১২ বছর আগে পথদুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর ক্ষতিপূরণের মামলা। আদালতের নির্দেশ, পরিবারের সকলকেই হাজির থাকতে হবে। কিন্তু ৪ মাস বয়সের সানা (নাম পরিবর্তিত) থাকবে কার কাছে। অগত্যা আসানসোল থেকে সানাকে নিয়েই সকলে হাজির আদালতে। মা এবং অন্যরা যখন এজলাসে ব্যস্ত, তখন ছোট্ট সানা হাইকোর্টের বারান্দাতেই কখনও শুয়ে কাটিয়ে দিল। কখনও আদালতের কর্মচারীদের কোলে কোলে ঘুরল সে। আবার কখনও অচেনা লোক দেখে কেঁদে উঠল। সানাকে শান্ত করার জন্য ছুটে এলেন হাইকোর্টের কোনও কোনও মহিলা কর্মীও। ওকে কোলে নিয়ে এক মহিলা হাইকোর্টের বিভিন্ন দফতরে ঘুরেও বেড়ালেন। তবে তার কান্না থামল। হাইকোর্ট দেখে সানা কী বুঝল, সেই জানে।
আদালত সূত্রের খবর, সানার দাদু পিন্টু দত্ত আসানসোলের কয়লা খনিতে কাজ করতেন। ১২ বছর আগে কাজ থেকে ফেরার পথে এক দুর্ঘটনায় মারা যান পিন্টু। তখন তাঁর বয়স ছিল ৪০ বছর। দুই মেয়েকে নিয়ে স্বামী হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন পিন্টুর স্ত্রী। এক সময় বড় মেয়ের বিয়েও দেন তিনি। এদিকে স্বামীর মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। ১২ বছর ধরে আদালতে ঘুরে ঘুরে অবশেষে হাইকোর্টে সুরাহা মেলে। কিন্তু আদালতের নির্দেশ পরিবারের সকলকে এজলাসে হাজিরা দিতে হবে, এমনকী ছোট্ট সানাকেও। আদালতের নির্দেশমতো সানাকে সঙ্গে নিয়ে সকাল সকাল আদালতের হাজির পিন্টুর পরিবারের সদস্যরা।
হাইকোর্টের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ের একতলার বারান্দায় শুয়েই অনেকটা সময় কেটে গেল সানার। বাকি সময়টা সে হাইকোর্টের কর্মচারীদের কোলে কোলে কাটিয়ে দিল। বিকেলে জানা গেল, আইনি গেরো কাটলেও আবার পরিবারের সকলকে আদালতে হাজির হতে হবে। সানাকে কোলে নিয়েই ওই পরিবার হাইকোর্ট থেকে আসানসোলে রওনা দিল।