skip to content
Sunday, June 23, 2024

skip to content
Homeকলকাতাকপালে মেরেছে ছোবল, তাগা বাঁধি কোথা?

কপালে মেরেছে ছোবল, তাগা বাঁধি কোথা?

Follow Us :

এখনও বেশ মনে পড়ে, ক্লাস ফাইভ থেকে মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা পর্যন্ত স্কুলের টিফিন খরচ ছিল চার আনা (২৫ পয়সা, যা এখন আর পাওয়া যায় না)। নাবালক থেকে কিশোর হওয়া সত্ত্বেও খিদে বাড়লেও বরাদ্দ বৃদ্ধি করেনি বাবা নিয়ন্ত্রিত সরকার। আর এখন প্রায় প্রতিদিনই মাঝরাতে চোরের সিঁদ কাটার মতো পেট্রল-ডিজেলের দাম ২৫-৩৫ পয়সা করে বাড়িয়ে চলেছে সরকার। ১০০ কোটি টিকাকরণের বারফাট্টাই দাবি করা সরকার জনতাকে প্রাণে বাঁচাতে নির্ধন করে মারার ফন্দি এঁটেছে। যার ফলে, বাজারে আগুন লেগেছে। বিশেষত দুর্গাপুজোর অব্যবহিত আগে থেকে প্রায় প্রতিদিনই কাঁচা আনাজের দাম বেড়েই চলেছে। আর দিন কয়েক পরেই কালীপুজো ও দীপাবলি। এই অবস্থায় মুদিখানা, মাছ ও সবজি বাজারে ঢুকে সর্বস্বান্ত হতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত মানুষকে।

যদিও ঘর পোড়ার পর ফরেনসিক দল আসার মতো নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ (ইবি)। গত কয়েক দিন ধরে ইবি’র পরিদর্শকেরা মহানগর ও সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকার পরিচিত বাজারে অভিযান শুরু করেছে। বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে শনিবার ইবি’র বেশ কয়েকটি দল হানা দেয় সল্টলেকের বাজারগুলিতে। বিভিন্ন আনাজের দাম কত, কেনই বা তার ঊর্ধ্বগতি, বিক্রেতাদের কাছে তা নিয়ে জানতে চান তাঁরা।
ইবি সূত্রে জানা গিয়েছে, জ্বালানির দাম হুহু করে বেড়ে যাওয়ার ফলেই তাঁদের বেশি দামে আনাজ কিনতে হচ্ছে। পণ্যবাহী ট্রাকে বিভিন্ন জেলা কিংবা পড়শি রাজ্য থেকে যে আনাজ আসছে, তা চড়া দামে কিনতে হওয়াই মূল্যবৃদ্ধির কারণ বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। সেই সঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির ফলে বহু মরশুমি আনাজ নষ্ট হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই দামও বেড়েছে। হাওড়ার রাজাপুর, জগদীশপুর ও পাঁচলা এলাকার বিভিন্ন বাজারেও শনিবার নজরদারি চালায় জেলা পুলিশের ইবি। বিভিন্ন দোকানে জিনিসপত্রের দামের তালিকা দেখা হয়। এ ছাড়াও, ওষুধের দোকান এবং মণিহারি দোকানে শিশুখাদ্য বিক্রির বৈধ লাইসেন্স আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হয়। চিনা মাঞ্জা বিক্রি নিষিদ্ধ। কোথাও সেই মাঞ্জা বা শব্দবাজি বিক্রি হচ্ছে কি না, তারও খোঁজখবর নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন ত্রিপুরায় আক্রান্ত তৃণমূল নেতাকে নিয়ে কলকাতায় পৌঁছালেন মলয়- শান্তনু

ইবি সূত্রের দাবি, উৎসবের মরশুমে যাতে আনাজ অবৈধভাবে মজুত করে দাম না-বাড়ানো হয়, সে ব্যাপারেও নজর রাখতে আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে ইবি এবং কৃষি বিপণন দফতর এই অভিযান চালাবে।
শুধু কি আনাজ! মাছে-ভাতে বাঙালির আদি অকৃত্রিম প্রোটিন মৎস্যকন্যাটিকেও রসনা থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। চালানি রুই-কাতলা থেকে তেলাপিয়া-বাটা মাছেরও দাম বেড়েছে। তারও সৌজন্যে ডিজেল। ডাল-ভাত খাওয়া এখন গরিব মানুষের কাছে বিলাসিতার পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখানেও মোদি নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল সর্বকালের সেরা রেকর্ড স্পর্শ করেছে। এটা ঠিক, মোদি-বাহিনীর ঝুলিতে সবই সেঞ্চুরির কোঠায়।
দ্বিশতরানও আছে। মূল্যবৃদ্ধির দাপটে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দিয়েছে সর্ষের তেল। সেঞ্চুরির মুখে টোম্যাটো। অগ্নিমূল্য পেঁয়াজ থেকে শুরু করে শর্টরানে রান বাড়িয়ে চলেছে আলুও। মাছের আঁশবটিতে গৃহিণীর হাত কাটলেও মুরগির ঠ্যাংকে রবিবারের অন্ধের যষ্টির মতো আঁকড়ে ধরেছিল বঙ্গসেনা। কিন্তু, পশু ও পাখি দু’সমাজেই সম্মান না জোটা চিকেনও দুশো ছাড়িয়ে গেছে। সামনে আসছে শীত। দাম আরও চড়বে চিকেন ও ডিমের। তাহলে সংসার যুদ্ধে ও বহিঃশত্রু করোনার সঙ্গে লড়বে কী করে দেশবাসী!
কিন্তু, ওই চড়া দরের সমস্যার কথা স্বীকার করতে নারাজ মোদি সরকার। তাদের দাবি, পেঁয়াজের দাম তেমন ‘অস্বাভাবিক’ রকম বাড়েনি। সঙ্গে আশ্বাস, সর্ষের তেল ও ডালের দাম ক্রমশ কমে আসবে। কিন্তু তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত! সর্ষের তেল-সহ বিভিন্ন ভোজ্য তেলের দাম দেশে বাড়লেও, তা এখনও বিশ্ব বাজারের তুলনায় কম বলেই মোদি সরকারের দাবি।
মুখে এ কথা বললেও, উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে যাওয়ার পরে খাদ্যপণ্যের চড়া দামে যে কেন্দ্র অস্বস্তিতে, তা তাদের পদক্ষেপে স্পষ্ট। সব রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়ে ভোজ্য তেলের মজুতদারিতে রাশ টানার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। বিরোধীরা প্রায় নিয়মিত কেন্দ্রকে মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, পেট্রল-ডিজেলের দাম সেঞ্চুরি করে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে সর্ষের তেল-সহ বিভিন্ন ভোজ্য তেলের দরও ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। পেঁয়াজের দাম হাফ সেঞ্চুরি (প্রতি কিলোগ্রাম ৫০ টাকা) পার। তার সঙ্গে এ বার ডালের দরও বাড়তে শুরু করেছে। প্রতি সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের কর্তাদের বৈঠক বসছে। রাজ্যগুলির সঙ্গেও নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে। কিন্তু বাজারে দাম কমার বিশেষ লক্ষণ নেই। তার উপরে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার হাজার টাকা ছুঁইছুঁই।
প্রশ্ন হচ্ছে মুণ্ডু গেলে খাবটা কী?
তুঘলক সরকারের আমির-ওমরাহরা বলে বেড়াচ্ছেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম তেমন অস্বাভাবিক বেশি নয়। তাই এখনই বিদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার কথা ভাবছে না সরকার। তাঁদের যুক্তি, শুক্রবার দেশে পেঁয়াজের গড় দাম ছিল প্রতি কিলোগ্রাম ৪১.৫০ টাকা। গত বছর এই সময়ে তা ৫৫ টাকা ছিল। অথচ, সরকারি তথ্যই বলছে, শুক্রবার কলকাতায় প্রতি কিলোগ্রাম পেঁয়াজ ৫৭ টাকা দরে বিকিয়েছে! দিল্লিতে ৪৮ টাকা। কেন্দ্রের দাবি, পেঁয়াজের দাম এখন আর অস্বাভাবিক রকম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। কারণ খরিফ মরশুমে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হবে বলে তাদের ধারণা।
সর্ষের তেলের আগুন দাম নিয়ে কেন্দ্রের দাবি, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় শ্রমিক-সঙ্কটের ফলে পাম তেল উৎপাদন কম হয়েছে। সেই কারণেই বিশ্ব জুড়ে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে। তার প্রভাব পড়ছে এ দেশে। বিশেষত জ্বালানি তেলের (পেট্রল, ডিজেল) মতো ভোজ্য তেলেও ভারত অনেকাংশে আমদানি নির্ভর। তাই বিশ্ব বাজারে দর বৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়ছে এ দেশে। কিন্তু, বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলছেন, যে সর্ষের তেলের ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে বাকি বিশ্বে আর কোথাও তেমন চাহিদা নেই, তার দাম বাড়ছে কেন?
কথা বলা সরকারি পুতুলদের জবাব, ভোজ্য তেলের মধ্যে পাম তেলই প্রধান। তাই তার দাম বাড়লে, সব রকম তেলের দাম বাড়ে। তবে দাবি, এ বার সর্ষের উৎপাদন ১০ লক্ষ টন বেড়েছে। তার প্রভাব কয়েক মাসের মধ্যেই দেখা যাবে। রাজ্যগুলিকে চিঠিতে কেন্দ্র নির্দেশ দিয়েছে, তারা নিজেদের মতো করে ব্যবসায়ীদের কাছে ভোজ্য তেল মজুত করার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিক।
এসবের মূল ভিলেন ডিজেল ও পেট্রলের দাম। রবিবার কলকাতায় ৩৫ পয়সা বেড়ে লিটারে ডিজেল হয়েছে ৯৯.৪৩ টাকা। পেট্রল ৩৩ পয়সা বেড়ে ১০৮.৩৩ টাকা। এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এ ভাবে চলতে থাকলে এবং সরকার বা তেল সংস্থাগুলি অবিলম্বে হস্তক্ষেপ না-করলে সম্ভবত দু’এক দিনের মধ্যে শহরেও সেঞ্চুরি পার করে ফেলবে ডিজেল। যদিও ইতিমধ্যেই রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় শতরানের গণ্ডি টপকেছে ডিজেল।

আরও পড়ুন আড়ালে মডেল সাপ্লাই করতেন ‘ইনি’, ১০ মাস পর গ্রেফতার পর্ণোগ্রাফি চক্রের মূল পান্ডা

ডিজেলের দামবৃদ্ধি শুধুমাত্র প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলে না কাঁচা বাজারে। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে কৃষিতে, পক্ষান্তরে নিত্যপ্রয়োজনীয় শস্যভাণ্ডারে। জলসেচের জন্য এক ঘণ্টা গভীর নলকূপের পাম্প চালাতে এক লিটার ডিজেল লাগে। তাহলে জমির আলে বসে কৃষকদেরও রামপ্রসাদের মতো গাইতে হবে, মন রে কৃষিকাজ জানো না। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো রয়েছে কৃষি আইন। সব মিলিয়ে গরিব মানুষের প্রাণ যায় যায়।
আমরা সবাই জানি, সরকারের সংসার খরচ চলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর আদায় থেকে। এতদিন আয়করদাতারা ছবি বিশ্বাসের মতো বঙ্কিম ভুরু নাচিয়ে বলতেন, সরকার চলে আমার পয়সায়। সেদিন অতীত। এখন একজন রিকশওয়ালাও বোঝেন, তাঁর দিনের ছাতুটা কেনার মধ্যেও রয়েছে করের বোঝা। সুতরাং, সব কিছুই কিন্তু ‘হামারি পয়সা’। রাজতন্ত্রে যেমন রাজকোষ ভরা হতো শ্রমিক-কৃষকের রক্তে। ধনতন্ত্রেও তাই হয়, অত্যাচারের পদ্ধতিটা সামান্য পরিশীলিত। শুধু ‘রাজকর দেওয়া চাই’— এই দৈববাণীটি মগজ ধোলাই করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজার ডুগডুগিরাও একই ভাষায় বলে, অনাহারে নাহি খেদ, বেশি খেলে বাড়ে মেদ। কারণ, এদেশে এখন ‘দেশদ্রোহী’রা বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী। তাই ২ পয়সা ট্রামভাড়া বৃদ্ধিতে এখন আর ট্রামে আগুন জ্বলে না। দুই ভাই-বোন বেলা করে ঘুম থেকে উঠে তুলসীদাসি সুরে ছড়ায় ছড়ায় ‘গর্জন’ করেন। সে কারণে, রাজার ‘মনের কথা’ শুনেই সম্মোহিত দেশবাসী। তাই কাগুজে বাঘের হুঙ্কারে ভয় পান না রিং মাস্টার। বিষদাঁত ভাঙা বিরোধীদের ছোবলে বীণ থামে না সাপুড়ের। শুধু, আমাদের মতো সাধারণ মানুষের মাথায় পড়েছে বিষধরের ছোবল, এখন তাগা বাঁধি কোথায়?

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Modi - Hasina | আজ মোদি-হাসিনা বৈঠক, কোন কোন বিষয়ে চুক্তি? দেখুন পুরো ভিডিও
03:41:40
Video thumbnail
Tejashwi Yadav | প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে রাজনীতি করছে NDA অভিযোগ তেজস্বীর
03:22:11
Video thumbnail
Kapil Sibal | সোরেন-কেজরিওয়াল যেন টম-ডিক অথবা হ্যারি! গর্জে উঠলেন সিব্বল
03:37:00
Video thumbnail
Puri | জমজমাট পুরী দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা
03:08:00
Video thumbnail
Madhuparna Thakur | উপনির্বাচনে সৌজন্য তৃণমূল প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর , কী করলেন ?
10:19:46
Video thumbnail
NEET | NET | নিট-নেট কেলেঙ্কারি নতুন আইন নিয়ে কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া কি?
08:57:46
Video thumbnail
Weather Update | অপেক্ষার অবসান ! বর্ষা প্রবেশ করেছে দক্ষিণবঙ্গে , প্রবল বৃষ্টি কবে কবে?
07:04:31
Video thumbnail
Murshidabad | বন্দুক উঁচিয়ে ক্লাসে দুই পড়ুয়া ! মুর্শিদাবাদের স্কুলে হুলস্থুল কাণ্ড
07:27:30
Video thumbnail
NEET Scam | NEET কেলেঙ্কারি গ্রেফতার বড় মাথা দেখুন চাঞ্চল্যকর ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Office Timing | ১ মিনিট দেরি হলেই 'শাস্তি' , সরকারি কর্মীদের অফিসে ঢোকার সময় বেঁধে দিল কেন্দ্র ?
07:43:56