আগরতলা: অবশেষে ত্রিপুরায় (Tripura) প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা বিজেপির (BJP)। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন (Election)। ফলাফল ঘোষনা ২ মার্চ। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি শনিবার ৬০ আসন বিশিষ্ট ত্রিপুরা বিধানসভায় ৪৮ জন প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করল। দিল্লিতে (Delhi) বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনার পর এই তালিকা প্রকাশ করে। এই ১২টি আসনে কেন কোনও প্রার্থী দেওয়া হয়নি, তার কোনও ব্যাখ্যা বিজেপি দেয়নি। শুধু দলের তরফে বলা হয়েছে বাকি ১২ জনের নাম পরে ঘোষণা করা হবে। কোনও কোনও মহল থেকে বলা হচ্ছে, বিজেপি এখনও তিপ্রা মথার সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে আশাবাদী। যদিও মথার প্রধান প্রদ্যোৎ মাণিক্য দেববর্মা বৃহস্পতিবার পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা বা আপসের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
বিজেপির প্রার্থী তালিকা এবার বড় চমক সিপিএম ছেড়ে বৃহস্পতিবারই শাসকদলে যোগ দেওয়া কৈলাসহরের বিধায়ক মোবসর আলির নাম। সিপিএমের প্রার্থী হতে না পেরে তিনি দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। আর তার পরের দিনই এই সিপিএম নেতার নাম উঠে এল বিজেপির প্রার্থী তালিকায়। সিপিএম বিধায়ক মোবসর আলিকে প্রার্থী করলেও তাঁর সঙ্গেই বিজেপিতে যোগ দেওয়া তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুবল ভৌমিকের ঠাঁই হয়নি তালিকায়। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিকে এবার বিধানসভায় প্রার্থী করা হয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের নাম অবশ্য তালিকায় নেই। তিনি অবশ্য এখন দলের সাংসদ। দলীয় সূত্রের খবর, বিপ্লব প্রার্থী হওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিল। এছাড়া শাসকদলের প্রার্থী তালিকায় খুব বেশি অদলবদল হয়নি। তালিকায় নাম রয়েছে প্রায়ই বিতর্কিত মন্তব্য করা শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথের। তাঁকে ধনপুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা দাঁড়াচ্ছেন টাউন বরদোয়ালি কেন্দ্র থেকে।
আরও পড়ুন: Union Budget 2023 : এবারের বাজেট থেকে মিডিয়া এবং বিনোদন খাতের ৫টি মূল প্রত্যাশা কী কী?
দীর্ঘ কমিউনিস্ট শাসনের শেষে ২০১৮ সালে ত্রিপুরায় সিপিএমকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। ওই পার্বত্য রাজ্যে প্রথম বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হন বিপ্লব দেব। শুরু থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে দলের অন্দরেই বিদ্রোহ দেখা দেয়। বিভিন্ন সময়ে তাঁর বিতর্কিত মন্তব্য অস্বস্তিতে ফেলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। দলের বেশ কয়েকজন বিধায়ক বিপ্লবের জন্যই বিজেপি ছেড়ে দেন। বিপ্লবের প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়েও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে নানা প্রশ্ন তোলা হয়। শেষ পর্যন্ত মাঝপথেই বিপ্লবকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করা হয় তুলনায় কম বিতর্কিত মানিক সাহাকে। কংগ্রেস এবং বামেরা সমঝোতা করায় এবার বিজেপি একটু চাপেই আছে। তারা অবশ্য তৃণমূলকে খুব একটা ধর্তব্যের মধ্যে আনছে না বিধানসভা ভোটে। শেষ পুরসভা এবং পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ত্রিপুরায় কোনও চাপ ফেলতে পারেনি। সেক্ষেত্রে বিজেপির সঙ্গে মূল লড়াই হতে চলেছে বাম এবং কংগ্রেসের।