কাটোয়া: টেন্ডারের ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে গন্ডগোল। তার জেরে পঞ্চায়েতের উপ প্রধানকে বন্দুক দেখিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে টেন্ডারে সই করানোর অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটে। সেখানকার তৃণমূল (tmc) পরিচালিত ভাল্য গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে টেন্ডারে সই করিয়েছেন পঞ্চায়েতেরই এক সদস্য এবং আরও ছয় জন। এমনটাই অভিযোগ। ওই ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে পঞ্চায়েতে (panchayet)।
একইসঙ্গে উঠে এসেছে কাটমানির বিষয়টিও। পঞ্চায়েত প্রধান পার্বতী ঘোষ স্বীকার করেন, তাঁরা .৫ শতাংশ করে টাকা ভাগ পান। কিন্তু, এখন তাঁদের টাকা দেওয়া হয় না। এই ঘটনায় উপপ্রধান দোলন সাঁতরা মাঝি স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা এবং পঞ্চায়েতের এক সদস্যের বিরুদ্ধে দলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের (Rabindranath chattopadhyay) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে মঙ্গলকোটজুড়ে। উপপ্রধান বলেন, টেন্ডার ঠিকমতো না হলে আমি সই করব না বলেছিলাম। এতেই আমাকে বন্দুক দেখিয়ে জোর করে তুলে নিয়ে যায় ওরা। তাঁর স্বপক্ষে একাধিক পঞ্চায়েত সদস্য সহ মোট ১২ জন জেলা সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ জানান অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: Basanti TMC Clash: তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে গুলি-বোমা, এলাকা দখল নিয়ে ফের উত্তপ্ত বাসন্তী
কয়েকদিন আগে ৪২ লক্ষ টাকার একটি টেন্ডার বের হয়। সেই টেন্ডারেই নানা অনিয়ম ধরা পড়ে। এর জন্য উপ প্রধান তাতে সই করতে রাজি হননি। স্থানীয় সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে ভাল্য পঞ্চায়েতরই দুই তৃণমূল সদস্য এবং দলের চার নেতা তিনটি মোটরবাইকে এসে তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে যান। তাঁকে দিয়ে এরপর জোর করে টেন্ডারে সই করানো হয়। কিন্তু, সেই টাকার ভাগ ঠিক মতো না পাওয়ায় টেন্ডারে তিনি সই করবেন না বলে জানিয়েছিলেন উপ প্রধান। এরপর তাকে কদিন আগে পঞ্চায়েতের ২ সদস্য এবং ৪ তৃণমূল নেতা তিনটি মোটরবাইকে এসে তুলে নিয়ে যায়। জোর করে টেন্ডারে সই করানো হয়।
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দোলন সাঁতরা মাঝির (Dolonsantra majhi) অভিযোগ, ওই এলাকার তৃণমূল নেতা প্রদীপ চট্টরাজ সহ ৬ জনের নামে। প্রদীপ চট্টরাজের নামে অভিযোগ করা হয়েছে তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। রবীন্দ্রনাথবাবু জানিয়েছেন, অভিযোগ জমা পড়েছে। অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে প্রদীপ চট্টরাজের বক্তব্য জানা যায়নি। এব্যাপারে বিজেপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কৃষ্ণ ঘোষের কটাক্ষ, কাটমানির বিষয় সামনে চলে এসেছে। এটা তো বাংলার মানুষ জানেন। শাক দিয়ে কী আর মাছ ঢাকা যায়।