নবরাত্রির মধ্যে নরবলি দিলে সন্তানধারণ করবে স্ত্রী। তান্ত্রিকের (Tantrik) নির্দেশেই শিশুকন্যাকে অপহরণ করে নৃশংসভাবে খুন করেছে সে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অপহরণ করে খুন এবং যৌন নির্যাতনের মামলা রুজু করা হয়েছে। খোঁজ শুরু হয়েছে তান্ত্রিকেরও।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের বাড়ি বিহারের সমস্তিপুরে। বছরখানেক আগে কলকাতায় এসেছিল সে। এখানে একাই থাকত সে। স্ত্রী থাকে বিহারে। বেশ কয়েক বছর আগে বিয়ে হয় তার। বারবার সন্তানধারণে চেষ্টা সত্ত্বেও সুফল মেলেনি। তার জেরে পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকত। সন্তানের আশায় তান্ত্রিকের কাছে গিয়েছিল অলোক কুমার। তান্ত্রিক পরামর্শ দেয়, নবরাত্রির মধ্যে বছর সাত-আটেকের কোনও শিশুকে বলি দিলেই সমস্যা মিটবে। তার স্ত্রী সন্তানের জন্ম দেবে। তান্ত্রিকের কথামতোই তিলজলায় শিশুকন্যাকে অপহরণ করে খুন বলেই জেরায় চাঞ্চল্যকর দাবি অভিযুক্তের।
আরও পড়ুন:Pathashree Prakalpa | ২৮ মার্চ সিঙ্গুর থেকে ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী
তিলজলা থানা এলাকার ২১ নম্বর শ্রীধর রায় রোডে একটি বিল্ডিংয়ের ফ্ল্যাটে মা, বাবা, ভাইয়ের সঙ্গে থাকত ৪ বছরের নাবালিকাটি। পরিবারটি বিহারের বাসিন্দা। এদিন সকালে ময়লা ফেলতে রাস্তায় বেরিয়েছিল নাবালিকাটি। তারপর তার আর হদিশ মেলেনি। বহু খোঁজাখুঁজির পরেও নাবালিকাটির কেউ কোনও খবর দিতে পারেনি। এরপর নাবালিকাটির পরিবার তিলজলা থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তারপর রাত ১০টা নাগাদ তিলজলা থানার পুলিশের তল্লাশি অভিযানে ওই বিল্ডিংয়েরই প্রতিবেশী অলোক কুমারের ফ্ল্যাটে রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডারের পাশ থেকে হাত, পা, মুখ বাঁধা অবস্থায় নাবালিকার দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ধর্ষণ করে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে নাবালিকাটিকে। ময়নাতদন্তের পরই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসবে।
এদিকে, পুলিশ আরও আগে তল্লাশি শুরু করলে নাবালিকাটিকে বাঁচানো যেতে বলে দাবি মৃতের পরিবার সহ প্রতিবেশীদের। পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে রবিবার রাতেই তিলজলা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বেগতিক বুঝে থানার গেট ভিতর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হলে বাইরে থেকে বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিবার-প্রতিবেশী। এমনকি গেটের বাইরে থেকে ভিতরে পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় এবং পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বাধা দিতে গিয়ে আহত হন চারজন পুলিশকর্মী ও আধিকারিক। রাতে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। পুলিশও লাঠি নিয়ে তাড়া করে। গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই গোলমাল। এরপরই নাবালিকার খুনে অভিযুক্ত প্রতিবেশীকে আটক করে পুলিশ।