বেঙ্গালুরু: সাফ কাপের (SAFF Cup) প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে চার গোলে হারিয়েছে ভারত। হ্যাটট্রিক করেছেন ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী (Indian Captain Sunil Chetri)। শনিবার গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত খেলবে নেপালের বিরুদ্ধে। বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরভা স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সেই ম্যাচে ভারতই ফেভারিট। দু দলের শক্তির যা তারতম্য তাতে ভারতের পক্ষে ম্যাচ জেতা শুধু সময়ের অপেক্ষা। নেপাল প্রথম ম্যাচে ১-৩ গোলে হেরে গেছে কুয়েতের কাছে। তাই শনিবার ভারত জিতলে তারা চলে যাবে সেমিফাইনালে। নেপাল বিদায় নেবে টুর্নামেন্ট থেকে। ভারতের সঙ্গে নেপালের খেলায় বেশির ভাগ সময়ে ভারতই জিতেছে। তবে সাম্প্রতিক অতীতে নেপাল যে অঘটন ঘটায়নি তাও নয়। ১৯৯৩ সালে ঢাকায় সাফ গেমসের ফাইনালে নেপাল ভারতকে হারিয়ে সোনা জিতেছিল। তবে এ রকম অঘটন রোজ রোজ ঘটেনি। ঘটেও না। ভারত তাই শনিবার ম্যাচ জিতেই মাঠ ছাড়বে বলে মনে হয়।
ভারতীয় দলের প্রধান শক্তি হল তাদের অধিনায়ক এবং এক নম্বর গোলগেটার সুনীল ছেত্রী। ৩৮ বছর বয়সেও তাঁর গোল ক্ষুধা বিপক্ষের ত্রাসের কারণ, দলের প্রধান ভরসা। দেশের হয়ে তাঁর ৯০টি গোল করা হয়ে গেছে। এশিয়ার সর্বকালের সেরা গোলগেটার হওয়ার জয় তাঁর আর দরকার ১৯টি গোল। তাহলেই ইরানের আলি দায়ীকে টপকে যাবেন তিনি। তবে এখন যে রকম বিধ্বংসী ফর্মে আছেন তিনি তাতে অচিরেই দেশের হয়ে ১০০ গোল করার কৃতিত্ব তিনি অর্জন করে ফেলতেই পারেন। প্রটি ম্যাচেই তিনি শুরু থেকেই খেলেন এবং তাঁকে দেখা যায় ম্যাচে প্রায় শেষ পর্যন্ত। ভারতের হয়ে অতীতে বহু স্ট্রাইকার এসেছেন। ভবিষ্যতেও আসবেন। কিন্তু সুনীল ছেত্রী থেকে যাবেন সবার হৃদয়ে। এরকম এজিলিটি ইদানিং কোনও ভারতীয় স্ট্রাইকারের মধ্যে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: সহ-অধিনায়ক হার্দিক, ফিরলেন সঞ্জু, উমরান
সুনীলের পাশাপাশি বলতে হবে আরও তিনজনের কথা। তাঁরা হলেন সেন্টার ব্যাক সন্দেশ ঝিঙ্গন, ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার অনিরুদ্ধ থাপা এবং উইঙ্গার ছাংতে। ভারত যে টানা সাতটি ম্যাচে গোল না খেয়ে জিতেছে তার জন্য প্রথান কৃতিত্ব দিতে হবে সন্দেশ ঝিঙ্গনকে। এই পঞ্জাবপুত্র একাই যেন আগলে রাখেন দলকে। আন্তঃ মহাদেশীয় কাপে সেরা ফুটবলারের পুরস্কার পাওয়া সন্দেশের পাশে প্রীতম কোটাল, আনোয়ার আলি কিংবা শুভাশিস বসুরা যতই ভাল খেলুন না কেন মূল চালিকা শক্তি কিন্তু সন্দেশই। আর ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার অনিরুদ্ধ থাপা একাই যেন আক্রমণ এবং রক্ষণের সেতু। সারা মাঠ জুড়ে খেলেন। ফ্রি কিক এবং কর্নার নেওয়ার ব্যাপারে তিনিই সবার আগে। এ রকম একজন মিডফিল্ডার দলের সম্পদ। আর উইঙ্গার ছাংতের উপর ভীষণ রকম নির্ভরশীল ভারত। নিজে গোল করেন, গোল করান। আন্তঃ মহাদেশীয় কাপের ফাইনালে তিনিই ম্যাচের সেরা। সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে এই তিনজনও দলের একান্ত নির্ভরযোগ্য।
ভারতের কোচ ইগর স্টিমাক পাকিস্তান ম্যাচে লাল কার্ড দেখেছেন। নেপাল ম্যাচে তিনি ভারতের ডাগ আউটে বসতে পারবেন না। এই ম্যাচে ভারতের কোচ হয়ে বসবেন সহকারি কোচ মহেশ গাউলি। তবে সুনীলরা এখন যে রকম ফর্মে আছেন তাতে স্টিমাকের অনুপস্থিতি কোনও পার্থক্য সৃষ্টি করবে না। নেপাল তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে গড়া তাদের কোচ ভিনসেন্টো অ্যালবার্তো আনিস বলেছেন, ভারতের বিরুদ্ধে তারা নির্ভয় ফুটবল খেলবেন। নেপালের স্ট্রাইকার অঞ্জন বিস্ত গোল করেছেন কুয়েতের বিরুদ্ধে। ভারতের বিরুদ্ধেও তিনি গোল করতে চান। কিন্তু সন্দেশরা কি তাঁকে সেই সুযোগ দেবেন ?