কলকাতা: ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (Indian Secular Front – ISF)-এর বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর (Nawsad Siddiqui) ফোন ঘেঁটে এক সোনা ব্যবসায়ীর (Gold Delaer) সঙ্গে তাঁর যোগ থাকার হদিশ পেয়েছে পুলিশ। লালবাজার (Lalbazaar) সূত্রে খবর, চ্যাটে ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেছেন ভাঙড়ের বিধায়ক (MLA of Bhangar)। প্রশ্ন উঠেছে কে এই সোনা ব্যবসায়ী, যাঁর হদিশ পেয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই সোনা ব্যবসায়ী মেদিনীপুরের (Midnapore) বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি কর্মসূত্রে চেন্নাইতে (Chennai) থাকেন।
সূত্রের খবর ওই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ (Questioning) করতে এবং আইএসএফ বিধায়কের (ISF MLA) সঙ্গে চ্যাটে (Chat) যেসব কথা হয়েছে, সে সম্পর্কে জানতে কলকাতা পুলিশের একটি টিম সোমবার দুপুরেই চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে (Bank Account) ওই সোনা ব্যবসায়ী একসময় বড় অঙ্কের টাকা পাঠিয়েছিলেন। খবরে প্রকাশ, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly election 2023) আগে ওই টাকা ট্রান্সফার (Money Transfer) করা হয়েছিল বিধায়কের অ্যাকাউন্টে।
আরও পড়ুন: Victoria Gowri: মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা, মঙ্গলবার শুনানি
কলকাতা পুলিশ আদালতকে জানিয়েছিল, ভাঙড়ের বিধায়কের সঙ্গে দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার (Influential Political Leader) সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। পুলিশের সেই রিপোর্টকে তুলে ধরেই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের (TMC) পক্ষ থেকে অভিযোগ (Allegation) করা হয়েছে, ওই দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা আসলে বিজেপি নেতা (BJP Leaders)। তাদের সঙ্গে নওশাদের যোগ রয়েছে। রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোট (Minority Vote) ভাঙিয়ে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে পরোক্ষে কাজ করেছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক।
এদিকে, নওশাদ সিদ্দিকীকে বাংলার আসাদউদ্দিন ওয়েইসি (Asaduddin Owaisi) বলে কটাক্ষ করার পাশাপাশি তাঁর আইএসএফ-কে পশ্চিমবঙ্গের মিম (MIM) বলেও বিদ্রুপ করেছেন দুই তৃমমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম এবং কুণাল ঘোষ (Firhad Hakim and Kumal Ghosh)। রাজ্য শাসকদল টিএমসি’র প্রশ্ন, ভাঙড়ের বিধায়কের অ্যাকাউন্টে কে বা কারা ওই টাকা ট্রান্সফার করেছিল? ওই টাকার উৎস কী?
উল্লেখ্য, ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর গ্রেফতার ইস্যুতে বর্তমানে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। ভাঙড়ের হাতিশালায় তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষ (TMC-ISF Clash) পরবর্তীতে ধর্মতলা (Esplanade) অঞ্চলে অশান্তি কাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের পর তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। এরই মাঝে, লেদার কমপ্লেক্স থানাও নওশাদকে ৬ দিনের হেফাজতে নিয়েছে। আদালতে ভাঙড়ের বিধায়কের দু’টি ফোন নিয়ে একাধিক অভিযোগ এনেছে পুলিশ, ফরেনসিক পরীক্ষারও (Forensic Examination) আর্জি জানানো হয়েছে। এদিকে, কলকাতার মেয়র ববি হাকিম এপ্রসঙ্গে বলেছেন, নওশাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার যে লেনদেন হয়েছে, তা কোথা হয়েছে, কেন হয়েছে, তা জানার চেষ্টা করা উচিত। নওশাদের সঙ্গে বিজেপির যোগ রয়েছে বলেও অভিযোগ এনেছেন তিনি। এখন দেখার পুলিশের তদন্তে কী তথ্য উঠে আসে। চেন্নাইতে গিয়ে ওই সোনা ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কী জানতে পারে পুলিশ, সেদিকেই নজর রয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের।