আর্জেন্টিনা-২ (লিওনেল মেসি, জুলিয়েন আলভারেজ) vs অস্ট্রেলিয়া-১ (এন্জো ফার্নান্ডেজ–নিজ গোল)
সেই মেসি। সেই গোল। এবং সেই আর্জেন্টিনার জয়। তিনটে ব্যাপার এক সঙ্গে ঘটল শনিবারের প্রিকোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে। এবং অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে মেসির দল আসতে হাসতে চলে গেল কোয়ার্টার ফাইনালে। ম্যাচটা ছিল মেসির জীবনের সহস্রতম। এমন একটা ঐতিহাসিক ম্যাচে মেসি গোল করবেন না এটা মনে হয় ফুটবল দেবতাও চাননি। তাই বিরতির আগেই মেসির গোল এবং ম্যাচের উপর আর্জেন্টিনার চেপে বসা। এই নিয়ে বিশ্বকাপে মেসির গোল হয়ে গেল নয়টি। দিয়েগো মারাদোনার ছিল আট। এখন সামনে শুধু গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা (১০)। তবে মারাদোনার হাতে একটা বিশ্ব কাপ ছিল। মেসির হাতে সেটা এখনও ওঠেনি। সেটা উঠবে কি উঠবে না সেটা জানার জন্য গোটা বিশ্বকে অপেক্ষা করতে হবে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু মেসি ম্যাজিক যেভাবে কাজ করা শুরু করেছে তাতে সেই ঘটনা ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কোয়াটার ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিদ্বন্দ্বী নেদারল্যান্ডস, যারা আমেরিকাকে হারিয়ে দিল ৩-১ গোলে।
শেষ পর্যন্ত মেসি বা তাঁর টিম কত দূর যাবে তা সময়ই বলবে। কিন্তু টুর্নামেন্টের চতুর্থ ম্যাচে মেসি যে রকম ফর্মে হাছেন তাতে তাঁর বিশ্বজোড়া ভক্তরা আশায় বুক বাঁধতেই পারেন। এদিনই যেমন ম্যাচের ২৫ মিনিটে মেসির গোলটা সেই আশাবাদেরই প্রকৃষ্ট উদাহরণ। অস্ট্রেলিয়া ডিফেন্সের বাঁ দিকে সাইড লাইনের ধারে ফ্রিকিক পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। যথারীতি সেটা মারলেন মেসি। বলটা অজি ডিফেন্সের পাঁচিলে ধাক্কা খেয়ে যখন বক্সের আশেপাশে ঘুরঘুর করছে ততক্ষণে সেখানে চলে গেছেন মেসি। বক্সের মধ্যে আলভারাজের ছোট্ট টোকায় যখন বল তাঁর বাঁ পায়ে তখন ডিফেন্সে এক গাদা পায়ের জঙ্গল। মেসির বাঁ পা যেন ছুরি চালাল। ওই ডিফেন্সের মধ্য দিয়ে বলটা গলে গিয়ে অজি গোলকিপার ম্যাট রায়ানকে অপ্রস্তুত করে গেল গোলে ঢুকে। এক দমই মেসি ঘরানার গোল। এবং এই গোলটার আগে অজিরা তাদের ডিফেন্স টাইট রেখে একটার পর একটা আক্রমণ রুখে দিয়েছে। কিন্তু মেসির গোলটা তাদের সব প্রতিরোধ ভেঙে দিল।
আরও পড়ুন: Mohammad Shami: আসন্ন ওয়ান ডে সিরিজ থেকে ছিটকে গেলেন মহম্মদ শামি
৩৫ মিনিটের এই গোলটা নিয়ে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা। ফিরে এসে ৫৭ মিনিটে করে ফেলে দ্বিতীয় গোল। এবার কিন্তু গোলটার পিছনে কোনও মেসি ছিলেন না। গোলটা একান্তভাবেই আর্জেন্তিনাকে উপহার দিলেন অজি গোলকিপার ম্যাট রায়ান। বক্সের মধ্যে একটা ব্যাক পাস ধরে নিজের ডিফেন্ডারদের দিতে চেয়েছিলেন রায়ান। কিন্তু অযথা গড়িমসি করতে গিয়ে বলটা তুলে দেন জুলিয়েন আলভারেজের পায়ে। আলতো টোকায় গোল করে চলে যান আর্জেন্টিনা নয় নম্বর। ওখানেই ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু টিমটার নাম তো অস্ট্রেলিয়া। তাই তারা লড়ে গেল। এবং এই লড়াইয়েরই ফসল ৭৭ মিনিটে একটি গোল শোধ করা। ক্রেগ গুডউইনের শটটা বাঁচাতে গিয়ে এনজো ফার্নান্ডেজের পায়ে লেগে এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে কিছু করার সুযোগ না দিয়ে বল গোলে ঢুকে যায়। শেষ দিকে কুয়েলের শট এমিলিয়ানো না বাঁচালে ম্যাচ চলে যেতে পারত অতিরিক্ত সময়ে। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। শেষ পর্যন্ত হাসতে হাসতেই আর্জেন্তিনা চলে গেল শেষ আটে। আর তিনটে ম্যাচ জিতলেই বিশ্ব কাপ জিতবেন লিওনেল মেসিরা।